চাঁদপুরে জাহাজে ৭ খুনের ঘটনায় একজন গ্রেপ্তার
চাঁদপুরে জাহাজে ৭ খুনের ঘটনায় একজন গ্রেপ্তার। ছবি: সংগৃহীত
চাঁদপুরের হাইমচরের মাঝিরচর এলাকায় এমভি আল-বাখেরা জাহাজে সাতজনকে খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতের নাম আকাশ মন্ডল ইরফান।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে র্যাব-১১ কুমিল্লা থেকে পাঠানো এক খুদে বার্তায় জানানো হয়েছে, চাঞ্চল্যকর জাহাজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফানকে বাগেরহাটের চিতলমারী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইরফান হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। দুপুরে কুমিল্লায় র্যাব-১১ এ বিষয়ে একটি ব্রিফিং করবে।
মঙ্গলবার ঘটে যাওয়া সাতজনের হত্যার ঘটনায় হাইমচর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জাহাজের মালিক মাহাবুব মুর্শেদ অজ্ঞাত পরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। হাইমচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিউদ্দিন সুমন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে চাঁদপুর সদরের হরিণাঘাট নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে।
হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন—মাস্টার গোলাম কিবরিয়া, গ্রিজার মো. সজিবুল ইসলাম, লস্কর মো. মাজেদুল ইসলাম, সালাউদ্দিন, আমিনুর মুন্সী এবং বাবুর্চি রানা কাজী। আহত সুকানী মো. জুয়েল (২৮), যিনি ফরিদপুর সদর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা, বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাকে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, জুয়েলের গলায় গভীর আঘাত থাকায় তিনি কথা বলতে পারছেন না। তবে ইশারায় জানায়, তিনি ডাকাতদল দেখলে চিনতে পারবেন। এছাড়া ইরফান নামে আরেকজনের উপস্থিতির তথ্যও জুয়েল লিখে জানিয়েছেন, যদিও তার সঠিক ঠিকানা দিতে পারেননি।
পুলিশ তদন্তে জাহাজ থেকে একটি রক্তাক্ত চাইনিজ কুঠার, একটি ফোল্ডিং চাকু, দুটি স্মার্টফোন, দুটি বাটন ফোন, নগদ ৮ হাজার টাকা, একটি মানিব্যাগ, একটি বাংলা খাতা, একটি সীল, এবং একটি হেডফোন উদ্ধার করেছে।
মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রশাসন নিহত ছয়জনের মরদেহ তাঁদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে। নিহতদের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকার চেক এবং নৌ পুলিশের পক্ষ থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। তবে বাবুর্চি রানা কাজীর পরিবারের সদস্যদের অনুপস্থিতির কারণে তাঁর মরদেহ হস্তান্তর করা সম্ভব হয়নি।
এই ঘটনার তদন্তে শিল্প মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি চাঁদপুর জেলা প্রশাসন, কোস্ট গার্ড, এবং নৌপুলিশ সমন্বয়ে আরেকটি আলাদা তদন্ত কমিটি কাজ করছে।