বন্ধুদের ধার দেওয়া টাকা তুলতে হালখাতার আয়োজন
ছবি: সংগৃহীত
টানা ১২ মাস বেচা কেনার পর বছর শেষে বাকি টাকা তুলতে হালখাতার আয়োজন করে থাকে ছোট-বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। এমনকি এই হালখাতায় এখন যুক্ত হয়েছে অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে নদীর ঘাট পর্যন্ত। প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের হালখাতার চিঠি দিয়ে অনুষ্ঠানের দিন তারিখ জানিয়ে দেওয়া হয়।
এসব ছাড়িয়ে হালখাতায় এবার যুক্ত হয়েছে ব্যক্তিগত ধার দেওয়া টাকা উত্তোলন প্রক্রিয়া। হালখাতার মাধ্যমে ধারের টাকা তোলার এই নতুন ধারণার সৃষ্টি করেছেন কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝাড় এম এ এম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল আউয়াল। ইতিমধ্যে দেনাদারদের কাছে হালখাতার চিঠি পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। আগামী ১২ জানুয়ারি হালখাতার অনুষ্ঠান হবে। এরকম একটা চিঠি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই হালখাতা আয়োজনে তাকে নিয়ে চলছে আলোচনা ও সমালোচনা।
চিঠিতে তিনি দেনাদারদের নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এবং লিখেছেন ‘আপনাদের টাকা হাওলাত দিয়ে আমি আনন্দিত। আগামী ১২ জানুয়ারি হালখাতার আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত হালখাতায় আপনি উপস্থিত হয়ে ঋণ পরিশোধ করে ঋণ মুক্ত থাকুন।’
এই ঋণ পরিশোধের হালখাতায় ৩৫জন দেনাদারদের চিঠি দিয়েছেন ওই শিক্ষক। এসব মানুষের মধ্যে বেশিরভাগ ওই শিক্ষকের বন্ধু- বান্ধব, আত্মীয়স্বজনসহ কাছের মানুষ।
চিঠি পাওয়া কয়েকজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তিরা জানান, আমরা হালখাতার চিঠি পেয়ে প্রথমে হতভম্ব হলেও পরে বুঝতে পেরেছি ধারের টাকা ফেরত দিতে দেরি হয়েছে। আশা করছি হালখাতায় তার টাকা পরিষদ করে দিব।
হালখাতার আয়োজক শিক্ষক আব্দুল আউয়াল জানান, তিন বছর যাবত বন্ধু বান্ধব ও নিকটজনরা বিভিন্ন সময়ে আমার কাছ থেকে টাকা হাওলাত নিয়েছেন। যাদের সঙ্গে প্রতিদিন একসঙ্গে উঠাবসা রয়েছে। লজ্জায় তাদের কাছে টাকা ফেরতও চাইতে পারি না তারাও দেওয়ার নাম করে না। পরে তাদের টাকা ফেরত দেওয়ার মাধ্যম হিসেবে হালখাতার ধারণা মাথায় আসে। এতে তাদের সঙ্গে মনোমালিন্যও হলোনা আবার টাকা উঠার সম্ভাবনা শতভাগ রয়েছে।
তিনি আরও জানান, এ যাবত ৩৫ জনকে চিঠি দিয়েছি। এদের মধ্যে কেউ তিন বছর আগে টাকা নিয়েছে। সব মিলিয়ে তার ৩ লাখ টাকার মতো ধার দেওয়া আছে।