সাংবাদিকদের কিনেই তারপর উপজেলা পরিষদে এসেছি: মতিউরের প্রথম স্ত্রী
ছবি: সংগৃহীত
ছাগলকাণ্ডে ছেলে ইফাতের পরে বেরিয়ে আসছে বাবা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (শুল্ক ও আবগারি) ও ভ্যাট আপিল ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট ড. মতিউর রহমানের আরও তথ্য। দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিজের পরিবারের বিভিন্ন লোকের নামে নানারকম সম্পত্তির বানিয়েছেন তিনি।
এর মধ্যে নরসিংদীর রায়পুরা, রাজধানী মিরপুর এলাকার একটি অত্যাধুনিক ভবনে চারটি ফ্ল্যাটের মালিক ও গাজীপুরসহ নানা স্থানে ড. মতিউরের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকির বিপুল সম্পত্তি নিয়েও চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এর মধ্যে ১৪ দিন পর বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) নরসিংদীতে জনসম্মুখে আসেন লাকী।
জানা গেছে, বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে দুটি অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি সভায় অংশ নেন। তবে সভাকক্ষে স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেননি। সভা শেষে কালো রংয়ের পাজেরো জিপে তিনি উপজেলা থেকে বেরিয়ে যান। তখন সাংবাদিকরা উপস্থিত থাকলেও তাদের কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ ছিল না। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গাড়িতে ওঠার সময় দাম্ভিকতার সুরে লাকী বলেন, ‘পাছে লোকে কত কিছুই বলে। তাতে আমার কিছু আসবে যাবে না।’
উপজেলা পরিষদের দুটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তার দম্ভোক্তি ছিল-‘ঢাকার ও নরসিংদীর জাতীয় পত্রিকা ও টিভির বড় বড় সাংবাদিকদের কিনেই উপজেলা পরিষদে এসেছি। তারা আর কিছু করতে পারবে না। সব থেমে যাবে।’
নরসিংদীর গ্রামে বিশাল প্রাসাদোপম বাড়ি আছে লায়লা কানিজের। ট্রিপ্লেক্স বাড়িটিতে একাধিক বিশালাকৃত্রির ড্রইংরুম ও ডজনখানেকের বেশি অভিজাত শয়নকক্ষ রয়েছে। অথচ এই বাড়ির কোনো তথ্য তার আয়কর ফাইলে নেই। তবে বাড়ির ফার্নিচার ক্রয় বাবদ মাত্র ৭৫ হাজার টাকা দেখিয়েছেন। নরসিংদীতে দেড় একর জমি তিনি হেবামূলে পেয়েছেন। এ কারণে এই জমির কোনো দাম উল্লেখ নেই। মিরপুর এলাকার একটি অত্যাধুনিক ভবনে চারটি ফ্ল্যাটের মালিক লাকী।
এগুলোও তিনি হেবাসূত্রে পেয়েছেন বলে আয়কর নথিতে উল্লেখ করেছেন। ফলে এগুলোর কোনো দাম লেখা নেই। এছাড়াও ৩২ বছর বয়সের মেকআপ আর্টিস্ট মেয়ের কাছ থেকে তিনি কোটি টাকার উপহার পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। তবে মজার ব্যাপার হলো, সহজে যাতে তার সম্পদের খোঁজ পাওয়া না যায় তার কৌশল হিসাবে আয়কর নম্বর (টিআইএন) নিতেও চতুরতার আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। টিন ফাইলে দিয়েছেন ভুয়া ঠিকানা।
লায়লা কানিজ লাকি ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন। শিক্ষকতা পেশা পরিবর্তন করে রাজনীতিতে যোগ দিয়ে নেতা বনে যান। প্রথমে রায়পুরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হন। পরিচিতি লাভ করেন স্থানীয় এমপি রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে। এ ছাড়া নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদকের পদ নেন। লাকী বর্তমানে রায়পুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান।