রোগীর পেটে কাঁচি রেখে সেলাই: চিকিৎসক কারাগারে
রোগীর পেটে কাঁচি রেখে অস্ত্রোপচারের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় মেহেরপুরের গাংনীর রাজা ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজার জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। তবে মামলার বাকি দুই আসামিকে ডা. মিজানুর রহমান ও ডা. তাপস কুমারকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মেহেরপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তারিক হাসান এ রায় দেন।
কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক গোলাম মোহাম্মদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ২০০২ সালে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের গৃহবধু বাচেনা খাতুনের পিত্তথলির অপারেশন করা হয় গাংনীর রাজা ক্লিনিকে। বাচেনা খাতুনের অপারেশন করেন চিকিৎসক মিজানুর রহমান। তার সহকারী হিসেবে ছিলেন ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজা ও অ্যানেস্থেসিয়া করেন ডা. তাপস কুমার। অপারেশন করার পর সুস্থ হওয়া তো দূরের কথা দিনদিন বাচেনা খাতুনের পেটের যন্ত্রনা বাড়তেই থাকে। পেটের ব্যথার অসহ্য যন্ত্রনায় বছরের পর বছর বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে ছুটেছেন তিনি। চিকিৎসা করাতে গিয়ে শেষ সম্বল ১০ কাঠা জমি বিক্রিসহ খুইয়েছেন অর্থ সম্পদ। তবুও ভালো হননি তিনি।
শেষ পর্যন্ত যন্ত্রনা সইতে না পেরে গত ২ জানুয়ারি রাজশাহী মেডিকেল কলেজের নিউরোমেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রেজা নাসিমের কাছে চিকিৎসা নিতে গেলে তার পরামর্শে এক্স-রে করানো হয়। এক্স-রে রিপোর্টে পেটের মধ্যে ৪-৫ ইঞ্চির একটি কাঁচির সন্ধান মেলে। এরপর গত ১০ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি) মো. ওয়ালিউর রহমান নয়ন অপারেশনের মাধ্যমে বাচেনা খাতুনের পেট থেকে কাঁচি বের করেন।
এ সংক্রান্ত সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশিত হওয়ার পর চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তারিক হাসান স্বপ্রণোদিত হয়ে একটি মামলা করেন এবং মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) অপু সারোয়ারকে ঘটনা তদন্ত করার নির্দেশ দেন।
অন্যদিকে মেহেরপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ঘটনা তদন্তে গত ৫ জানুযারি গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আশরাফুজ্জামান লিটনকে প্রধান ও মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি) মো. ফজলুর রহমান, মেহেরপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসক ফয়সাল হারুনকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এসজি