বিলুপ্ত প্রজাতির গুইসাপ উদ্ধার, বনে অবমুক্ত
বরগুনায় একদল যুবকের ভালোবাসায় প্রাণে বেঁচে গেল বিলুপ্ত প্রজাতির এক গুইসাপ। শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে আমতলী পৌর শহরের সবুজবাগ এলাকায় একটি মুরগীর খোয়ারে পাতা জালের ফাঁদে এটি আটকা পড়ে। পরে তা উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, আমতলী পৌর শহরের সবুজবাগ এলাকায় ওয়াহিদের মুরগীর খোয়ারে পাতা জালের ফাঁদে গুইসাপটি আটকা পড়ে। গুইসাপটি প্রায় ১০ কেজি ওজনের এবং লম্বায় ৭ ফুট। দেখতে তামাটে লালচে বর্নের। জিহাদ নামের এক যুবকের প্রচেষ্টায় গুইসাপটি না মেরে বনে ছেড়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেয় এলাকার যুবকরা। তারা গুইসাপটিকে উদ্ধার করে বিকেলে বাসুগী গ্রামের পাতা বনে অবমুক্ত করেছে।
স্থানীয় ষাটোর্ধ বৃদ্ধা আম্বিয়া বেগম বলেন, আমরা ছোট বেলায় এরকম অনেক গুইসাপ দেখতাম। বাড়ীর বাগানে ঘোরাঘুরি করত। এখন ২০ বছরের মধ্যেও এ রকম বড় আকারের গুঁই সাপ আর দেখিনি।
গুঁইসাপটি উদ্ধার করা যুবক জিহাদ বলেন, প্রাণীর প্রতি মায়ার কারণে আমরা গুইসাপটিকে মারতে না দিয়ে সেটি উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করেছি।
আমতলী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবু সাঈদ বলেন, গুই সাপ পরিবেশ বান্ধব ও মানুষের জন্য অনেক উপকারী একটি প্রাণী। একে আমাদের বাঁচিয়ে রাখা দরকার।
পটুয়াখালী বিঞ্জান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যানিমাল সাইন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. মো. আহসানুল রেজা বলেন, গুই সাপ মানুষ এবং পরিবেশ বান্ধব একটি প্রাণী। ময়লা নোঙড়া, বিষাক্ত পোকা-মাকর এবং ইদুর ও বিষাক্ত সাপ খেয়ে এরা বেঁচে থাকে। এতে মানুষ অনেকটা নিরাপদে বসবাস করতে পারে। গুই সাপ মিঠা এবং লবণ পানিতে বসবাসের উপযোগী একটি উপকূলীয় প্রানী। তবে এটি বর্তমানে অনেকটা বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, না বুঝে মানুষ এদের নির্বিচারে হত্যা করে। আবার অনেকে মেরে টাকার লোভে চামরা বিক্রি করে। অনেক উপজাতি সম্প্রদায়ের লোকজন এটির মাংস খাওয়ার ফলেও বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
ড. মো. আহসানুল রেজা আরো বলেন, তামাটে এবং লালচে গুই সাপ সাধারণত ৭-৮ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এর ওজন ৮-১০ কেজি পর্যন্ত হয়। এদের গড় আয়ু ২৫-৩০ বছর। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে এর চেয়ে বেশীও বেঁচে থাকে এরা।
এমএ/এসআইএইচ