বাসর রাতে জানলেন স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা, ওই রাতেই তালাক
প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
চাঁদপুর শহরের পুরান বাজার রিফিউজি কলোনির মমিন মিয়া নামে যুবক বিয়ের পর বাসর রাতেই জানলেন তার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। পরে সেই রাতেই স্থানীয়ভাবে পরীক্ষা করে অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে স্ত্রীকে তালাক দিলেন তিনি। এই ঘটনার পর কনের বাবাসহ পুরো পরিবার এখন বাড়ি ছাড়া।
গত ২ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের উত্তর সকদিরামপুর গ্রামের কৈ বাড়ির শফিক মিজির মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় মমিন মিয়ার। সে রাতেই স্ত্রীকে তালাক দেন মমিন। চাঁদপুর শহরের পুরানবাজার রিফিউজি কলোনির বাসিন্দা মমিন।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিয়ে এবং বিচ্ছেদের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. সেলিম।
তিনি বলেন, মেয়ের বাবা দিনমজুর। তার ৪ মেয়ে। বড় দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে। আরও একজন ছোট মেয়ে আছে। এই মেয়ে তৃতীয়। তার পুরান বাজারে বিয়ে হয়েছে জানতে পেরেছি। এরপর মেয়ের বাবা আমাকে গত কয়েকদিন আগে বাজারে যাওয়ার পথে জানিয়েছেন তার মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তখন তিনি তার বাড়ির লিটন নামে যুবকের নাম বলেন। এসব বিষয়ে আমি চেয়ারম্যানকে অবগত করতে এবং আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিই।
অন্তঃসত্ত্বা নববধূর বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, ওই পরিবারের লোকজন বহুদিন অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত। তাদেরকে এসব কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য বললে উল্টো অপবাদ দেয়। ওই পরিবারের আইনানুগ শাস্তি কামনা করে তারা।
অন্তঃসত্ত্বার বিষয়ে নববধূ গণমাধ্যমকে বলেন, গত এক বছরের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ওই বাড়ির লিটন, ইলিয়াছ মাস্টার, শিমুল ও এলাকার রনি নামে যুবকেরা তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে। যে কারণে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন।
এদিকে বর মমিনের মা ছালেহা বেগম জানান, তার ছেলে ঢাকায় একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন। ছেলের বিয়ের আগে এমন কোনো তথ্যই তাদের জানা ছিল না। বিয়ের রাতে ছেলের বউয়ের এমন পরিস্থিতি দেখে তারা বিস্মিত হয়ে পড়েন। পরে রাতেই তাকে প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করে অন্তঃসত্ত্বা নিশ্চিত হন। ওই রাতেই তার ছেলে ওই মেয়েকে তালাক দেন।
তিনি আরও জানান, পরদিন ৩ ফেব্রুয়ারি শহরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আবারও পরীক্ষা করা হয় এবং সেখানে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে রিপোর্ট পান ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নববধূ। পরে মেয়ের পরিবার এসে তাকে ওইদিনই নিয়ে যায়।
এদিকে বাসর রাতেই তালাকের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এক পর্যায়ে বাড়ির লোকজন ওই পরিবারকে বাড়ি ছেড়ে যেতে বলে ও চাপ প্রয়োগ করে। এরপর পরিবারের সদস্যরা গত ৭ ফেব্রুয়ারি বাড়ি থেকে চলে যায়।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন স্বপন মিয়াজী বলেন, এই ধরনের ঘটনার বিষয়ে আমাকে কেউ জানায়নি। আমি লোকমুখে শুনেছি। মেয়ের বাবা দিনমজুর ও বিভিন্ন মাধ্যমে ধর্ষণের বিষয়ে যাদের নাম বলেছেন তারা বখাটে ধরনের। কিন্তু ধর্ষণে জড়িত কি না বলতে পারব না।