গোবিন্দগঞ্জের সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ সহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা
সাবেক এমপি অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, গোবিন্দগঞ্জের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুল ও গোবিন্দগঞ্জের সাবেক পৌর মেয়র মুকিতুর রহমান রাফি। ছবি: সংগৃহীত
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে কোটা সংস্কার আন্দোলনে হামলার অভিযোগে সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদসহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ.ফ.ম. আছাদুজ্জামান বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী মো. মামুন খান (২৭) গোবিন্দগঞ্জ থানায় এই মামলা দায়ের করেন। মামুন খান গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বুজরুক বোয়ালিয়া হীরকপাড়া গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে গোবিন্দগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইদুর রহমানকে।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন: গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুল (৪০), উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক প্রধান আতাউর রহমান বাবলু (৬২), সাবেক মেয়র মুকিতুর রহমান রাফি (৪৫), উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিয়া আসাদুজ্জামান হিরু (৪৫), উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ফরহাদ আকন্দ (৩৪), কামারদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তৌকির হাসান রচি (৩৭)।
তাদের সঙ্গে আরও ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও মামলার আসামি হিসেবে নাম উঠে এসেছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বাদী মামুন খান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ১৭ জুলাই বিকেল ৪টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার সাফিয়া আছাব বিপিএড কলেজ মাঠ থেকে প্রায় ৭০০-৮০০ জন শিক্ষার্থী ও জনতা একত্রিত হয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে একটি মিছিল নিয়ে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক দিয়ে যাচ্ছিল। রাজমতি সুপার মার্কেটের সামনে আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে লাঠি, লোহার রড, দেশীয় অস্ত্র, রামদা, চাইনিজ কুড়াল, হকিস্টিক, এবং ইট-পাথর নিয়ে হামলা চালায়।
অভিযোগ করা হয়, সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদের নির্দেশে এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুলের নেতৃত্বে এই হামলা সংঘটিত হয়। এতে মামুন খানসহ ২০-২৫ জন আহত হন। হামলায় ৪০-৪২ জন গুরুতরভাবে আহত হন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। হামলাকারীরা আন্দোলনকারীদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি আ.ফ.ম. আছাদুজ্জামান জানান, বাদী মামুন খান ৪৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১৫০-২০০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে (মামলা নং ৭/৩৬১, তারিখ ৩/১০/২০২৪)।
তিনি আরও জানান, মামলার আসামিরা বর্তমানে এলাকায় নেই। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।