বরগুনায় ২৪ স্পটে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ
দেশের উপকূলে যেকোনো সময় আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় মোখা। ফলে গত কয়েক বছরের একাধিক ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না পারা উপকূলের মানুষ আবারও ঝড়ের আভাসে আতঙ্কিত। অপরদিকে উপকূলীয় বরগুনার নদী রক্ষা বাঁধগুলো অরক্ষিত থাকায় ঝড়ে আবারও লোকালয় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
উপকূলবাসীর দাবি, বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ চললেও বেশ কিছু স্থান এখনো মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। আবার অনেক স্থানে বেড়িবাঁধ সংস্কার চলমান, যা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্ট প্লাবন মোকাবিলার সক্ষমতা রাখে না। যদিও বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দাবি, ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধে জিওব্যাগ দিয়ে সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু গত কয়েক বছর যাবত পায়রা নদীর ভাঙনের মুখে পড়েছে তালতলীর নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের জয়ালভাঙ্গা ও তেঁতুলবাড়ী এলাকা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বরগুনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ২২টি পোল্ডারে ৮০৫ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে বর্তমানে প্রায় ৩ কিলোমিটার বাঁধ নদীতে বিলীনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে বরগুনা সদরের ১০টি স্থানে (পায়রা ও বিষখালী) ১ হাজার ২৫ মিটার, আমতলীর ২টি স্থানে (পায়রা) ১২০ মিটার, তালতলীর ২টি স্থানে (পায়রা) ৩১০ মিটার, পাথরঘাটার ৪টি স্থানে ৫৮৫ মিটার (বিষখালী ও বলেশ্বর), বামনার ৪টি স্থানে ৩৪০ মিটার (বিষখালী) ও বেতাগীর ২টি স্থানে ১৯০ মিটার (বিষখালী)।
তালতলীর জয়ালভাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা আল-আমিন বলেন, এই এলাকাটি ভাঙন কবলিত। প্রতি বছর বেরিবাধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। তাই এখানে অন্তত ১০ হাজার মানুষ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
নিশানাবাড়িয়া ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ সংলগ্ন মোসা. রোজিনা বেগম বলেন, গতবার সিত্রাংয়ে জোয়ারের পানিতে আমার ঘরবাড়ি ডুবে যায়। ফলে রান্না করেও খেতে পারিনি। এখন আল্লাহ জানে আবার কি হয়।
এ ব্যাপারে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, জেলায় প্রায় ৩ কিলোমিটার বেরিবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় আছে। তবে বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে সংস্কার কাজ চলছে। ক্ষতিগ্রস্ত ওইসব এলাকাতে ঘূর্ণিঝড় চলাকালীন সময় প্রতিনিয়ত নজরদারি করার জন্য ছয় উপজেলায় ছয়টি টিম গঠন করা হয়েছে।
বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে মিটিং করে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নগদ অর্থ, টিন, চাল, শুকনো খাবারসহ বরগুনায় ৩টি মুজিব কেল্লা, ৬৪২টি আশ্রয় কেন্দ্রসহ প্রায় ১০ হাজার সেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে অর্ধশতাধিক মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়াও ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সব সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা প্রস্তুত রয়েছে।
এসআইএইচ