২৭ দিন শেষে মরিয়ম অবশেষে শনাক্ত করেন মায়ের লাশ
ময়মনসিংহের ফুলপুরে উদ্ধার হওয়া লাশটি তার মা রহিমা বেগমের (৫২) এর বলে জানিয়েছেন মেয়ে মরিয়ম মান্নান। বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা জানান। 'মায়ের লাশ' শনাক্তে আজ শুক্রবার সকালে ময়মনসিংহের ফুলপুর থানায় পৌঁছিয়েছেন মরিয়ম। এর আগে গত ২৭ আগস্ট রাত ১০টার দিকে খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার বাসার উঠানের নলকূপে পানি আনতে যান রহিমা বেগম। এর পর থেকে তিনি নিখোঁজ।
পুলিশ জানায়, ১০ সেপ্টেম্বর সকালে ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার বওলা এলাকায় একটি কবরস্থানের ঝোপজঙ্গল থেকে অজ্ঞাতনামা নারীর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গতকাল রাতে উদ্ধার হওয়া ওই লাশের পোশাক ও আলামত সম্পর্কে থানায় জানতে চান মরিয়ম। পোশাক ও উদ্ধার হওয়া আলামতের কথা শুনে নিজের মায়ের লাশ বলে দাবি করেন মরিয়ম।
এরপর গতকাল দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে মরিয়ম মান্নান ফেসবুক একটি পোস্টে লিখেন তিনি তার মায়ের লাশ খুঁজে পেয়েছেন। মায়ের লাশ খুঁজে পেয়েছেন কীভাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমি আমার মাকে খুঁজে বের করেছি। দায়িত্বপ্রাপ্ত সবাইকে ছবি পাঠিয়েছি। তবে মায়ের লাশ অফিশিয়ালি হাতে পাওয়ার পর সবকিছু বলব।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বওলা এলাকায় একটি কবরস্থানের ঝোপজঙ্গল থেকে অজ্ঞাতনামা নারীর বস্তাবন্দী লাশ তাঁরা উদ্ধার করেছেন। নারীর বয়স ৩০–এর বেশি হতে পারে। দুই দিন পর ১২ সেপ্টেম্বর লাশটি দাফন করেছেন। তবে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় আলামতও সংরক্ষণ করা হয়েছে।
ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন আরও বলেন, শুক্রবার থানায় এসে মরিয়ম মান্নান জব্দ করা নারীর পোশাকসহ অন্যান্য আলামত দেখে আলামতগুলি তার নিজের মায়ের বলে দাবী করেন। যেহেতু আলামতগুলি মরিয়ম মান্নান তার মায়ের বলে দাবী করেছেন সেহেতু চূড়ান্তভাবে লাশ শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষা করানো হবে।
এ ঘটনায় গত ২৭ আগস্ট রাতেই রহিমা বেগমের ছেলে দৌলতপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরদিন তার মেয়ে আদুরী আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা পরিচয়ের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় অপহরণ মামলা করেন। এ ছাড়া বিষয়টি র্যাবকেও জানানো হয়। এ মামলায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মায়ের সন্ধান চেয়ে ঢাকায় মানববন্ধনের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে দৌড়ঝাপ করে আসছেন সন্তানেরা। ১৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি পিবিআইতে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এরপর প্রক্রিয়া মেনে ১৭ সেপ্টেম্বর নথিপত্র বুঝে নেয় পিবিআই।
পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নান তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেছেন যে পরনের কাপড়ের ছবি দেখে তিনি মায়ের লাশ শনাক্ত করেছেন। তদন্ত কর্মকর্তা মরিয়ম মান্নানকে ফুলপুর থানায় যাওয়ার জন্য বলেন। সেখানে তার ডিএনএ সংগ্রহ করে উদ্ধার করা মরদেহের ডিএনএর সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে। যদি ডিএনএ মেলে, তাহলে নিশ্চিত হওয়া যাবে। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় আলামত সংরক্ষণ করে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান।
এএজেড