মা-বাবাকে মারধর করে মেয়েকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে অটোরিকশা থামিয়ে মা-বাবাকে মারধর করে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী ছাত্রীকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত হয়ে ওই পরীক্ষার্থী ও তার মা-বাবা ভূঞাপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মঙ্গলবার (৯ মে) দুপু্রে এলেঙ্গা-ভূঞাপু্র সড়কের উপজেলার কাগমারী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
জানা যায়, মঙ্গলবার ওই ছাত্রীর গণিত পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শেষে তার মা-বাবার সঙ্গে অটোরিকশাযোগো ভূঞাপুর থেকে বাড়ি ফিরছিল। তাদের সাথে পরীক্ষার্থীর স্বামী শাকিলও ছিলেন। বাড়ি ফেরার পথে কাগমারী বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছালে শাকিল সেখানে মেয়েটিকে অটোরিকশা থেকে নামতে বললে বাধা দেয় তার মা-বাবা। পরে শাকিলসহ তার মা-বাবা এসে তাদের মারধর করে।
এ ঘটনায় হামলার শিকার ছাত্রীর বাবা লিটন বলেন, বখাটে শাকিল, ওর বাবা শফিকুল ইসলাম ভুট্টো, ওর মা মালেকা বেগম এবং ওর চাচা সাজ্জাদ আমার স্ত্রী ও আমার ওপর হামলা করে এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়েটিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাকালে তিনজনকেই আহত করে। এক পর্যায়ে ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাদের উদ্ধার করে ভূঞাপুর উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেই সময় হামলা চালিয়ে ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন।
ওই ছাত্রী বলেন, আজকে আমার এসএসসি গণিত পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শেষে অটোরিকশাযোগে মা-বাবার সঙ্গে বাড়ি ফিরছিলাম। হামলাকারী শাকিলও একই অটোতে ছিল। কাগমারী এলাকায় পৌঁছালে অটোরিকশা থামিয়ে অতর্কিতভাবে হামলা চালায় সে এবং আমাকে ছিনিয়ে চেষ্টা করলে বাবা-মা বাঁধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর করে এবং আমার পরীক্ষার রেজিষ্ট্রেশন কার্ড, প্রবেশত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায় শাকিল।
এ ব্যাপারে ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম জানান, শাকিল নামে এক ছেলের সঙ্গে ওই পরীক্ষার্থীর বিয়ের পূর্বের দ্বন্দ্বের জেরে আজকের এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানতে পেরেছি এবং ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হলে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তবে এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে উপজেলার কাগমারীপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম ভুট্টোর ছেলে শাকিল নামে এক কিশোর ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ করে এবং বেশ কয়েকদিন আটকে রাখে। পরে পুলিশ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে তাকে ফিরিয়ে দেয়। কয়েক মাস গেলে ফের তাকে অপহরণের পর ভয়-ভীতি দেখিয়ে বিয়ে এবং ঘর-সংসার করে আসছিল। বিয়ের পর থেকে তাকে শারীরিক নির্যাতন করে শাকিলসহ তার মা-বাবা। নির্যাতনের বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি ছাত্রীর বাবা।
এসআইএইচ
