উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক দিনেই তিন হত্যাকাণ্ড
ছবি: সংগৃহীত
কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ২৪ ঘণ্টায় রোহিঙ্গা দুষ্কৃতকারীদের হামলায় ক্যাম্পের এক হেড মাঝিসহ তিন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে ক্যাম্পে সাধারণ রোহিঙ্গাদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উখিয়া উপজেলার ১৫ নম্বর জামতলী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা দুষ্কৃতকারীরা মোহাম্মদ আযুব নামে এক রোহিঙ্গা যুবককে ছুরিকাঘাত ও গুলি করে খুন করে পালিয়ে যায়। এসময় হামলায় আরো দুই রোহিঙ্গা আহত হয়েছে।
নিহত মোহাম্মদ আয়ুব ১৫ নম্বর ক্যাম্পের ই-৬ ব্লকের মোহাম্মদ সাদিকের ছেলে।
এর আগে আজ ভোরে উখিয়া ১৭ ও ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৃথক ঘটনায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে আব্দুল্লাহ এবং ছুরিকাঘাত ও গুলিতে নাদির হোসেন নামে ক্যাম্পের হেড মাঝি নিহত হয়।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো: শামীম হোসেন জানান, আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ১০/১২ জনের একদল রোহিঙ্গা দুষ্কৃতকারী জামতলী ১৫ নম্বর ক্যাম্পের ই ব্লকে হামলা চালায়। দুষ্কৃতকারীরা আয়ুবকে ছুরিকাঘাত ও গুলি করে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় আয়ুব।
এ ঘটনায় আরো দুজন রোহিঙ্গা গুরুতর আহত হয়। আহতদের কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জামতলী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ৮ এপিবিএন পুলিশের মিডিয়া সেলের প্রধান এএসপি সালাহউদ্দিন কাদের জানান, ঘটনার পরপরই ক্যাম্পে এপিবিএন পুলিশের পাহারা জোরদার করা হয়েছে।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো: শামীম হোসেন জানান, আজ বৃহস্পতিবার ভোর রাতে একদল দুষ্কৃতকারী ৪ নম্বর মধুরছরা ক্যাম্পের এফ ব্লকের হেড মাঝি নাদির হোসেনকে ঘর থেকে ডেকে রাস্তায় নিয়ে গিয়ে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত ও গুলি করে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। নাদির হোসেন ক্যাম্পের এফ ব্লকের হেড মাঝি (বা কমিউনিটি লিডার) ও মৃত সৈয়দ আহমেদের ছেলে।
অপরদিকে আজ বৃহস্পতিবার ভোরে ১৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সি ব্লকে ৭/৮ জনের একদল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মদ আমিনের ছেলে আব্দুল্লাহকে ঘর থেকে অস্ত্রের মুখে বের করে পাশে বাজারের রাস্তায় নিয়ে আসে। সন্ত্রাসীরা এক পর্যায়ে আব্দুল্লাহকে রাস্তায় ফেলে বুকে উপর্যুপরি গুলি করে।
খবর পেয়ে এপিবিএন পুলিশ ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে সন্ত্রাসীরা সটকে পড়ে। পুলিশ গুরুতর আহত গুলিবিদ্ধ আব্দুল্লাহকে ক্যাম্পের একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ নিহত আব্দুল্লাহর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
ওসি জানান, ঘটনার পর পরই ক্যাম্প এলাকায় এপিবিএন পুলিশের পাহারা বাড়ানো হয়েছে। ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রোহিঙ্গাভিত্তিক সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যরা এই তিন হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে।