নওগাঁয় ১৩২টি গণহত্যা স্থানের মাটি সংগ্রহ করে গোলাপ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা
১৩২টি গণহত্যা স্থানের মাটি সংগ্রহ করে গোলাপ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে নওগাঁয় ১৩২টি গণহত্যার স্থানের মাটি সংগ্রহ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে।
সোমবার (২৫ মার্চ) সকালে স্থানীয় সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন একুশে পরিষদের আয়োজনে শহরের মুক্তির মোড়ে শহিদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভের পাশে এই এ শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। সেখানে ১৩২টি স্থানের মাটি সংগ্রহ করে আলাদা আলাদা পাত্রে রেখে গোলাপ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
পরে সেখানে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সভাপতি অ্যাডভোকেট ডিএম আব্দুল বারি, সাধারণ সম্পাদক এম, এম রাসেলসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যবৃন্দরা।
এ সময় সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ও মাটি সংগ্রহের অন্যতম এম, এম রাসেল বলেন, এখনো পর্যন্ত জেলায় জরিপ করে দেখা গেছে ১৩২টি স্থানে গণহত্যা চালানো হয়েছে। এ গণহত্যার তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ, শহিদদের নাম, তাদের ঠিকানা, পেশা, বয়স এগুলো সংগ্রহ করতে প্রায় ১১বছর ধরে কাজ করা হয়েছে। ১৩২টি গণহত্যা স্থানের যে মাটিগুলো এগুলো যেখানে বদ্ধভূমি বা গণকবর রয়েছে সেই স্থান থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। শহিদদের এই রক্তস্নাত মাটি সংগ্রহ করতে সময় লেগেছে দুই মাসের মতো। আজকে এই ১৩২টি স্থানের মাটিগুলো এরপর মাটিগুলো আলাদা আলাদা পাত্রে রেখে দিয়ে সেখানে একটি করে গোলাপ দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
তিনি আরও বলে, শুধু মাটি প্রদর্শন বা শ্রদ্ধা জানানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। আমাদের দাবি গণহত্যায় যারা নিহত হয়েছেন তাদের স্বীকৃতি, গণহত্যার স্থানগুলোকে চিহ্নিত করে স্মৃতিফলক নির্মাণ এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে শহিদদের সম্মাননা দেওয়ার বা তালিকাভুক্ত করার দরকার। এছাড়াও এই গণকবর গুলো অবহেলিত, অবহেলায় অযত্নে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সেগুলো রক্ষায় সরকারকে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান।
সংগঠনটির সভাপতি অ্যাডভোকেট ডিএম আব্দুল বারি বলেন, যাদের জন্য আমরা স্বাধীন দেশ ও মুক্ত স্বদেশ পেয়েছি তাদেরকে এ ব্যতিক্রমে আয়োজনের মধ্য দিয়ে স্মরণ করা হচ্ছে। যাতে করে নতুন প্রজন্মকে গণহত্যা সম্পর্কে জানতে পারে।
আব্দল বারি আরও বলেন, নওগাঁ জেলায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়। তাদের স্মৃতির চিহ্নগুলো একুশে পরিষদের উদ্যোগে প্রতিটি স্থানে গিয়ে শনাক্ত করে সরকারকে দেয়া হয়েছে, বই লেখা ও লিফলেট বিতরণ করাসহ ১৩২টি জায়গায় স্থানীয়দের নিয়ে তারা যেন এই দিনটা গভীরভাবে শহিদদের স্মরণ করেন সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখা হয়েছে। যাদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের এই দেশ, স্বাধীনতা। তাদেরকে স্মরণ করতে হবে। এদেরকে জাতীয়ভাবে সম্মান করতে হবে সবাইকে।