খুসিক নির্বাচন: যত প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন মেয়রপ্রার্থীরা
খুলনা সিটি করপোরেশন (খুসিক) নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই ব্যস্ততা বাড়ছে মেয়রপ্রার্থীদের। ভোটারদের দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি।
খুলনা নগরীকে 'পরিচ্ছন্ন ও তিলোত্তমা' হিসেবে গড়ে তুলতে চান আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী ও বর্তমান সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। চলমান সড়ক-ড্রেনেজ উন্নয়নের মেগাপ্রকল্প শেষ হলে আরও কী কী প্রয়োজন তা খুঁজে বের করবেন। এরপর ধাপে ধাপে বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তিনি।
তিনি বলেন, খুলনার সড়ক-ড্রেনেজ উন্নয়নে যেসব কাজ চলমান আছে সেগুলো শেষ করা আমার প্রধান দায়িত্ব। এই কাজ শেষ হলে উন্নয়নের ক্ষেত্রে আরও কী কী প্রয়োজন তা চিহ্নিত করে বাস্তবায়নে জন্য যা যা প্রয়োজন করা হবে।
খুলনাকে আধুনিক নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে প্রায় ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলছে। করোনা মহামারির কারণে উন্নয়ন কাজ কিছুটা পিছিয়ে পড়লেও বর্তমানে দ্রুত কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়ন কাজে নগরবাসীর চলাচলে কিছুটা দুর্ভোগ সৃষ্টি হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করে মেয়র বলেন, চলমান কাজ সম্পন্ন হলে খুলনা একটি আধুনিক শহরে পরিণত হবে। খুলনার দৃশ্যপট পরিবর্তন হয়ে যাবে। খুলনা পরিচ্ছন্ন ও তিলোত্তমা নগরী হবে। খুলনার উন্নয়নে নগরবাসীরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে। যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করলে খুলনা শহরকে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের লক্ষ্যে নেওয়া সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, নগরীর উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিপুল অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ সংক্রমণের কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও যথাসময়ে বিশাল এ কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। তবে চলমান উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত হলে খুলনা একটি আধুনিক সুযোগ সুবিধা সংবলিত স্বাস্থ্যকর নগরীতে পরিণত হবে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আসন্ন নির্বাচনে সবার দোয়া ও সমর্থন কামনা করেন তিনি।
জাতীয় পার্টি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, উন্নয়নে বিভিন্ন সংস্থার কাজে সমন্বয় না থাকায় উন্নয়ন কাজ জনভোগান্তিতে পরিণত হয়েছে। নির্বাচিত হলে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে প্রথমেই যানজটমুক্ত ও জলাবদ্ধতামুক্ত শহর গড়ে তুলব। খুলনায় সুপেয় পানির জন্য মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে কিন্তু তার সুফল নগরবাসী পায়নি। আমি একইসঙ্গে সুপেয় পানির সংকট নিরসন ও শিল্প নগরীর হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চেষ্টা করব।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী আব্দুল আউয়াল বলেন, বৃষ্টি হলে শহরজুড়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ড্রেনগুলো বন্ধ থাকায় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। বাসাবাড়ির নিচতলায় পানি উঠে যায়। নির্বাচিত হলে এই সমস্যা নিরসনের চেষ্টা করব। এ ছাড়া যুবসমাজ আজ মাদকে নিমজ্জিত। এই যুবকদের মাদকাসক্ত থেকে পরিত্রাণ দিতে নৈতিকতা উন্নয়নে চেষ্টা করব।
স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম শফিকুর রহমান মুশফিক বলেন, জনগণ একবারের জন্য মেয়র হিসেবে সুযোগ দিলে খুলনাকে পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়ে তুলব। সমন্বয়হীন অপরিকল্পিত উন্নয়ন কাজে রাস্তা-ঘাটে চলাচলে অবস্থা নেই। রাস্তা উঁচু করার ফলে কয়েক হাজার বাড়ি রাস্তার নিচে চলে গেছে। হাজার কোটি টাকা ব্যয় হলেও জলাবদ্ধতার ভোগান্তি রয়েই গেছে। নির্বাচিত হলে শতভাগ নাগরিক সেবা নিশ্চিত করব।
জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা ও সিটি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল গফ্ফার বিশ্বাস বলেন, পরিকল্পিতভাবে খুলনা নগরী গড়ে উঠছে না। বৃষ্টি হলে বাড়িঘরে পানি উঠে যায়। কোনো স্থানে ৩-৪ দিন পর্যন্ত বৃষ্টির পানি জমে থাকে। নদী ভরাট হচ্ছে, অপরিকল্পিত রাস্তাঘাট উঁচু হচ্ছে আর মানুষের বাড়িঘর রাস্তার নিচে চলে যাচ্ছে। রাস্তাঘাটে ময়লা আবর্জনা জমে দুর্গন্ধ ছড়ায়। দিনে-রাতে মশার কামড় সহ্য করতে হয়। অভিযোগ করারও জায়গা নেই। নির্বাচিত হলে নাগরিক সংকট নিরসনে কাজ করব।
এসজি