সাভার ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী পেটানো-ছিনতাইয়ের অভিযোগ
দাবীকৃত চাঁদা না পেয়ে কারখানায় ঢুকে ব্যবসায়ী ও তার স্বজনদের পিটিয়ে নগদ ৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাভার পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি মাসুম দেওয়ানের বিরুদ্ধে। এ সময় ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ী ও তার স্ত্রীসহ ৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
শনিবার (৬ মে) বিকেল ৫ টায় সাভার পৌরসভার আনন্দপুর এলাকার বিসমিল্লাহ ওয়াস কারখানায় চাঁদার দাবিতে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, আনন্দপুর এলাকার মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে ও বিসমিল্লাহ ওয়াশ কারখানার স্বত্বাধিকারী ইউসুফ আলী চুন্নু (৪৫), তার ছেলে আবির হোসেন (২১), ছোট ভাই নান্নু, স্ত্রী রত্না ও ভাতিজা বাহাদুর (২৭)। আহতদের মধ্যে ৩ জনকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং ২ জনকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মো. ইউসুফ আলী চুন্নু বাদী হয়ে সাভার পৌর শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি এবং পৌরসভার নামাগেন্ডা এলাকার হোসেন আলীর ছেলে মাসুম দেওয়ানসহ (২৫) ৯ জনের নাম উল্লেখ করে সাভার মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অপর অভিযুক্তরা হলেন, সাভার পৌরসভার নামাগেন্ডা এলাকার ইমান আলীর ছেলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আলমগীর হোসেন (৩০), চাঁপাইন এলাকার বাসিন্দা সাভার সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি সোহেল রানা (৩৩), নামাগেন্ডা এলাকার হাবু মিয়ার ছেলে নাদিম দেওয়ান (২৪), উলাইল এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে টিপু (২৮), কাতলাপুর এলাকার বাসিন্দা বাবু (২৮), একই এলাকার পলাশ (৩০), মজিদপুর এলাকার বাসিন্দা পাভেল (৩৫), নামাগেন্ডা এলাকার হানিফ মিয়ার ছেলে সজীব (২৪)। এ ছাড়াও অভিযোগপত্রে অজ্ঞাত আরও ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত একমাস যাবৎ সাভার পৌর এলাকার আনন্দপুর মহল্লার বিসমিল্লাহ ওয়াশ ফ্যাক্টরিতে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল মাসুম দেওয়ান ওরফে মুরগি মাসুম বাহিনীর সদস্যরা। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় শনিবার বিকালে মাসুমের নেতৃত্বে অভিযুক্তরা ওই প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে। চাঁদার বিষয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ব্যবসায়ী ইউসুফ আলী চুন্নুকে চর থাপ্পড় মারতে থাকে সাভার সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি সোহেল রানা। তাকে বাঁচাতে পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে আসলে অন্যান্য অভিযুক্তরা হাতে থাকা লোহার রড ও পাইপ দিয়ে এলোপাথারি মারতে থাকে। এই ফাকে অভিযুক্ত পাভেল নান্নুর পরনের পাঞ্জাবির পকেট থেকে নগদ ৮৫ হাজার টাকা এবং অভিযুক্ত আলমগীর প্রতিষ্ঠানের ক্যাশ বক্সে থাকা নগদ ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ছিনতাই করে।
ইউসুফ আলী চুন্নু জানান, চিৎকার চেঁচামেচিতে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে হাতে থাকা পিস্তল দিয়ে ২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে আতঙ্ক ছড়িয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে, অবশিষ্ট বাকি টাকা না দিলে ভুক্তভোগীদের হত্যার হুমকি দিয়ে মাসুম দেওয়ান চলে যায়।
লিখিত অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে সাভার মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন বলেন, চাঁদার দাবিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনায় লিখিত একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। সুষ্ঠু তদন্ত করেএঊর্ধ্বতন স্যারদের নির্দেশে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঘটনার পর থেকে সাভার পৌর শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুম দেওয়ানসহ অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছেন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও চাঁদাবাজির অভিযোগের ব্যাপারে তাদের কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে মাসুম দেওয়ানকে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
/এএস