গুলিতে নয় ইটের আঘাতে যুবদল নেতার মুত্যু
গুলিতে নয় ইটের আঘাতে মৃত্যু হয়েছে যুবদল নেতা শাওনের। সুরতহাল, ভিসেরা রিপোর্ট ও ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এমনটাই বলা হয়েছে এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ থেকে চুড়ান্ত রিপোর্ট দেয়া হয়েছে বলে আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রেস রিলিজে জানালেন মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার মাহমুফুজুর রহমান আল মামুন।
এসময় পুলিশ সুপার মাহফুজ আল মামুন জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এর সম্মুখে নিহত শাওনের মৃতদেহের সুরতহাল সম্পন্ন করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে হস্তান্তর করে।
পরে ফরেনসিক বিভাগ মৃতের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে চূড়ান্ত মতামত এবং সুরতহাল ও ভিসেরা রিপোর্ট পর্যালোচনায় ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত মতামতে ও উক্ত সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মাথায় আঘাতজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে মর্মে মতামত প্রদান করেন ময়নাতদন্ত রিপোর্ট। উক্ত রিপোর্টে মাথার পেছনে থেতলানো আঘাত রয়েছে বলে উল্লেখ্য আছে।
এছাড়া গান শুটের কোনো আঘাত নেই এমন দাবী করে তিনি এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনার বিষয়টি বিজ্ঞ আদালতে অবহিত করে। ইতোমধ্যে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে বলেও জানান।
এ সময় তিনি জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই সময় পুলিশের উপর বিএনপি নেতাকর্মীদের ইটপাটকেল নিক্ষেপের এক পর্যায়ে তাদেরই এক যুবকের ইট শহিদুল ইসলাম শাওনের মাথায় আঘাত করলে মাটিতে লুটিয়ে পরে শাওন।
পরে তার দলীয় নেতাকর্মিরা তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। প্রাপ্ত সোরতহাল ও মেডিকেল রিপোর্টেও বলা হয়েছে শাওনের মাথার পিছনে ইটের আঘাতে ক্ষত হয়েছে। এসময় ১৬ জন পুলিশ সদস্য আহত হন বলে জানান তিনি।
ভাইরাল হওয়া একটি মেডিকেল রিপোর্টে গুলির আঘাতের কথা লিখা আছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময় রোগের হিস্ট্রি লিখতে হয় রোগীর স্বজনরা যা বলেছে তাই লিখা হয়েছে। তবে লিখার সাথে স্বাক্ষরের মিলনেই এটি নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বলেও তিনি জানান।
তবে ভিডিও দেখা যায় শাওন যখন পুলিশকে লক্ষ করে লাঠি নিয়ে ট্রাকের সামনে তেড়ে যায় তখন একটি শব্দ হয় এবং ট্রাকের পাশ থেকে ধুঁয়া বেড় হয়। এবং একই সময়ে পিছন থেকে আরের বিএনপি নেতাকর্মীর ছোড় ইটের আঘাত লাগতেও দেখা যায়। নিহত শহিদুল ইসলাম শাওন সদর উপজেলার মিরকাদিম পৌরসভার মুরমা এলাকার সোয়াব আলী ভূইয়ার বড়ছেলে। সেই ৮ নং ওয়ার্ড যুবদলের নেতা ছিলেন। তার এক শিশু সন্তান রয়েছে।
উল্লেখ্য গত বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকালে মুন্সীগঞ্জ শহরের উপকণ্ঠ মুক্তাপুর এলাকায় বিএনপি ও পুলিশে মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সেই সংঘর্ষে পুলিশ, ৩ সাংবাদিক ও নিহত শাওয়নসহ অর্ধশাধিক বিএনপি নেতা কর্মি আহত হয়। গুরুতর আহত শাওনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরে ২২ ঘন্টা লাইফ সাপোর্টে জীবনের সাথে লড়াই করে বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯ টার দিকে আইসিউতে মৃত্যুবরন করে শাওন। এ ঘটনায় পুলিশ ও পাবলিক কর্তৃক বাদী হয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলায় বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার রয়েছে।
এএজেড