নৌকার প্রচার ক্যাম্পে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের গুলি, ভাঙচুর
ছবি: সংগৃহীত
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে নৌকার প্রচার ক্যাম্পে হামলা, ভাঙচুর ও গুলির অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদর উপজেলার বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের বটতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নৌকার সমর্থকদের দাবি, কাঁচি প্রতীকের সমর্থকরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার রাতে বটতলা এলাকায় নৌকার প্রচার ক্যাম্পে স্থানীয় নৌকা সমর্থক জুনায়েদ আহমেদ, বাবু গাজীসহ বেশ কয়েকজন বসেছিলেন। ওই সময় ২০ থেকে ২৫টি মোটরসাইকেল ক্যাম্পের কাছে আসে। ক্যাম্পের ভেতরে থাকা নৌকার সমর্থকদের গালিগালাজ করে। নৌকার লোকজন পাল্টা গালিগালাজ করলে তাদের উদ্দেশ্য করে মোটরসাইকেল থাকা ব্যক্তিরা গুলি করে। এ সময় ক্যাম্পের ভেতরে থাকা সবাই পালিয়ে যায়। মোটরসাইকেল থেকে নেমে কয়েকজন ক্যাম্পে ভাঙচুর চালায়। এ সময় মসজিদের মাইকে ডাকাত পড়েছে বলে ঘোষণা হয়। স্থানীয় লোকজন ছুটে এলে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের নৌকার প্রার্থী অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস। তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক। তিনি দুবার এ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। কাঁচি প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ ফয়সাল। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তার বাবা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মহিউদ্দিন। ফয়সাল দুবার মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ছিলেন।
ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ করে নৌকার সমর্থক জুনায়েদ আহমেদ বলেন, কাঁচি প্রতীকের সমর্থক এবং মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেন সাগরের নেতৃত্বে রাতে আমাদের ক্যাম্পে হামলা চালানো হয়। সাজ্জাদ সাগর নিজে আমাদের লোকজনকে উদ্দেশ্য করে গুলি করেছে। আমরা জান বাঁচতে সরে যাই। এ সুযোগে তারা আমাদের ক্যাম্পে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। পরবর্তী সময়ে এলাকার মাইকে ডাকাত পড়েছে বলে ঘোষণা দেওয়া হলে, তারা পালিয়ে যায়।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাজ্জাদ হোসেন সাগর। তিনি বলেন, ঘটনাস্থল আমার এলাকা থেকে ৮-৯ কিলোমিটার দূরে। যে সময় হামলার কথা বলা হচ্ছে তখন আমি আমাদের এলাকার মন্দিরে ছিলাম। সেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলছিলাম। ওই এলাকায় যাওয়ার তো প্রশ্নই আসে না।
এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে একই ইউনিয়নের রামসিং এলাকায় কাঁচি প্রতীকে ক্যাম্পে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠেছে ওই এলাকার নৌকার সমর্থকদের বিরুদ্ধে। সে সময় দুপক্ষের মধ্য ধস্তাধস্তিও হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, বিকেলে কাঁচির ক্যাম্পে গিয়েছিল নৌকার সর্মথকরা। সেখানে কাঁচির বক্স বাজানো নিয়ে নৌকা ও কাঁচি পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। মূলত সেই ঘটনার জের ধরেই রাতে হামলা গুলির ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করেন এই ব্যক্তি।
মুন্সীগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গজারিয়া- সদর সার্কেল) থান্ডার খাইরুল হাসান বলেন, বিকেলে ও রাতে দুইটি ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এসব ঘটনায় আহত হওয়ার বিষয়ে পুলিশের জানা নেই। তবে নৌকার ক্যাম্প ভাঙচুর হয়েছে। সেখান থেকে দুই রাউন্ডরগুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। দুটি ঘটনায় নৌকা ও সতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা একে অপরকে দুষছেন।কারা, কেন এসব ঘটনা ঘটিয়েছে পুলিশ খতিয়ে দেখছে। এসব ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে এ দুটি পক্ষের মধ্যে হামলা, সংঘর্ষ, গুলি, প্রচার ক্যাম্প ভাঙচুরসহ অন্তত ১৮-২০টি ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় উভয় পক্ষের বিরুদ্ধে ৯টি মামলা হয়েছে।