এক মসজিদে ৩৬ বছর, রাজকীয় বিদায় পেলেন মুয়াজ্জিন
রাজকীয় বিদায় পেলেন মুয়াজ্জিন। ছবি: সংগৃহীত
এক মসজিদে দীর্ঘ ৩৬ বছর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজান দিয়েছেন তিনি। আর সুদীর্ঘ সময় আল্লাহর ঘরের এই খেদমত করায় সেই মুয়াজ্জিনকে সম্মানিত করলেন মুসল্লিরা। বিদায়বেলায় রাজকীয় সম্মান দেওয়া হলো তাকে।
কয়েকটি পিকআপভ্যান এবং ফুলসজ্জিত মাইক্রোবাসে মুয়াজ্জিনকে চড়িয়ে গোটা গ্রাম ঘুরিয়ে সম্মানে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়। সঙ্গে দেওয়া হয় নগদ অর্থ ও উপহারসামগ্রী। শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) ঘটনাটি ঘটেছে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার নরোত্তমপুর গ্রামে।
জানা গেছে, গুড়াগাজী জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। তিনি একই মসজিদে একটানা ৩৬ বছর, তিন যুগেরও অধিক সময় মুয়াজ্জিন হিসেবে খেদমত করে গেছেন। বয়স এবং কর্মক্ষমতা কমে যাওয়ায় দীর্ঘ কর্মজীবন শেষে তিনি অবসর নেন। তার এই দীর্ঘ খেদমত জীবনকে স্মরণীয় করে রাখতে মসজিদ কমিটির পরিচালনা পরিষদ ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মানবতা এক্সপ্রেসের পক্ষ থেকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
এ উপলক্ষে এলাকার হাজারো মুসল্লির উপস্থিতিতে তাদের পক্ষ থেকে নগদ এক লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকাসহ পরিবারের সদস্যদের জন্য উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে মুয়াজ্জিনকে। এই সময় হাজারো মুসল্লি কয়েকটি পিকআপভ্যান এবং ফুলসজ্জিত একটি মাইক্রোবাসে করে মুয়াজ্জিন মোহাম্মদ হেলালকে ফুলেল শুভেচ্ছায় পুরো গ্রাম ঘুরিয়ে নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেন। এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানান এলাকার অনেক উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ।
এদিকে একজন সাধারণ মুয়াজ্জিন হিসেবে এমন বিরল সম্মান পেয়ে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মুয়াজ্জিন মোহাম্মদ হেলাল।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মসজিদের উপদেষ্টা ও সাংবাদিক মুহাম্মদ হানিফ ভুঁইয়া, সাংবাদিক তাজুল ইসলাম মানিক, স্থানীয় ইউপি সদস্য জিল্লুর রহমান, সমাজসেবক শরীফ উল্লাহ, মানবতা এক্সপেসের মনির হোসেন এবং মনসাদ আলম প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, সরকারি এবং বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানে চাকরি জীবন শেষে এককালীন আর্থিক সুবিধা ও পেনশনসহ নানা সুযোগ-সুবিধা আছে। কিন্তু আল্লাহর ঘর মসজিদের খতিব, মুয়াজ্জিনদের জন্য এ সুবিধা নেই। কিন্তু গুড়াগাজী জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন মোহাম্মদ হেলাল হুজুরের সম্মানজনক রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনার এই উদ্যোগ আগামীতে অন্যান্য মসজিদের খতিব, মুয়াজ্জিনদের সম্মানে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।