কোটি টাকা নিয়ে উধাও ডাচ বাংলার এজেন্ট, সেলস্ ম্যানেজারের আত্মহত্যা
আব্দুল কাইয়ুম। ছবি: সংগৃহীত
নরসিংদীর রায়পুরায় ডাচ-বাংলা ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার কার্যক্রম বন্ধ করে তালা দিয়ে গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে শাখাটির এজেন্ট শহিদুল ইসলাম লিটন উধাও হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কয়েক কোটি টাকা নিয়ে তিনি এখন পলাতক রয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
এ ঘটনায় ব্যাংকটির এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের সেলস্ ম্যানেজার আব্দুল কাইয়ুম (৫০) বিষ পান করে আত্মহত্যা করেছেন। আব্দুল কাইয়ুম উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের রামনগর মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি ওই গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে। তিনি ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের রায়পুরা এজেন্ট শাখার এরিয়া ম্যানেজারের দায়িত্বে ছিলেন। তার অধীনে রায়পুরায় ৩০টি আউটলেট (এজেন্ট শাখা) ছিল। অন্যদিকে এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার পরিচালক পলাতক শহিদুল ইসলাম লিটনের বাড়ি একই উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামে।
কাইয়ুমের স্বজনরা অভিযোগ করেন, আলগী বাজার আউটলেটের (এজেন্ট শাখা) গ্রাহকদের টাকা নিয়ে উদ্যোক্তা লিটন উধাও হয়ে যাওয়ার পর থেকেই কাইয়ুমের ওপর মানসিকভাবে চাপ সৃষ্টি করেন ব্যাংকের এক কর্মকর্তা। এক পর্যায়ে গ্রাহকদের সব টাকা পরিশোধ করতে হবে বলে কাইয়ুমের কাছ থেকে জোরপূর্বক একটি স্ট্যাম্পেও স্বাক্ষর নেওয়া হয়। বারবার কর্তৃপক্ষের এমন চাপ সইতে না পেরে কাইয়ুম গত শনিবার (২০ জানুয়ারি) সকালে নিকটস্থ মাহমুদাবাদ বাজার থেকে একটি বিষের বোতল কিনে এনে তা পান করেন। কিছুক্ষণ পর স্বজনরা টের পেয়ে প্রথমে কাইয়ুমকে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানেও তার অবস্থার অবনতি দেখে চিকিৎসকদের পরামর্শে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কায়ুমের স্ত্রী আমেনা বেগম জানান, ঢামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাইয়ুম সোমবার (২২ জানুয়ারি) রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টায় মারা যান।
এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ওই শাখার ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানান, তারা অনেকেই এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটে টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করেছিলেন। তাদের শাখা থেকে জমা রশিদও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ব্যাংকের উদ্যোক্তা শহিদুল ইসলাম লিটন গ্রাহকদের না জানিয়ে কৌশলে টাকা আত্মসাৎ করে শাখাটি তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যান। টাকাসহ লাপাত্তা হয়ে যাওয়া ব্যক্তিকে অতিদ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।
তবে মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা পর্যন্ত কাইয়ুমের আত্মহত্যার বিষয়ে এবং টাকা নিয়ে উদ্যোক্তার উধাও হওয়ার ব্যাপারে থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি বলে জানান রায়পুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মীর মাহাবুবুর রহমান।
তিনি বলেন, শুনেছি বিষপানের কারণে নাকি তার মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার শাহবাগ থানা কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত পরিবারের কেউ কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।