ভারী লোহা ও স্টিল কাটার কারখানার বিরুদ্ধে অভিযোগ
খুলনা নগরের ৩৯নং সৈয়দ আলী লেন, (সুরোর গলি) শেখপাড়া মেইন রোড, জবেদ আলী লেন, আবাসিক এলাকার মধ্যে গড়ে ওঠেছে একাধিক ভারী লোহা ও স্টীল কাটার কারখানা। দিনরাত উচ্চশব্দ, লোহা কাটা ও পোড়ানো বিষাক্ত গ্যাসসহ নিয়মবর্হিভূত কার্যকলাপে ভুক্তভোগী এলাকারবাসির জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠছে। যে কারনে ভুক্তভোগীরা সরানাপন্ন হয়েছে খুলনা বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের, তারা লিখিত অভিযোগ করেছেন একাধিকবার। এই সমস্যার সমাধান চেয়ে দাপ্তরিক ভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন কেসিসি মেয়রসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকেও।
এলাকাবাসীরা জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই মালিকানার ভাড়াকৃত কারাখানা নিয়মবর্হিভূত ভাবে চলছে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে। দিনব্যাপী কারখানার চলমান কাজে। যে কারনে মেশিনে বিশালাকার ধাতব প্লেট কাটা, সোজা করাসহ অপরিকল্পিতভাবে ওই মেশিনে সৃষ্টি হয় তীব্র ঝাকুনী ও বিকট শব্দের।
পাশাপাশি কারখানার গ্যাস দিয়ে লোহা কাটা, পোড়ানো বিষাক্ত ধোঁয়া ও গন্ধে বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে এলাকাটি। উচ্চশব্দের কারনে কোমলমোদি শিক্ষার্থীদর লেখাপড়ায় চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে। কারখানার ওই মেশিনে সৃষ্ট তীব্র ঝাকুনীতে পার্শ্ববতী বাসা-বাড়ীর ছাদ, দেয়াল, কলামসহ মেঝতে ফাটল ধরছে। যা চরম ভোগান্তি ঘটাচ্ছে বসবাসরত এলাকাবাসির।
লিখিত অভিযোগ পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশ অধিদপ্তর ও এলাকাবাসির প্রচেষ্টায় ৩টি মেশিন স্থানান্তর করা হলেও অপর কারখানার মালিক মোঃ সুমন তার কারখানার মেশিন কাটার মেশিন স্থানান্তরিত করেননি। জনদূভোর্গ ও উচ্চশব্দ সৃষ্টিকারী মালিক অপসারন তো দুরের কথা কারখানা মালিক সুমন নতুন করে আরেকটি ভারী স্টিল কাটার মেশিন পুর্নঃস্থাপন কাজ করছে।
নতুন মেশিন স্থাপনের বিষয়টি জানিয়ে ভুক্তভোগীরা গত ৭ জুলাই পুর্নরায় পরিবেশ অধিদপ্তর বরাবর নতুন মেশিন স্থাপন সংক্রান্তে আবারো একটি অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে খুলনা বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবু সাঈদের স্বাক্ষরিত স্মারকে কারখানা মালিক মোঃ সুমনসহ ভুক্তভোগীদের গত ১০ আগষ্ট সকালে পরিবেশ অধিদপ্তর কাযার্লয়ে শুনানির জন্য দাপ্তরিক নোটিশের মাধ্যমে ডাক হয়। উক্ত শুনানিতে উভয় পক্ষের কথোপকথন শেষে। কারখানা ভিজিটসহ বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহনের সিধান্ত জানান সহকারী পরিচালক।
২৯/১নং শেখপাড়া মেইন রোড (জবেদ আলী লেন) বান্দিসা ফাহিম জানান, আমার বাসার পাশে মোঃ আনোয়ার হোসেন, মোঃ মনোয়ার হোসেন ও জাহিদ হোসেন তাদের নিজস্ব জমি ভাড়া দিয়েছেন সুমনসহ একাধিক কারখানা মালিকদের নিকট। যারা ওই জমিতে গড়ে তুলেছেন লোহা ও স্ট্রিল কাটারের কারখানা। উক্ত কারখানায় সারাদিন বিশালাকার ধাতব প্লেট কাটা, সোজা করা হয়। ওই মেশিনে সৃষ্টি হয় তীব্র ঝাঁকুনি ও শব্দের পাশাপাশি কারখানার গ্যাস দিয়ে লোহা কাঁটা এবং পোড়ানো বিষাক্ত গন্ধে দূষন হচ্ছে বাতাস।
একই সাথে উচ্চশব্দের কারনে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থদের লেখাপড়ায় যেমন ক্ষতি সাধিত হচ্ছে অন্যদিকে ওই মেশিনে সৃষ্টি হয় তীব্র ঝাকুনীতে কারখানা পার্শ্ববতী বাসা-বাড়ীর ছাদ, দেয়াল, কলামসহ মেঝতে ফাটল ধরছে। তাছাড়া দীর্ঘরাত কারখানার মালমাল আনলোড করে বিকট শব্দে মাটিতে ফেলাতে শিশুরা ভয়ে কেঁপে কেঁপে ওঠে। এ ব্যাপারে অচিরেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী ।
এ বিষয়ে সহকারী পরিচালক আবু সাইদ উল্লেখিত শুনানি পত্রে জানান, সমস্যার অভিযোগের ভিত্তিতে উভয় পক্ষকে ডেকে এবিষয়টির ব্যাপারে জানা হবে। শুনানির পর সরেজমিনে পরিদর্শন পূর্বক আনিত অভিযোগের সত্যতা মিললে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষন আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) এবং পরিবেশ সংরক্ষন বিধিমালা ১৯৯৭ অনুসারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এএজেড