অফিস সহকারীকে ডিউটি দিয়ে শিক্ষক পিকনিকে,পরীক্ষার্থীর খাতা গায়েব
ছবি সংগৃহিত
শেরপুরের শ্রীবরদীতে নিয়ম বহির্ভূতভাবে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করেছেন বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মাছুদা আক্তার। তিনি বানিবাইদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী।
শেরপুরে এসএসসি পরীক্ষার হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক নিজের দায়িত্ব অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে পিকনিকে যাওয়ায় ওই কক্ষের এক পরীক্ষার্থীর খাতা গায়েব হয়ে গেছে। এ ঘটনায় চার কক্ষ পরিদর্শককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
শেরপুরের শ্রীবরদীতে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে এক শিক্ষকের পরিবর্তে বিদ্যালয়ের অফিস সহকারীকে দিয়ে কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করানো হয়। পরীক্ষা শেষে ওই কক্ষ থেকে একজন পরীক্ষার্থীর খাতা হারিয়ে যায়। এ ঘটনায় চার কক্ষ পরিদর্শককে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) শ্রীবরদী উপজেলার আয়শা আইন উদ্দিন মহিলা কলেজ কেন্দ্রের ১৫ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, শ্রীবরদী উপজেলার বানিবাইদ আব্দুল্লাহ আল-মাহমুদ পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মাছুদা আক্তারকে দায়িত্ব দিয়ে একই উপজেলার গোপালখিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নন্নী গোপাল পিকনিকে চলে যান। বৃহস্পতিবার রাতেই ওই কক্ষে দায়িত্বে থাকা চার শিক্ষকের নাম উল্লেখ করে কেন্দ্রসচিব সাইফুল ইসলাম শ্রীবরদী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
এই কেন্দ্রের দায়িত্বে ছিলেন বানিবাইদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোছা. মারুফা আক্তার, সহকারী শিক্ষক সাইফুল ইসলাম, অফিস সহকারী মাছুদা আক্তার ও গোপালখিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক কারিমা খাতুন।
জানা যায়, আয়শা আইন উদ্দিন মহিলা কলেজ কেন্দ্রের ১৫ নাম্বার কক্ষে ৭৯ জন্য শিক্ষার্থী ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরীক্ষা শেষে দায়িত্বরত কক্ষ পরিদর্শকরা সহকারী কেন্দ্রসচিবের কাছে ৭৯টি ওএমআর শিট এবং ৭৮টি খাতা জমা দেন। যখন ঘটনাটি জানাজানি হয় ততক্ষণে সব পরীক্ষার্থী কেন্দ্র ছেড়ে বেরিয়ে গেছে। তাই তাদের তল্লাশি করা সম্ভব হয়নি এমনকি খাতাটিও আর পাওয়া যায়নি। তবে কোন পরীক্ষার্থীর খাতা হারিয়েছে তা জানা যায়নি।
ওই কেন্দ্রের সহকারী সচিব বানিবাইদ এএএমপি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম জানান, যে শিক্ষকের ডিউটি ছিল, তিনি পিকনিকে গিয়েছিলেন। তাই শিক্ষক না থাকায় অফিস সহকারী মাছুদা আক্তারকে দিয়ে পরীক্ষার কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করানো হয়েছে।
কেন্দ্রসচিব মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, খাতা হারানোর বিষয়টি জানার পর আমরা ওই কেন্দ্রের দায়িত্বরত চারজনকে অব্যাহতি দিয়েছি। তাদের নামে থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেছি।
একজন অফিস সহকারী কীভাবে কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। ওই কেন্দ্রের সহকারী কেন্দ্রসচিব আমাকে লিখিত দিয়েছিলেন যে, মাছুদা আক্তার একজন সহকারী শিক্ষক।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফৌজিয়া নাজনীন বলেন, দায়িত্বে অবহেলার কারণে ১৫ নম্বর কক্ষের দায়িত্বরত চারজনকে চলমান এসএসসি পরীক্ষার পরবর্তী সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাদের নামে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। এছাড়া বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।