সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫ | ১৭ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

বিশ্ব বাঘ দিবস

সুন্দরবনে হুমকির মুখে রয়েল বেঙ্গল

বিশ্ব বাঘ দিবস আজ। সারা দেশের মত বাংলদেশেও পালিত হচ্ছে দিবসটি। বাগেরহাটের সুন্দরবন ঘেষা মোংলা ও শরণখোলায়ও দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচী গ্রহন করা হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৮ জরিপ অনুযায়ী সুন্দরবনে বাঘ আছে ১১৪ টি। যদিও ২০১৯ সাল থেকে এই পর্যন্ত বয়ষের কারণে মারা গেছে কয়েকটি বাঘ। একই সাথে চোরা শিকারী ও পাচারকারী চক্রের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে বাঘের চামড়াসহ অংগ-প্রত্যঙ্গ।

তবে কয়েক দফায় সুন্দরবন ভ্রমনে আসা পর্যটকরা বাঘের দেখা পেয়েছেন। আবার সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয়েও বাঘ চলে এসেছে। একই সাথে বনবিভাগের সদস্যরা সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশে বাঘের উপস্থিতি টের পেয়েছেন। এ থেকে অনুমান করা হচ্ছে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লোকালয়ে বাঘ আসার অর্থ বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি নয়। সুন্দরবনে বাঘ সংরক্ষন ও বৃদ্ধির জন্য আরো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী।

পরিবেশবাদীদের দাবী, চোরা শিকারীদের দৌরাত্ত, সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ ধরাসহ নানা প্রতিকূলতার কারনে হুমকীর মুখে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার। তারা বলছেন, সুন্দরবনই হচ্ছে এশিয়ার মধ্যে রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ বন্যপ্রাণীর বৃহত্তম আবাসভূমি। বন বিভাগ রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসভূমিকে তাদের জন্য সম্পূর্ন নিরাপদ করতে পারেনি। সুন্দরবনকে বন্যপ্রাণীদের জন্য নিরাপদ করা গেলে দ্রুত বাঘের সংখ্যা বাড়বে। আর বনবিভাগ বলছে, সুন্দরবনে বাঘ সংরক্ষনে সরকারী ভাবে প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।

সুন্দরবন বিভাগের দেয়া তথ্য থেকে জানা যায়, স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালে রর্বাট হনড্রেকিসের জরিপে সুন্দরবনে বাঘ ছিলো ৩৫০টি এর পর ১৯৮২ সালে মার্গারেট স্যালটার জরিপে ৪২৫টি ও এর দুই বছর পর ১৯৮৪ সালে সুন্দরবন দক্ষিণ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের ১১০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় জরপি চালিয়ে ৪৩০ থেকে ৪৫০টি বাঘ থাকার কথা জানানো হয়।

১৯৯২ সালে ৩৫৯টি বাঘ থাকার তথ্য জানায় বন বভিাগ। পরের বছর ১৯৯৩ সালে সুন্দরবনরে ৩৫০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় প্যাগমার্ক পদ্ধতিতে জরিপ চালিয়ে ধন বাহাদুর তামাং ৩৬২টি বাঘ রয়েছে বলে জানায়। ২০০৪ সালে জরিপে বাঘরে সংখ্যা ছিলো ৪৪০টি। ১৯৯৬-৯৭ সালের জরিপে বাঘের সংখ্যা উল্লেখ করা হয় ৩৫০টি থেকে ৪০০টি।

ওই সময়ে বাঘের পায়ের ছাপ পদ্ধতিতে গণনা করা হয়। ২০১৫ সালের জরিপে সুন্দরবনের বাংলাদশে অংশে বাঘরে সংখ্যা আশংকাজনক হারে কমে দাড়ায় ১০৬ টিতে। হটাৎ করে সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা ৪০০ টি থেকে ১০৬ টিতে এসে দাড়ালে সারা বিশ্বে হৈজৈ পড়ে যায় ২০১৮ সালের সর্বশেষ বাঘ জরিপে সুন্দরবনে ১০৬ থেকে বেড়ে বর্তমানে বাঘের সংখ্যা দাড়িয়েছে ১১৪ টিতে।

সুন্দরবন বিভাগ সুত্রে আরো জানা গেছে, ২০০১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৫০টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে স্বাভাবিক ভাবে মারা গেছে মাত্র ১০টি। ১৪ টি বাঘ পিটিয়ে মেরেছে স্থানীয় জনতা, একটি নিহত হয়েছে ২০০৭ সালের সুপার সাইক্লোন সিডরে ও বাকী ২৫ বাঘ হত্যা করেছে চোরা শিকারীরা। ২০১৯ সালের ২০ আগস্ট সুন্দরবনের পূর্ব বন বিভাগের ছাপরাখালি এলাকা থেকে একটি পূর্ণ বয়ষ্ক বাঘিনীর মৃতদেহ উদ্ধার করে। ময়না তদন্তের পর জানা যায়, বাঘটির স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।

২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কবরখালী খালের চর থেকে একটি কুমিরে খাওয়া বাঘের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। যার অর্ধেক অংশ কুমিরে খাওয়া ও বাকী অংশ পচা ছিল। ২০ বছর বয়সি বাঘটির বার্ধক্যজনিত কারনে মৃত্যু বলে জানা যায়। ২০২১ সালের ১৯ জানুয়ারী রাতে বাগেরহাটের শরণখোলা থেকে র‌্যাব ও বন বিভাগ যৌথ অভিযানে বাঘের চামড়াসহ আটক গাউস ফকিরকে (৫২) আটক করে।

পেশাদার চোরা শিকারী গাউস ফকির সুন্দরবন থেকে একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার হত্যা করে ৮ ফুট ১ ইঞ্চি লম্বা ও ৩ ফুট ১ ইঞ্চি চওড়া চামড়াটির ১৭ লাখ টাকা বিক্রির চেষ্টা করে। পরে ক্রেতা সেজে তাকে আটক করা হয়। এ বছরের ১৯ মার্চ পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের ওয়ার্ড হেরিটের সাইডের অভয়রণ্যের ধনচেবাড়িয়াচর এলাকার ভোলা নদীর চর থেকে ৭ ফুট দৈর্ঘের প্রাপ্তবয়স্ক একটি মৃত রয়েল বেঙ্গল টাইগার উদ্ধার করা হয়। ১৫ বছর বয়সী এই মাদী বাঘটি বার্ধক্যজনীত কারনে মৃত্যু হয়।

একই বছরের ১১ ডিসেম্বর বাগেরহাটের ফকিরহাটে বাঘের চামড়াসহ খুলনার ডুমুরিয়া কাঞ্চনপুর এলাকার মৃত কোরেশ মাহমুদের ছেলে মোঃ আজিজুর রহমান (৪৫) ও খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার গ্রামীন আবাসিক এলাকার মোঃ জামাল খানের ছেলে মোঃ সাইদ খানকে (৩৫) আটক করে র‌্যাব। ফকিরহাট উপজেলার কাটাখালী বাজার এলাকায় সুন্দরবনের ঐতিহ্য রয়েল বেঙ্গল টাইগারের চামড়া ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে এই দুই পাচারকারীকে আটক করলেও বাকীরা পালিয়ে যায়।

২০২২ সালের ২৮ জানুয়ারি সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলারচর থেকে ৯ ফুট লম্বা একটি বাঘের মৃতদেহ উদ্ধার করে বনবিভাগ। পানি পান করতে খালে নেমে কাদায় আটকে বাঘটি মারা গেছে বলে ধারনা করা হয়। তবে আশার কথা হচ্ছে, কয়েক দফায় সুন্দরবন ভ্রমনে আসা পর্যটকরা বাঘের ভিডিও ধারণ করেছেন। আবার সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয়েও বাঘ চলে এসেছে। বনবিভাগের সদস্যরা সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশে বাঘের উপস্থিতি টের পেয়েছেন।

এ বছরের ১২ মার্চ এমএল সুবতি নামের পর্যটকবাহী লঞ্চে ঢাকা থেকে সুন্দরবন ঘুরতে আসেন ৩০ জন পর্যটক পরিবারসহ বাঘের দেখা পান। সুন্দরবনের কটকা ও কচিখালির মধ্যবর্তী স্থানে এলে তারা দেখতে একসাথে ৫টি বাঘ নদীর চরে গোল গাছের পাশে বসে রয়েছে এবং খেলা করছে। ২০২০ সালের ৭ অক্টোবর একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার ভারাট হওয়া ভোলা নদী পার হয়ে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের পশ্চিম রাজাপুর গ্রামে আসে।

২০২১ সালের ৯ জানুয়ারী রাতে সুন্দরবন থেকে একটি বাঘ বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামে ঢুকে পড়ে। বাঘটি ওই গ্রামের প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিচরণ শেষে আবার সুন্দরবনে ফিরে যায়। বাঘের পায়ের অসংখ্য ছাপ গ্রামের ফসলে মাঠ, মাছের ঘের, নদীর চরে নজরে আসে গ্রামবাসীর।

২০২২ সালের ৫ মে রাতে শরণখোলায় সুন্দরবনের একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার (বাঘ) হানা দেয়। সুন্দরবন থেকে দুই কিলোমিটার দূরে শরণখোলা উপজেলার খেজুরবাড়িয়া গ্রামের শাহিন খান নিজ ঘেরের মধ্যে বাঘটিকে শোয়া অবস্থায় দেখা যায়।

সুন্দরবন করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির জানান, বাঘ একটি নিদৃষ্ট গন্ডির মধ্যে চলাচল করে। যখন বাঘটির বয়ষ হয়ে যায় তখন অন্য বাঘ এটিতে তাড়িয়ে দেয়। তখন সে অন্য দিকে চলে যায়। সেখান থেকেও তাকে তাড়িয়ে দিলে সে লোকালয়ে চলে আসতে পারে। তিনি সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশে বনরক্ষীরা বাঘের উপস্থিতি টের পেয়েছে বলে জানান।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) বাগেরহাট জেলা কমিটির আহবায়ক নুর আলম বলেন, ২০ বছর আগে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৪০টি। এখন আছে মাত্র ১১৪টি। সেখান থেকেও কয়েকটি মারা গেছে। সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ শিকার, চোরা শিকারীদের দৌরাত্ত, বাঘের আবাসস্থল সুন্দরবন নিরাপদ না হওয়াসহ বিভিন্ন কারনে বাঘের সংখ্যা কমেছে। সুন্দরবানের পাশে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, শিল্পকারখানাসহ সুন্দরবন বিধ্বংসি সকল কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।

বাগেরহাট সরকারী পিসি কলেজের প্রাণী বিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ড. শিউলী রাণী সুত্রধর বলেন, সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা বাড়ানো জন্য চোরা শিকারি দমন, বাঘের আবাসস্থল ক্ষতিগ্রস্ত করা দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। একই সাথে সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল মধু সংগ্রহকারী, গোলপাতা সংগ্রহকারী, মাছ শিকারীরা অবাধে সুন্দরবনের গহিনে প্রবেশ করছে।

এর ফলে বাঘের সাথে মানুষের সংঘর্ষ বেড়ে যাচ্ছে। বাঘের শান্তিময় পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। এসব মানুষের জন্য বিকল্প পেশার ব্যবস্থা করছে। শুধুমাত্র বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির কারনে বাঘ লোকালয়ে আসে না। খাদ্য সংকট, সুন্দরবনে অনেক বেশি ঘন গাছ, বনের কোন কোন অংশ ফাকা হয়ে যাওয়া, বয়ষ বৃদ্ধির কারনে খাদ্য শিকারে সমস্যার ও প্রজনন কালীন সময়েও বাঘ লোকালয়ে চলে আসতে পারে।

সুন্দরবন পুর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ বেলায়েত হোসেন বলেন, বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধিতে 'সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প' নামের একটি প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। এর আওতায় সুন্দরবনে ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে বাঘ গণনা, বয়স ও লিঙ্গ অনুপাতে সুন্দরবনের কম বাঘ সম্পন্ন এলাকায় বাঘ স্থানান্তর, বাঘের শরীরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার স্থাপন ও মনিটরিং করা, বাঘের পরজীবীর সংক্রমণ ও অন্যান্য ব্যাধি নির্ণয় ও সুন্দরবনের লোকালয় সংলগ্ন এলাকায় নাইলনের রশির বেষ্টনী তৈরি করা হবে।

তিনি বলেন, বাঘ এবং তার শিকার প্রাণী যাতে নিরাপদে থাকতে পারে এজন্য অভয়ারণ্য বৃদ্ধি করে সুন্দরবনের ৫২ ভাগ এখন অভয়ারন্য করা হয়েছে। লোকালেয়ে আসা বাঘ নিরাপদে বনে ফেরাতেও ব্যপক জন সচেতনতা তৈরি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এর সুফলও পাওয়া গেছে। এখন বাঘসহ বন্য প্রাণী লোকালয়ে এলে স্থানীয়রা বন বিভাগকে অবহিত করে। ২০২২ সালের শেষের দিকে শুরু হচ্ছে পুন:রায় বাঘ গণনা। এই জরিপে বাঘের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে এমনটাই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
এএজেড

Header Ad
Header Ad

যুক্তরাষ্ট্রে ৩ হাজারের বেশি ঈদ জামাত, প্রবাসীদের মাঝে উৎসবের আমেজ

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। দেশটির প্রায় ৩ হাজারেরও বেশি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় মুসলিম আমেরিকানদের কর্মস্থলে ছুটির প্রয়োজন হয়নি, পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরাও নির্বিঘ্নে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পেরেছে।

প্রবাসী বাংলাদেশি মুসলিমদের ঘরে ঘরে ঈদের বিশেষ আয়োজন লক্ষ্য করা গেছে। তবে অভিবাসন মর্যাদার অভাবে কিছু প্রবাসী ঈদের জামাতে অংশ নিতে পারেননি।

নিউইয়র্ক সিটিতে প্রধান প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার, ব্রুকলিনের বাংলাদেশ মুসলিম সেন্টার, কুইন্সের আল আমিন মসজিদ, ওজোনপার্কের আল আমান মসজিদ এবং ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার জামে মসজিদে। এছাড়া, নিউজার্সি, ফ্লোরিডা, পেনসিলভানিয়া, মিশিগান, শিকাগো, টেক্সাসসহ অন্যান্য রাজ্যের মসজিদগুলোতেও একাধিক ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

ঈদের আগের রাত অর্থাৎ চাঁদরাতকে ঘিরে প্রবাসী মুসলিমদের মধ্যে ছিল বিশেষ আয়োজন। মহিলাদের পাশাপাশি শিশু-কিশোর ও তরুণদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো।

এদিকে, ঈদ জামাত নির্বিঘ্ন করতে স্থানীয় প্রশাসন নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। মসজিদভিত্তিক কমিউনিটির নিরাপত্তার জন্য টহল পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়, যাতে মুসলিম সম্প্রদায় শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারে।

Header Ad
Header Ad

মায়ের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের ছবি শেয়ার করে যা বললেন তারেক রহমান

মায়ের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের ছবি শেয়ার করে যা বললেন তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

উন্নত চিকিৎসার জন্য বর্তমানে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থান করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এবারের পবিত্র ঈদুল ফিতর তিনি উদযাপন করছেন সেখানে ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে।

রোববার (৩০ মার্চ) রাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মা খালেদা জিয়াসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেন। ছবির সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের জনগণ এবং বিশ্বের মুসলিমদের উদ্দেশ্যে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়ে লেখেন— "ঈদ মোবারক।"

তারেক রহমান লিখেছেন, ১৭ বছর ধরে নিপীড়িত বাংলাদেশের মানুষ একটি মুক্ত ও গণতান্ত্রিক দেশে ঈদ উদযাপনের স্বপ্ন দেখছিলেন। ২০২৪ সালে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে। ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দুই হাজারের বেশি মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে দেশ স্বৈরাচারের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়েছে। প্রায় দুই দশক পর এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ স্বৈরাচারমুক্ত পরিবেশে ঈদ উদযাপন করছে। তিনি শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং যারা এখনো সেই সংগ্রামের ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন, তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

ঈদের এই আনন্দঘন মুহূর্তে বিএনপি নেতা-কর্মীসহ সব দেশবাসীকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের পরিবার ও আহতদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি। বিশেষভাবে এতিম ও দরিদ্রদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার অনুরোধ করেন, যাতে কেউ অর্থনৈতিক সংকটের কারণে আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয়।

এছাড়া, তিনি পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের অতিরিক্ত ভাড়া আদায় থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান, যাতে মানুষ বাড়ি ফেরার পথে বাড়তি দুর্ভোগে না পড়ে।

তারেক রহমান সতর্ক করে বলেন, দেশের অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য কিছু চক্র এখনো সক্রিয়। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে এসব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার আহ্বান জানান। যদি জাতি ঐক্যবদ্ধ হতে ব্যর্থ হয়, তবে এই শক্তিগুলো অর্জিত বিজয়কে দুর্বল করার চেষ্টা করবে বলে সতর্ক করেন।

সবশেষে তিনি দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ঈদের সময় সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রাখার আহ্বান জানান, যাতে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে জনজীবন বা সম্পত্তির ক্ষতি করতে না পারে।

তিনি প্রার্থনা করেন, স্বাধীন বাংলাদেশের এই প্রথম ঈদ সবার জন্য শান্তি, ঐক্য এবং আনন্দ বয়ে আনুক।

Header Ad
Header Ad

ময়মনসিংহে বাসের ধাক্কায় অটোরিকশার নারী-শিশুসহ নিহত ৪

ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের গৌরীপুর ও সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় নারী ও শিশুসহ চারজন নিহত হয়েছেন। রোববার (৩০ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে গৌরীপুর উপজেলার চন্দ্রপাড়া ও সদর উপজেলার সাহেব কাচারী-সংলগ্ন ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. শফিক উদ্দিন জানান, মৃত ব্যক্তিরা হলেন—গৌরীপুর উপজেলার ৯ নম্বর ভাংনামারী ইউনিয়নের দুর্বাচর গ্রামের ওবায়দুর রহমানের স্ত্রী কুলছুমা বেগম (৯৫), একই এলাকার মানিক মিয়ার স্ত্রী দিলরুবা (৪০), ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাইফুল ইসলামের মেয়ে দিলরুবা (৭) ও তার বড় বোন রীতি (১৪)।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সকালের দিকে যাত্রীবাহী একটি অটোরিকশাকে দ্রুতগতির বালুবাহী ট্রাক ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই চারজনের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম খান জানান, নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রে ৩ হাজারের বেশি ঈদ জামাত, প্রবাসীদের মাঝে উৎসবের আমেজ
মায়ের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের ছবি শেয়ার করে যা বললেন তারেক রহমান
ময়মনসিংহে বাসের ধাক্কায় অটোরিকশার নারী-শিশুসহ নিহত ৪
ঈদের শুভেচ্ছা জানালেন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান
ঈদের আগের দিন গাজীপুরে বন বিভাগের উচ্ছেদ অভিযান
ঈদুল ফিতরের ছুটিতে দুই দিনে রাজধানী ছাড়লেন ৪১ লাখ মানুষ
ঈদেও রেহাই নেই গাজার, ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৯
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনাবাহিনী প্রধানের সৌজন্য সাক্ষাৎ
বাংলাদেশের আকাশে চাঁদ দেখা গেছে, সোমবার উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল ফিতর
ফিলিস্তিনের আল-আকসায় ঈদের নামাজে মুসল্লিদের ঢল
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে ঈদের আমন্ত্রণ জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
ধ্বংসস্তূপের মধ্যে গাজাবাসীর ঈদুল ফিতরের নামাজ
জাতীয় ঈদগাহে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত: ডিএমপি কমিশনার
৮ বছর পর পরিবারের সঙ্গে লন্ডনে ঈদ উদযাপন করলেন খালেদা জিয়া
ইসরাইলে হুথি বিদ্রোহীদের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
তিস্তা প্রকল্প নিয়ে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন
কারাগারে ঈদ: জেলে বন্দি নেতারা কেমন কাটাবেন ঈদের দিন?
শিল্পকলায় ‘চাঁদ রাতের আনন্দ অনুষ্ঠান’ থাকছে মাইজভান্ডারী গানের পরিবেশনা  
নিজেদের নয়, প্রকৃতিকে ঈদ উপহার দেওয়া উচিৎ : পরিবেশ উপদেষ্টা  
যমুনা সেতুতে ২৪ ঘণ্টায় ৪৫ হাজার ৪৭৮টি যান পারাপার