রোজায় তীব্র তাপদাহে দায়িত্বে অনড় ট্রাফিক পুলিশ
তীব্র রোদের তাপে পুড়ছে সারা দেশ। প্রচণ্ড গরমে যখন হাঁসফাঁস করছে মানুষ, তখনো গলা পিচের উপর দাঁড়িয়ে দায়িত্বে অনঢ় ট্রাফিক পুলিশ। রমজানে রোজা রেখে এমনি করেই দায়িত্ব পালন করছেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। রোদের প্রচণ্ড তাপ আর সিয়াম সাধনার ক্লান্তি যেন ধরাশায়ী তাদের কাছে।
শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা-আরিচা, নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক ও টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়ক ঘুরে দেখা যায়, প্রচণ্ড তাপদাহে গলে গেছে মহাসড়কের পিচ। সড়কে তেমন দেখা যায়নি পথচারীদের। আজ পহেলা বৈশাখ হলেও সড়কে মানুষের ভিড় ছিল নগণ্য। ঠিক এমন পরিস্থিতিতেও নিরলসভাবে কাজ করতে দেখা গেছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এই সপ্তাহে গরমের তীব্রতা কমার সম্ভাবনা নেই। তাপপ্রবাহের তীব্রতা বেড়ে মাঝারি থেকে তীব্র হতে পারে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছুঁতে পারে ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া হালকা বাতাস বইলেও তাতে গরমের তীব্রতা কমার সম্ভাবনা নেই। দেশের বেশিরভাগ এলাকায় মেঘ-বৃষ্টির সম্ভাবনাও কম। কয়েকটি এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হলেও তার স্থায়িত্ব হতে পারে কম সময়।
নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল মোড়ে দায়িত্ব পালনকালে খায়রুল ইসলাম নামে এক ট্রাফিক পুলিশ বলেন, রোজার কারণে কারখানাগুলো তাড়াতাড়ি ছুটি হয়। বিকাল চারটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাড়ির চাপ বেশি থাকে। এই সময় স্ট্যান্ডবাই ডিউটি করতে হয়। দায়িত্বে একটু অবহেলা করলেই সড়কে গাড়ির জট লেগে যায়। আর রোজার ক্লান্তিটা এই সময় বেশি আসে। রোদের প্রচণ্ড তাপ তো আছেই। এসব কিছু বাদ দিয়ে দায়িত্ব পালন করছি। কারণ এটাই তো আমার চাকরি।
সুমন মিয়া নামে আরেক ট্রাফিক পুলিশ বলেন, রোদের প্রচণ্ড তাপের সঙ্গে অসহ্য গরম। সড়কে ধুলাবালিরও শেষ নেই। যে পরিবেশ পরিস্থিতিতে আমরা কাজ করছি তা অত্যন্ত কঠিন। স্বাভাবিকভাবে ঘরের ভেতর মানুষ এই তাপ ও গরম সহ্য করতে পারছেন না। আমরা রোদের মধ্যে প্রচণ্ড তাপ উপেক্ষা করে দায়িত্ব পালন করছি। এখানে গাড়ির হর্ন, ধুলাবালি ও আইনভঙ্গকারী চালকের কার্যকলাপে যে কেউ ধৈর্য হারাবে। কিন্তু আমাদের যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পালন করছি। দেশ ও দেশের মানুষকে ভালবেসেই এই দায়িত্ব পালন করছি আমরা।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা বলেন, প্রচণ্ড তাপদাহে হিটস্ট্রোকের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ ছাড়া ডায়রিয়ার মতো রোগও হতে পারে। অতিরিক্ত গরমে যেকোনো ব্যক্তির মেজাজ খিটখিটেসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ঢাকা উত্তর ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) শহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের মহাসড়কের প্রত্যেক পয়েন্টে পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশ বক্স রয়েছে। তারা সেখানে অল্প সময়ের জন্য বিশ্রাম নিতে পারেন। প্রচণ্ড তাপ ও গরমে দায়িত্ব পালনে তাদের একটু অসুবিধা হচ্ছে এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। রমজান মাস না হলে হয়তো একটু কষ্ট কম হতো। এর মাঝেও আসন্ন ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
এসজি