টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বত্ব পেতে আবেদন
ছবি: সংগৃহীত
টাঙ্গাইল শাড়ির ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) স্বত্ব পেতে আবেদন করেছে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এ তথ্য জানান জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেড মার্কস অধিদফতরে এ বিষয়ে আবেদন করা হয়েছে।
কায়ছারুল ইসলাম বলেন, টাঙ্গাইল শাড়ি যে কোনো বিচারে বাংলাদেশের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার দাবিদার। টাঙ্গাইল নামধারি যে কোনো পণ্যই এদেশের পণ্য। গত তিনমাস ধরে টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির জন্য ডকুমেন্টেশন কার্যক্রম চলমান জানিয়ে তিনি বলেন, মূলত শাড়িটির আড়াইশ বছরের ইতিহাসের তথ্যাদি ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট মানুষের জীবন জীবিকার তথ্য সংগ্রহ করে আবেদন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার পর বিশ্ব মেধাসম্পদ সংস্থায় আপিল করা হবে। ভারত ‘টাঙ্গাইল শাড়ি অব বেঙ্গল’ নামে যে পণ্যটির জিআই পেয়েছে, এটি বাংলাদেশের স্বার্থের সাথে সাংঘর্ষিক। চূড়ান্ত বিচারে টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের জিআই পণ্য হিসেবেই স্বীকৃতি লাভ করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ভারতের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী তাঁতের শাড়িকে নিজেদের পণ্য দাবি করেছে ভারত। এটির জিআই স্বত্ব প্রাপ্তির ঘোষণাও দেয় দেশটি।
এরপরই বাংলাদেশে শুরু হয় নানা ধরনের সমালোচনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রতিবাদ জানাচ্ছে অনেকে। ইতোমধ্যে ভারতের এহেন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে মানববন্ধনও করেছে টাঙ্গাইলের বাসিন্দারা। তাঁত সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, সময়মতো বাংলাদেশ ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের আবেদন না করায় এমনটি ঘটেছে।
অন্যদিকে এ বিষয়ে গত রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) কথা বলেছেন বাংলাদেশের বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেন, ভারত এটি কীভাবে করেছে সেটি তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার, আমাদের জানা নেই। তবে টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বত্ব বাংলাদেশের ছিল, বাংলাদেশেরই থাকবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
উল্লেখ্য, দুইশ বছরের ঐতিহ্য টাঙ্গাইল শাড়ি বুনা হয় টাঙ্গাইল সদর উপজেলার পোড়াবাড়ি, দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল ও কালিহাতীর বল্লা এলাকায়। এই পেশার সাথে জেলাটির প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ যুক্ত রয়েছেন।