বুধুনগরে লুটপাটের তাণ্ডব, পালিয়ে বেড়াচ্ছে শতাধিক পরিবার
একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভৈরবের শ্রীনগর ইউনিয়নের বুধুনগর গ্রামে চলছে ভাংচুর আর লুটপাটের তাণ্ডব। ঘটনার পর থেকেই শুধু পরিধেয় কাপড়ে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে প্রতিপক্ষের লোকজন। একদিকে নিহতের পক্ষের লোকদের হাতে প্রাণ হারানোর ভয় অপরদিকে গ্রেপ্তার আতংক। এ কারণে গ্রামটি এখন পুরুষ শুন্য।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ লুন্দিয়া গ্রামের ইউ,পি সদস্য সহিদ মিয়া ও সাবেক ইউপি সদস্য হারুন মিয়ার নেতিৃতে এসব ঘটনা চালানো হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের দিন থেকে গত ১৬ দিন যাবত লাগাতার চলছে বাড়িঘর ভাংচুর আর লুটপাট।
কার্টার মেশিন আর শাবল কোদালসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদির মাধ্যমে ঘরের টিনের চালা বেড়া দালানের পিলার দরজা জানালা গ্রীল সবই কেটে নিয়ে পুরাতন লোহালক্কর ব্যবসায়ীদৈর কাছে নাম মাত্র মুল্যে বিক্রি করছে। ভাংচুর আর লুটপাটে মেতে উঠেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। কেউ বাধা দিতে গেলে দেয়া হচ্ছে হত্যা মামলার আসামী করার হুমকী। মূলত প্রতিশোধ নিতে নয় আর্থিক ভাবে লাভবান হতেই চালাচ্ছে ভাংচুর আর লোটপাট বলছেন এলাকাবাসি। সেই থেকে প্রাণ ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে বেরাচ্ছে শতাধিব পরিবার। প্রশাসনের সহযোগিতা চায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত ১৬ জানুয়ারী এ গ্রামে কালা মিয়া নামে একজন প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মারা যায়। ঘটনার পর থেকেই গ্রামটি পুরুষ শুন্য হয়ে পড়ে। ভৈরব উপজলার শ্রীনগর ইউনিয়নের বুধুনগর গ্রামটিতে গিয়ে দেখা যায় পুরুষ শুন্য। হাতেগুনা কয়েকটি বাড়িঘর যাও দেখা যায় সেগুলো নিহতের পক্ষের লোকজনের। সেগুলো ব্যতীত গ্রামটি যেন বিরানভূমি। চারিদিকে শূধু ধ্বংসস্তুপ। দেখলে মনে হবে এগ্রামটি যেন যুদ্ধবিধ্বস্থ এলাকা। এ গ্রামের ছোটবড় মিলিয়ে প্রায় শতাধিক বাড়িঘর দালান কোঠা সবই ভেংগে চুরমার করে দিয়েছে নিহত কালা মিয়া পক্ষের লোকজন।
এ ঘটনাকে কন্দ্রে করে গতকাল পর্যন্ত টানা ১৬ দিন যাবত নারকীয় কাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে নিহতের পক্ষের লোকজন। গ্রেপ্তার আতংকে পুরুষ শুন্য গ্রামটিতে প্রতিপক্ষের বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট, গরু ছাগল হাস মুরগি ও নগদ টাকা পয়সা নিয়ে গেছে। ধারাবাহিক ভাবে প্রতিদিনই চালিয়ে যাচ্ছে ভাংচুর। এসকল ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন ক্ষতিগ্রস্থরা।
তাদের অভিযোগ পুলিশ যদি সঠিক ভূমিকা রাখতো তাহলে আমাদের এমন ক্ষতি হতনা। মনে হচ্ছে আগামীতে নিজ গ্রাম ছেড়ে অন্য কোথাও গিয়ে বসবাস করতে হবে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ৫ কোটি টাকাও ছাড়িয়ে যাবে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ব্যাক্তি বলেন, ভাংচুর আর লোটপাট বন্ধ করতে আমি অনেক চেষ্টা করেছি তাদের করজোড়ে অনুরোধও করেছি। উল্টো তারা আমাকে হত্যা মামলায় জড়ানোর হুমকি দেয়।
ভোক্তভোগি কয়েকজন নারী বলেন,নিহত কালা মিয়া পক্ষের লোকজন আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে নগত টাকা, স্বর্নালঙ্কার, গরু বাছুর ,হাস মুরগি ও মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে গেছে। তাদের ভয়ে আমরা বাড়িতে আসতেও পারছিনা। তাদের ভয়ে নিজের বাড়ি দেখতে আসলেও আমাদের দেয়া হয় শ্লিলতাহানীর গুমকি। এই শীতে আমরা আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। এভাবে কত দিন থাকতে পারব বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ভুক্তভোগি নারী।
ভৈরব থানার অফিসার ইচার্জ মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম, বুধুনগর গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে কালা মিয়া নামে একজন নিহতের ঘঠনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি আইনগত ব্যবস্থা নেয় হবে। নিহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোন একটা পক্ষ বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট খবর পেয়ে আমি নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এধরনের ঘটনা রোধ করতে ঐ এলাকায় পুলিশি টহল অব্যাহত রয়েছে।
পুনরায় আর যেন কোন লুটপাটের ঘটনা না ঘটে এবং এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রশাসনের কাছে এমন দাবী করেন এলাকাবাসী।
এএজেড