টিএইচও এবং আরএমও’র অপসারণের দাবি
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর হাসপাতালে তালা, ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে তালা। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে রোগী ও স্বজনরা ফিরে যাচ্ছেন।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগ ছাড়াও অন্যান্য গেটেও তালা দেওয়া হয়। পরে দিনব্যাপি কর্মস্থলে ডাক্তার ও কর্মচারীসহ স্টাফদের দেখা যায়নি। হাসপাতালে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার খবর পেয়ে দুপুরের ঘটনাস্থলে আসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাহিমা বিনতে আখতার।
এদিকে হাসপাতালে বহির্বিভাগের একজন চিকিৎসককে ধাওয়া ও হামলার ঘটনায় সব চিকিৎসক নিরাপত্তাহীনতার কারণে হাসপাতালে এসে ফিরে গেছেন বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, হাসপাতালের কর্মচারীরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. আব্দুস সোবহান ও আসাবিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. এনামুল হক সোহেলের অপসারণ চেয়ে কর্মবিরতি পালন করেন হাসপাতালের কর্মচারী ও স্টাফরা।
এর আগে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার (টিএইচও) বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও নানা অনিয়মের অভিযোগে টাঙ্গাইল জেলা সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছে চিকিৎসক ও কর্মচারীরা।
হাসপাতালে আসা রোগীরা জানান, সকালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে দেখি হাসপাতালের গেটে তালা ঝুলছে। ভেতরে কেউ নেই। কর্মচারীরা হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নেব সেখানেও শত শত মানুষের ভিড়।
হাসপাতালের স্টোরকিপার খন্দকার রানা মিয়া বলেন, গতকাল ১৩ অক্টোবর রবিবার রাতে দুইজন ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগের চিঠি নিয়ে আসে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হাসপাতালের কর্মচারীরা টিএইচও এবং আরএমও অপসারণের দাবিতে হাসপাতালের বর্হিবিভাগসহ অন্যান্য গেটে তালা ঝুলিয়ে কর্মবিরতি পালন করছে।
হাসপাতালের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, টিএইচও আব্দুস সোবাহান এবং আরএমও এনামুল হক সোহেলের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে হাসপাতালে অরাজকতা সৃষ্টি হচ্ছে। ওই দুই কর্মকর্তার অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। তাদের দ্বন্দ্বের কারণে রোগীরা ঠিকমতো চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালে এক চিকিৎসক জানান, বহির্বিভাগে যাওয়ার সময় লোকজন বাধা দেয় এবং হামলার চেষ্টা করে। পরে নিরাপত্তাহীনতার কারণে দ্রুত হাসপাতাল ত্যাগ করি। আমরা নিরাপত্তা চাই।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. আব্দুস সোবাহান বলেন, কয়েকজন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। হাসপাতালের তালা ঝুলানের বিষয়টি জানা নেই। তিনজন চিকিৎসক সেবা দিচ্ছে। যারা আসেননি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মিনহাজ উদ্দিন মিয়া বলেন, হাসপাতালের দুই কর্মকর্তার সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি জানার পর নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হলেও তারা কেউ কথা শোনেনি। পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে ঘটনাটি জানানো হয়েছে। তারা ব্যবস্থা নেবেন।