রেল যোগাযোগ শুরু না হতেই নাট বল্টু চুরি, বিলম্বে ছাড়ল ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’
ছবি: সংগৃহীত
সরাসরি ঢাকা-কক্সবাজার রেল যোগাযোগ শুরু হতে না হতেই রাতের আধারে দুষ্কৃতিকারিরা রেলপথের নাট-বল্টু খুলে নেয়ায় কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে আধা ঘন্টার পর রেল ছেড়েছে। কক্সবাজারের রামু উপজেলার রশিদ নগর ইউনিয়নের কাহাতিয়াপাড়া এলাকায় নতুন রেলপথের নাট-বল্টু খুলে নেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। কক্সবাজার-ঢাকা রেলপথে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেল চালুর দ্বিতীয় দিনে এ ঘটনা ঘটল।
এ ঘটনায় কক্সবাজারবাসীকে চরম অভাগা বলে অবহিত করেছেন কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী।
কক্সবাজার স্টেশনের স্টেশন মাস্টার গোলাম রব্বানী জানান, শনিবার সকালে রামুর রশিদনগর ইউনিয়নের কাহাতিয়া পাড়ায় রেললাইনের এ ত্রুটির ঘটনাটি অবহিত হন তারা। ঘটনা জানার পর রেললাইনের সংস্কারকাজ চালানো হয়। ফলে ৩৫ মিনিট বিলম্বে ঢাকার উদ্দ্যেশে ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ রওনা দেয়।
তিনি আরও বলেন, শত বছরের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পর এটিকে সন্তানের মতো লালন করার পরিবর্তে লোভের কারণে রেলকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে এসব লোক।
রেল কর্তৃপক্ষের বরাতে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা মোস্তফা বলেন, শনিবার (২ ডিসেম্বর) সকালে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের রামুর কাহাতিয়া পাড়ায় রেললাইনের বিটের নাট-বল্টু খুলের ফেলার ঘটনা জানা যায়। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। বিষয়টি রেল অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টরা সকল স্তরে অবহিত করেন। এরপর রেল প্রকৌশলসহ নির্মাণকাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যান এবং বিটের খুলে ফেলা নাট-বল্টু পুনঃসংযোজন কাজ শুরু করেন। কাজ শেষ করে ট্রেন চলাচলের উপযোগী করতে বেলা সাড়ে ১২টা বেজে যায়। তাই সিডিউলের আধাঘণ্টা পর কক্সবাজার আইকনিক স্টেশন থেকে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দ্যেশে রওনা দেয়। এটি নিছক চুরি, না কি অন্য কিছু তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে।
রামুর ওসি আবু তাহের বলেন, যদিও রেল আলাদা শৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা চলে। নতুন পথ হওয়ায় আমাদের সহযোগিতা চাইলে খবরটি শোনার পর পরই প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনাস্থলে রেললাইনের বিটের নাট-বল্টু খুলে ফেলার দৃশ্য দেখা গেছে। ঘটনাটি নিছক চুরি, নাকি কোনো ধরণের নাশকতার চেষ্টা তা নিশ্চিত হওয়া না গেলেও কারা, কী উদ্দেশে এটি সংঘটিত করেছে এবং কারা জড়িত তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, বিজয়ের মাসের প্রথম দিনেই ১০২০ জন যাত্রি নিয়ে কক্সবাজার-ঢাকা রেলপথে বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু হয়। প্রথম যাওয়া রেলের ঢাকা থেকে ফিরতি ট্রিপ সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে এসে পৌঁছায় শনিবার সকাল ৮টায়। সিডিউল মতে শনিবার দুপুরে দ্বিতীয় ট্রিপ ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এর আগেই বিটের নাট-বল্টু খুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। যা হতবাক করেছে সচেতন সকলকে।