সরকারি স্কুলের পাশেই ইটভাটা, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা
সরকারি স্কুলের পাশেই ইটভাটা। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে দু’টি সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও একটি কমিউনিটি ক্লিনিকের পাশে গড়ে তোলা হয়েছে ছাড়পত্রহীন অবৈধ ইটভাটা। এই ইটভাটায় কাঠ দিয়ে পোড়ানো হচ্ছে ইট।
এছাড়াও ইটভাটার স্কুল সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে বিদ্যালয়ের শতশত শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর আসা-যাওয়া এবং বিদ্যালয় মাঠে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় শিশুরা খেলাধুলা করে। ফলে ইটভাটার ধোঁয়ায় এলাকার পরিবেশ মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ছে ও শিক্ষার্থীরা চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে।
উপজেলার যমুনা সেতু-ভূঞাপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের গোবিন্দাসী ইউনিয়নের বাগবাড়ী এলাকায় ভাঙার পাড় ব্রিজের উত্তরে বিবিসি নামে অনুমোদনহীন ইটভাটাটি গড়ে তোলা হয়েছে। এই ইটভাটা সংলগ্ন এলাকায় বাগবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়, বাগবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাগবাড়ী কমিউনিটি ক্লিনিকসহ মসজিদ ও মাদ্রাসা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, স্কুলের পাশেই আবাদি জমিতে এই বিবিসি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র পোড়ানো হচ্ছে ইট। চুল্লিতে কাঠ দিয়ে পোড়ানো কালো ধোঁয়ায় আশপাশ ছেয়ে যায়। ধুলোর আস্তরণ পড়ে বই ও বেঞ্চের ওপর।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইন-২০১৯ অনুযায়ী, বিশেষ কোনো স্থাপনা, রেলপথ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ক্লিনিক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান কিংবা অনুরূপ কোনো স্থান বা প্রতিষ্ঠান থেকে কমপক্ষে এক কিলোমিটার দূরে ইটভাটা স্থাপন করতে হবে। এমন আইন থাকলেও সেটা না মেনে স্থাপন করা হয়েছে ‘বিবিসি’ ইটভাটাটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, ইট পোড়ানোর চুল্লির ধোঁয়া, রাস্তার ধুলা এবং মালামাল আনা-নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত ট্রাক ও বাংলা ট্রলি গাড়ির শব্দে অতিষ্ঠ স্কুলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও আমরা। ধোয়ায় যেমন পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি আমরা চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছি।
বাগবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় ও বাগবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, স্কুল সংলগ্ন এই ইটভাটার কালো ধোঁয়া এসে শ্রেণিকক্ষে ঢুকে পরিবেশ নষ্ট করছে। এতে আমাদেরও শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। আমরা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছি। স্কুলের কাছ থেকে এই ইটভাটাটি সরানো দরকার।
বাগবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহুরুল ইসলাম বলেন, স্কুল সংলগ্ন এই ইটভাটার কারণে শিক্ষাকার্যক্রম ব্যাহতের পাশাপাশি পরিবেশের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। স্কুলের শিক্ষার্থীরা শ্বাসকষ্টের ভুগছে। কয়েক বছর আগে স্কুলের পাশে এই ইটভাটাটি বন্ধে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেও তার কোনো প্রতিকার পায়নি।
এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক বলেন, ওই ইটভাটা বন্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে। এ বিষয়ে গত ২০২৪ সালে চার্জশিটও দেওয়া হয়।