প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জাল সার্টিফিকেট ও দুর্নীতির অভিযোগ
যশোরের শার্শা উপজেলার শার্শা সরকারি পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও জাল সার্টিফিকেট দাখিলের যে অভিযোগে উঠে সেটার সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ এনে বিদ্যালয়ের ২৫ জন শিক্ষক তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি দিয়েছেন। অভিযোগের সত্যতা মেলার পরেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় হতাশ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।
এর আগেও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের সত্যতা মেলায় তাকে ৩ বছর বহিষ্কার ও ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হলেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন এই শিক্ষক।
শার্শা সদর ইউপি চেয়ারম্যান কবির উদ্দিন তোতা জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ন করেছেন প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম। সরকার জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করলেও প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে বিভিন্নভাবে রেজিস্ট্রেশন ফি আদায় করেন তিনি। অন্যদিকে স্কুলের জন্য বরাদ্দের ইট, বালি নিজের বাড়ি নির্মাণে ব্যবহার করে ধরা পড়েছেন তিনি। তা ছাড়া বিদ্যালয়ের তহবিল থেকে ১৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ, বই ও পরীক্ষার খাতা বিক্রির অভিযোগ করা হয় শিক্ষা বোর্ডে। তদন্ত কমিটি সার্টিফিকেট জাল ও দুর্নীতির অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে।
শার্শা সদর ইউপির ভাইস চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান জানান, শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন তৎকালীন শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম শরিফুল আলম। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ১৯৮৫ সালে এসএসসি ও ৭ বছর পর এইচএসসি পাশ করেন। ৫ বছর বিরতির পর যশোর এমএম কলজের নিয়মিত ছাত্র বলে দাবি করেন তদন্ত কমিটির কাছে।
তদন্ত কর্মকর্তা এটিএম শরিফুল আলম জানান, ২০০৯ সালে দারুল এহসান বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় (বারিধারা ক্যাম্পাস) থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্স পাস করেন বলে দাবি করেন ওই শিক্ষক। কিন্ত ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশন শুধুমাত্র ধানমন্ডি ক্যাম্পাসকে অনুমোদন দিয়েছিল। বারিধারা ক্যাম্পাসকে কোনো অনুমোদন দেয়নি বলে তিনি তদন্তে উল্লেখ করেন। মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক হতে গেলে অবশ্যই তাকে মার্স্টাস পাস হতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে। কোনো ঘটনার সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা নেই।
র্শাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নারায়ণ চন্দ্র পাল জানান, প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতি ও সার্টিফিকেট জালিয়াতির একাধিক অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
টিআর/এসজি