দায়িত্বে অবহেলায় ১৭ শিক্ষককে অব্যাহতি, একজনের কারাদণ্ড
ঢাকার ধামরাই উপজেলায় এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারণে ১৭ শিক্ষককে কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে পরীক্ষাকেন্দ্রে অনিয়মের দায়ে জালসা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক এমদাদুল হককে ২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার (১০ মে) সকালে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিষয়ের পরীক্ষা চলাকালে উপজেলার কুশুরা ইউনিয়নের আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয়, নবযুগ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এবং ভালুম আতাউর রহমান খান উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এসময় দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারণে কুশুরা আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্র থেকে ৪ জন, কুশুরা নবযুগ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ কেন্দ্র থেকে ৮ জন ও ভালুম আতাউর রহমান খান উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্র থেকে ৫ জন শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়। একইসাথে কুশুরা নবযুগ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ কেন্দ্রে কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্ব পালনে অনিয়মের দায়ে জালসা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক এমদাদুল হককে ২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
কুশুরা আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্র থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত শিক্ষকরা হলেন- জালসা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. নাজিম উদ্দিন, খাগাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শংকর প্রসাদ, বান্নাখোলা সরকারি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আবুল কালাম আজাদ ও বাথুলী-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সনকা।
কুশুরা নবযুগ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ কেন্দ্রে থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত শিক্ষকরা হলেন- খাগাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আবজাল হোসেন ও আঞ্জুমান আরা, জালসা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. ইয়াকুব আলী, শিমুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. হেলাল উদ্দিন, বান্নল লাক্ষু হাজী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. জাকির হোসেন, ভোলানাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আবুল কাশেম, মো. আব্দুল আলীম ও মুক্তা রাণী পাল।
ভালুম আতাউর রহমান খান উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত শিক্ষকরা হলেন- সূয়াপুর নান্নার স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক মো. আবু তাহের, ভাড়ারিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মর্জিনা বেগম, সূয়াপুর নান্নার স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক তাসলিমা আক্তার, আমাতন নেসা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. নাঈম হোসেন ও ভালুম আতাউর রহমান খান উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল আউয়াল। সাজাপ্রাপ্ত এমদাদুল হক জালসা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
জানা যায়, বুধবার সকালে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিষয়ের পরীক্ষা চলাকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হুসাইন মুহাম্মদ হাই জকী কুশুরা নবযুগ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শনে যান। এসময় শিক্ষক এমদাদুল হক পরীক্ষা চলাকালে ইচ্ছাকৃতভাবে প্রশ্নের উত্তর পত্রের সেট কোড পরিবর্তন করে ভিন্ন সেট কোড ছাত্র-ছাত্রীদের পূরণ করতে সহায়তা করে। যার ফলে তাৎক্ষণিকভাবে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে ওই শিক্ষককে ২ বছরের কারাদণ্ড দেন ইউএনও। এ ছাড়া বিভিন্ন কেন্দ্রে দায়িত্বে অবহেলার কারণে ১৭ সহকারী শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হুসাইন মুহাম্মদ হাই জকী বলেন, পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীদের সহযোগিতা করায় এবং প্রশ্নের উত্তর বলে দেওয়ায় একজনকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দায়িত্ব অবহেলার কারণে ১৭ শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এসএসসি পরীক্ষা সুন্দর ও নকলমুক্ত করতে আমরা বদ্ধপরিকর। কোথাও অনিয়ম হলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসজি