অসুস্থ্য শরীরে কাজ, উৎপাদন ফ্লোরেই জীবন দিলেন নারী
গাজীপুরে ছুটি না পেয়ে অসুস্থ্য শরীর নিয়ে কারখানায় কাজ করার সময় এক নারী পোশাক শ্রমিক মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন। মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে শ্রীপুরের বাঘের বাজার এলাকার মন্ডল ইন্টিমেটস্ পোশাক কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত নারী শ্রমিক শিমু (২৫) শেরপুর জেলা সদর উপজেলার পাকুরিয়া চকপাড়া গ্রামের সুমনের স্ত্রী। সে ওই কারখানায় সুইং অপারেটর হিসেবে চাকরি করতো।
নিহত শ্রমিকের সহকর্মী কারখানার শ্রমিকেরা জানান, বাঘের বাজার এলাকার কাওসার মোল্লার বাড়িতে ভাড়া থেকে স্থানীয় মন্ডল ইন্টিমেটস্ পোশাক কারখানায় সুইং অপারেটর পদে চাকুরি করতেন শিমু। মঙ্গলবার দুপুরে খাবারের বিরতির পর বাসা থেকে দুইটার দিকে কারখানায় ফিরেন তিনি। কারখানার সিঁড়ি বেয়ে ৫ম তলায় উঠার পর তিনি অসুস্থ্যতা বোধ করেন।
এ সময় শিমু কারখানার উৎপাদন ফ্লোরে কর্মরত তার ফ্লোর ইনচার্জ ও সুপারভাইজারের কাছে ছুটি চান। তারা ছুটি না দিয়ে শিমুকে অসুস্থ্য শরীর নিয়ে কাজ করতে বলেন। ছুটি না পেয়ে অসুস্থ্য শরীর নিয়ে কাজ করার সময় শিমু হঠাৎ উৎপাদন ফ্লোরের মেঝেতে ঢলে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
ফ্লোরে কর্মরত সহকর্মীরা তাকে স্থানীয় বাঘের বাজার কাজী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিমুকে মৃত ঘোষণা করেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি স্থানীয় শিল্প বা থানা পুলিশকে অবহিত না করে শিমুর লাশ ওই হাসপাতাল থেকে গোপনে তার গ্রামের বাড়ি শেরপুরে পাঠিয়ে দেয়। তাদের অবহেলার কারণে সুচিকিৎসা না পেয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান শ্রমিকেরা।
কাজী হাসপাতালের চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম জানান, মন্ডল ইন্টিমেটস্ কারখানার নারী শ্রমিক শিমুকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে চালক নজরুল ইসলাম তার লাশ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শেরপুরের গ্রামের বাড়িতে পৌছে দিয়ে আসছে।
কারখানার মানব সম্পদ বিভাগের ব্যবস্থাপক শামসুল হক পলাশ বলেন, সুইং অপারেটর শিমু অসুস্থ্য হয়ে ফ্লোরে পড়ে গেলে তাকে স্থানীয় কাজী হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নিহতের ছোট বোনের স্বামী মোঃ শাহীন জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় শিমুর লাশ কাজী হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সের চালক নজরুল ইসলাম কারখানার একজন কর্মকর্তাসহ গ্রামের বাড়ীতে নিয়ে আসে।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহতাব উদ্দিন জানান, শুনেছি মন্ডল কারখানায় এক নারী শ্রমিক মারা গেছে। তবে, কিভাবে ওই শ্রমিক মারা গেছে তা জানা যায়নি। কারখানা কর্তৃপক্ষ পুলিশকে না জানিয়ে ওই নারীর লাশ তার গ্রামের বাড়ীতে পাঠিয়ে দিয়েছে।
এএজেড