মসজিদ কমিটি দ্বন্দ্বে মারপিট, ইমাম-খতিব আহত!
নাটোর সদর উপজেলার তেবাড়িয়া ইউনিয়নের সিংগারদহ পশ্চিম পাড়া এলাকায় মসজিদ কমিটি দ্বন্দ্বে ইমাম কে মারপিট ও খতিব কে হাসুয়ার কোপে রক্তাক্ত করা হয়েছে। ওই খতিব কে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে সদর থানার ওসি নাছিম আহম্মেদ এবং ভুক্তভোগী খতিবের বাবা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রক্তাক্ত ওই খতিবের নাম হুজাইফা মাসুদ(৩০)। তিনি সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নের বেজপাড়া -আমহাটি গ্রামের নিয়াজ খানের ছেলে এবং ওই মসজিদের ইমাম আব্দুল জব্বারের জামাই। মসজিদের ইমাম আবদুল জব্বার জানান, তিনি গত প্রায় ৩৩ বছর থেকে ওই মসজিদের ইমামের দায়িত্ব পালন করছেন। একই গ্রামের খবির উদ্দিন মোল্লার ছেলে, ওই মসজিদের সাবেক সভাপতি জয়নাল কে কিছুদিন আগে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে কমিটি থেকে বাদ দেন মুসল্লিরা।
এরপর নতুন কমিটিতে জয়নালের ছোট ভাই হুসেন আলীকে সেক্রেটারি আর তাকে (ইমাম কে) সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করে মুসল্লিরা। এরপর থেকে তার উপরে ক্ষিপ্ত ছিল সাবেক সভাপতি জয়নাল। সম্প্রতি তার জামাই হুজাইফা মাসুদ তার বাড়িতে গিয়ে জুম্মার নামাজ ওই মসজিদে পড়তে আসলে মুসল্লিদের অনুরোধে তিনি বক্তব্য রাখেন। সুদ, ঘুষ, আমানতদারী ইত্যাদি বিষয়ে বক্তব্য শুনে মুসল্লীরা মাসুদকে প্রতি জুম্মার নামাজ পড়ানোর জন্য অনুরোধ করেন।
মুসল্লিদের অনুরোধে তিনি অবৈতনিক খতিবের দায়িত্ব পালন করছিলেন ওই মসজিদে। কিন্তু ওই বক্তব্য গুলো তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলা হচ্ছে এমন ধারণা করে জয়নাল তার জামাই হুজাইফার উপরেও ক্ষিপ্ত হয়। তার জামাই যাতে শুক্রবারের নামাজ না পড়ায় সে জন্য বিভিন্ন জায়গায় তর্জন গর্জন করে জয়নালরা।
তিনি আরো জানান,গত বৃহস্পতিবার রাতে তার জামাই তার বাড়িতে এসে অবস্থান করে যাতে শুক্রবারে নামাজ পড়িয়ে যেতে পারে। শুক্রবার ফজরের নামাজ পড়ে তারা মসজিদে তালিম করছিলেন। এসময় হুজাইফা নামাজ পড়ে তার বাড়িতে যায়। তালিম শেষে তারা মসজিদ থেকে বের হলে পূর্বপরিকল্পনা মত দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জয়নাল তার সঙ্গী কদম আলী, শাহ জামাল, হোসেন আলী, মাজেদুল এবং এস্ক্যান কে সাথে করে হামলা চালায়।
এসময় তাকে মারতে মারতে খেজুরের কাটার মধ্যে ফেলে দেয়। তাকে বাঁচাতে তার জামাই ছুটে আসলে হুজাইফাকে হাসুয়া দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এতে তিনি রক্তাক্ত জখম হন। এসময় তাকে বাঁচাতে এসে একই এলাকার অধিবাসী, রাজশাহী কলেজের স্টাফ আতাহার আলী সহ আরো একজন আঘাতপ্রাপ্ত হন।
স্থানীয়রা হুজাইফা মাসুদকে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতাল এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এর আগেও ওই মসজিদের কমিটি দ্বন্দ্ব নিয়ে মিটিং করে তার মীমাংসা করা হয়েছে। এর পরও ওই অতর্কিতভাবে হামলা করে ইমাম ও খতিব কে আহত করায় দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত শেষে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন ওই ইউপি সদস্য।
আহত হুজাইফার বাবা নিয়াজ খান জানান, হুজাইফা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার মাথায় গুরুতর জখম হওয়ায় ৬ টি সেলাই দিতে হয়েছে। তিনি ওই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সদর থানার ওসি নাছিম আহম্মেদ জানান, ওই ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ বা মামলা দায়ের হলে দোষীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এএজেড