থানায় বিচারপ্রার্থী বাবাকে মারধর, ওসি প্রত্যাহার
মানিকগঞ্জের শিবালয়ে মেয়েকে ধর্ষণচেষ্টার বিচার চাইতে গিয়ে থানায় পুলিশের হাতে বাবা নির্যাতনের ঘটনায় ওসি মো. শাহিনকে মানিকগঞ্জ জেলা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেন জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার জানান, কোনো সদস্য অপরাধ করলে তার দায় পুলিশ বাহিনীর নয়। পুলিশের যে সদস্য অপরাধ করেছেন দায় তাকেই নিতে হবে। মানিকগঞ্জের শিবালয় থানায় শনিবার(২০ আগষ্ট) সন্ধ্যায় মেয়েকে ধর্ষণচেষ্টার বিচার চাইতে গিয়ে পুলিশের হাতে এক পিতা নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় রাতেই অভিযুক্ত এএসআই আরিফ হোসেনকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্তি করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, থানার ভিতরে বিচারপ্রার্থী নির্যাতনের ঘটনায় ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান সোমবার (২২ আগস্ট) এক আদেশে শিবালয় থানার ওসি মো. শাহিনকে মানিকগঞ্জ জেলা থেকে প্রত্যাহার করে মাদারীপুর জেলায় সংযুক্তি করেছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) অপু মোহন্ত।
এ বিষয়ে শিবালয় থানার ওসি মো. শাহিন জানান, শনিবার সন্ধ্যায় তিনি থানায় ছিলেন না। এ সময় এএসআই আরিফ হোসেন একজনকে থানার ভিতরে মারধর করেন। এ ঘটনায় তাকে সোমবার সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জ থেকে মাদারীপুর জেলায় বদলি করা হয়েছে। তিনি সোমবার সন্ধ্যার পর শিবালয় থানার ওসি (তদন্ত) শেখ ফরিদ আহমেদের কাছে তার দায়িত্বভার বুঝিয়ে দেন।
অপরদিকে ডিএসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপু মোহন্ত বলেন, শিবালয় থানায় পুলিশ সদস্যের হাতে একজন মারধরের ঘটনায় তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিদের্শে বিষয়টি তদন্ত করছেন। সোমবার থেকে তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যায় ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ দিতে গেলে এএসআই আরিফ হোসেন ওই ব্যক্তিকে শিবালয় থানার ভিতরে পিটিয়ে আহত করেন।
পরে ভুক্তভোগী ওই শিশুর বাবা জানান, স্ত্রীসহ তিনি ঢাকায় থাকেন। তার ৫ বছরের শিশু কন্যা থাকে দাদীর কাছে। গত ২০ জুলাই শিবালয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. মান্নান খানের চাচাতো ভাই রজ্জব খান তার মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। বিষয়টি হাতেনাতে ধরেন শিশুটির দাদী। পরে স্থানীয় নেতাদের জানানো হলেও তারা পদক্ষেপ নিচ্ছিলেন না। উল্টো তাকেই নানাভাবে ভয়-ভীতি দেখানো হতো।
এরপর গত ১৪ আগস্ট শিবালয় থানায় এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। কিন্তু সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও থানা থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। গত শনিবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যায় অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে মা ও শিশু কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে থানায় যান তিনি। এ সময় থানার এএসআই আরিফ হোসেনের কাছে ঘটনা খুলে বলার পর তাকে থানার ভেতর মারধর করা হয়। রাতে পুলিশ সুপারের কাছে বিচার দিলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিবালয় সার্কেল) নূরজাহান লাবনীর নির্দেশে থানায় মামলা রেকর্ড হয়। ওই রাতেই অভিযুক্ত এএসআই আরিফ হোসেনকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়।
এসআইএইচ