নগ্ন হয়ে অভিনব পন্থায় চুরি, ব্যবহার হচ্ছে ড্রোন
গভীর রাতে বসতবাড়িতে চুরি করতে এসেছে। চুরি করে যাওয়ার সময় চোরকে দেখা যায় উলঙ্গ অবস্থায়। তবে এরা ছিল মুখোশ পরা। এমনকি ড্রোনের মতো একটি বস্তুও ধরা পড়ে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে।
এমন ঘটনা ঘটেছে বরগুনা পৌর শহরের ব্যাংক কলোনি এলাকায়। ১৮ মে রাতে ওই এলাকার ফজলুর রহমানের ভবনের দ্বিতীয় তলার ভাড়াটিয়া আলতাফ হোসেনের ফ্লাটে চোর ঢুকে একটি ডিএসএলআর ক্যামেরা, স্মার্ট ওয়াচ ও আলতাব হোসেনের স্ত্রীর গলার স্বর্ণের চেইন ছিড়ে নিয়ে চলে যায় ওই চোরেরা।
ফজলুর রহমানের ভবন ও পাশের ভবনের সিসি ক্যামেরার ফুটেছে দেখা যায়, দুই ব্যক্তি রাত একটা ২৭ মিনিট থেকে আনাগোনা করছে ভবনের আশেপাশে। ২ টা ২৭ মিনিটে দেখা যায় সামনের ভবনের একটি সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে। এমনকি ড্রোনের মতো বস্তুও দেখা যায় উড়ে যেতে।
ধারণা করা হচ্ছে, ড্রোনের মাধ্যমে চোরেরা দেখছেন আশেপাশে কেউ কোথাও আছে কি না। পাশাপাশি দুই ভবনের মাঝখানে জানালার গ্রিল ধরে সানশেডে উঠে ওই ভবনের দ্বিতীয় তলার বেলকনিতে গ্রিল কেটে ভেতরে প্রবেশ করে।
৩টা ৪৬ মিনিটে চুরি করে ওই ভবন থেকে যাওয়ার সময় এক চোরকে দেখা যায় নগ্ন অবস্থায় এবং দুজনেই ছিল মুখোশ পরা। চুরি শেষে বেলকনিতে পড়ে থাকে চোরদের ব্যবহৃত একটি চাকু ও লোহা কাটার ব্লেড।
ফজলুর রহমান বলেন, বিল্ডিংয়ের ঘরেও মানুষ এখানে নিরাপদ নেই। আমার বাসায় চুরির ঘটনায় শুক্রবার আমি থানায় অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেছি। পুলিশ চাইলেই সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চোর শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে পারে।
কয়েক মাস আগে বরগুনা পৌর শহরের মুসলিম পাড়া এলাকার বাসিন্দা ও পৌরসভার সাবেক কমিশনার হুমায়ুন কবিরের বাসায়ও ঘটে এমনই এক ঘটনা। যেখানেও চোরকে দেখতে পায় উলঙ্গ অবস্থায়। হুমায়ুন কবিরের স্ত্রী রাবিয়া আক্তার বলেন, আমি এমন উলঙ্গ চোরের কথা আগে শুনিনি। নিজের ঘরে চুরি হতে দেখেও চোরের হাতে অস্ত্র দেখে ভয়ে কথা বলতে পারিনি। থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ কিছুই করতে পারেননি।
এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে কথা হলে পৌর নাগরিকরা দাবি করেন, শহরের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়তই ঘটছে একের পর এক এমন সব চুরির ঘটনা। দিন দিন চোরের উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায় জীবনযাপন অনেকটাই অনিরাপদ হয়ে পড়েছে নাগরিকদের।
অপরদিকে প্রশাসনের দাবি, তাদের টহল টিম বাড়ানো হয়েছে এবং চোরদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
বরগুনা জেলা নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন কামাল বলেন, উলঙ্গ হয়ে চুরি করতে যাওয়া এটা এক প্রকার মানসিক বিকৃতি। প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার কারণে দিন দিন চুরি বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রশাসন ইচ্ছে করলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চোর শনাক্ত করতে পারে।
বরগুনা সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ বলেন, শহরে কিছু ভাসমান চোর রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠালেও আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে আবার বেরিয়ে আসে। শহরে টহল আগের চেয়ে আরও বাড়ানো হয়েছে। দ্রুত চোরদের শনাক্ত করা হবে।
এসএন