হিলিতে বেড়েই চলছে পেঁয়াজের দাম, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
দিনাজপুরের হিলিতে বেড়েই চলেছে পেঁয়াজের দাম। কোরবানীর ঈদ আর ৪০ দিনের মতো দেরি। তার আগেই বাড়তে শুরু করেছে পিঁয়াজের দাম। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন।
আজ (২০ মে) শনিবার হিলি বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত দুই-তিন দিনের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজ খুচরা পর্যায়ে কেজিতে অন্তত ১০ থেকে ১২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। আর ৭ থেকে ৮ টাকা বেড়ে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৭৬ টাকায়। যা গত রোজার ঈদের আগে খুচরা বাজারে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা রিফাত খান বলেন, বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় সব কিছুর দাম ঊর্ধ্বমুখী। এদিকে পিয়াজের বাজারে দাম বেড়েছে দিগুণ। এতে করে আমাদেরকে অনেক সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। বেশ কিছু দিন আগে পেঁয়াজ ক্রয় করেছি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় তা ধীরে ধীরে দাম বেড়ে হয়েছে ৮০ টাকা। এত দামে পেয়াজ কিনে খাওয়া সম্ভব না। আমরা চাই হাতের নাগালের মধ্যে যেন দাম থাকে তাহলে আমরা কিনে খেয়ে বেঁচে থাকতে পারব।
পেঁয়াজ কিনতে আসা আরেক ক্রেতা আসলাম হোসেন বলেন, যখনই ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয় তখনই দেশি পেয়াজের বাজার দ্বিগুণ হয়ে যায়। সামনে আমাদের কোরবানী ঈদ। আমাদের পিয়াজের চাহিদা রয়েছে তখনই দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সারাদিনের ইনকাম ৩০০/৪০০ টাকা। ১ কেজি পেঁয়াজ যদি কিনি ৮০ টাকা দরে তাহলে অন্যান্য বাজার কেমন করে করব। আমার চাই যেন প্রশাসন নিয়মিত বাজার মনিটরিং করে।
এদিকে হিলি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রেতা আবু তাহের বলেন, মোকামে আমাদেরকে বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে যার কারণে আমরা পিয়াজ বেশি দামে বিক্রি করতেছি। ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানি শুরু হলে দাম অনেক কমে আসবে। আমদানি বন্ধের সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের সংকট দেখিয়ে দাম বাড়ার এই সুযোগ নিচ্ছে। আজ হিলি বাজারে ৮০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। দুই-তিন দিন আগেও ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এ ব্যাপারে হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় চাহিদা মতো কোনো পণ্য আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে না। আবার প্রতিনিয়ত রপ্তানি মূল্যও বেড়ে যাচ্ছে। এলসি করতেও জটিলতা। সরকার দুই মাস ধরে পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ রেখেছে। তাই কোরবানি ঈদের আগে থেকে বাজারে প্রতিটি পণ্যের সরবরাহ ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে সরকারকে আমদানিকারকদের সহযোগিতা করা দরকার। তা না হলে বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নূর-এ আলম বলেন, হাকিমপুর (হিলি) উপজেলায় প্রতিটি আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। যেন কোন পণ্যের অহেতুক মূল্যবৃদ্ধি করতে না পারে এজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয়। সেই সাথে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করা হয়। মূল্যবৃদ্ধির অভিযোগ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এসআইএইচ