দুই বছর ধরে ভেঙে পড়ে আছে সেতু
নড়াইল ও মাগুরা দুই জেলার সীমানায় গুরুত্বপূর্ণ একটি সেতু ভেঙে পড়ে আছে দুই বছর ধরে। ঝুঁকি নিয়ে এ সেতু দিয়ে প্রতিদিনই নিয়ে চলাচল করছে হাজারো মানুষ। কিন্তু সেতু সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো মাথাব্যাথা নেই। সেতুটির অবস্থান নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়ার ঝামারঘোপ এলাকায়।
স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা যায়,২০০১ সালে স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে ঝামারঘোপ খালের উপর নির্মিত হয় ১৩ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুটি।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়,গত কয়েক বছর ধরে সেতুর একপ্রান্তে অর্ধেক জায়গা জুড়ে ধ্বসে যেতে থাকে। ধীরে ধীরে পুরো জায়গায় গর্ত হয়ে ভেতরের রড বের হয়ে পড়ে। দুই বছর আগে একটি ট্রাক চলতে গিয়ে হেলে পড়ে সেতুটি। এরপর স্থানীয় লোকেরা গর্ত হওয়া স্থানে কয়েকটি কাঠের বড় তক্তা দিয়ে ইজিবাইক, ভ্যান আর কৃষিপণ্য ঘোড়ার গাড়িতে করে পারাপার করছেন।
এ ছাড়া নসিমন আর ভটভটি চললে কাঁপতে থাকে সেতুটি, তবুও বাধ্য হয়েই চলছে পারাপার। সেতুর তলদেশের অবস্থা আরও নাজুক। ইটের উপর দাঁড়িয়ে থাকা সেতুর নিচের দুটো গার্ডার এর একটি ধ্বসে একদিকে হেলে পড়েছে। পিলারের ইটগুলো খুলে সেখানে পাখির বাসা তৈরি হয়ে তাও খসে পড়ছে।
স্থানীয় কৃষক রহমত আলী জানান, এপাশের জমির ধান কেটে ঘোড়ারগাড়ি করে বাড়িতে নিতে হয়। প্রতিদিন ই ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটে। ভয় লাগে কখন জানি ব্রিজ ভেঙে নিচে পড়ে যাই,তবুও যেতে হয়।
খলিশাখালি গ্রামের বাসিন্দা আকবর মৃধা বলেন, এই ব্রিজ ভাঙা থাকার কারণে আমাদের মিঠাপুর হাটে যেতে ৮ কিলোমিটার পথ ঘুরতে হয়। আমাদের এই দুর্দশা দেখার কেউ নেই।
ইসলাম নামে এক যুবক বলেন, আমরা নিজেরাই চলাচলের জন্য কাঠ দিয়েছি, চেয়ারম্যান আর বড় নেতাদের জানানো হয়েছে, কেউ কোনো খেয়ালই করেন না এদিকে। আমাদের কোনো নেতা আছে বলে তো মনে হয় না।
ঝামারঘোপ গ্রামের খলিশাখালী প্রাইমারী স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র বিল্টু দাস বলে, আমরা ভয়ে ভয়ে ব্রিজ পার হয়ে স্কুলে যাই। অনেক সময় ভ্যান যেতে চায় না তাই হেঁটেও যেতে হয়।
লোহাগড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শিকদার হান্নান রুনু বলেন, সেতুটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। তারা সবাইকে জানিয়েছেন। আর সরকারি কাজ তো আস্তে-ধীরে চলে।
এ বিষয়ে এলজিইডি লোহাগড়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. জসীম সেতুর ঝুঁকির কথা স্বীকার করে বলেন, বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলাম কিন্ত চেয়ারম্যানসহ স্থানীয়দের চাহিদায় ধান মৌসুম পর্যন্ত রাখা হবে। প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে সময় লাগবে।
এসএন