সিলেটে নগরজুড়ে পোস্টারিং বন্ধে ইসির পদক্ষেপ
প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচার শুরুর আইনি বিধান থাকলেও সিলেটে লঙ্ঘিত হচ্ছে নির্বাচনি আইন। প্রার্থীদের পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে নগর। আইনের তোয়াক্কা না করে প্রার্থীদের ঈদ শুভেচ্ছার পোস্টারে ছেয়ে গেছে সিসিকের সবকটি এলাকা। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সব ধরনের পোস্টার নিজ খরচে সরিয়ে নিতে নির্দেশনা দিলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। ফলে ইসিই নেমেছে কাজে। শনিবার (৬ মে) নগরীর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অভিযান চালিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠিত হবে সিলেট সিটি কপোরেশন নির্বাচন। তবে মাসখানেক আগে থেকেই মহানগর ছেয়ে গেছে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোস্টার ও ফেস্টুনে। আর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সম্ভাব্য প্রার্থীদের পোস্টার-তোরণ-ফেস্টুনে ঢাকা পড়েছে মহানগরের ৪২টি ওয়ার্ডের অধিকাংশ এলাকা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, বন্দরবাজার, সুরমা মার্কেট, লামাবাজার, তালতলা, আম্বরখানা, টিলাগড়, শিবগঞ্জ, নাইওরপুল, উপশহর, শাহী ঈদগাহ, কদমতলী, রিকাবিবাজারসহ ৪২টি ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক থেকে শুরু করে পাড়ামহল্লায় সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের সমর্থনে পোস্টার, বিলবোর্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন সাঁটানো হয়েছে। বিভিন্ন সিএনজি অটোরিকশা, রিকশা ও যানবাহনের পেছনেও পোস্টার সাঁটিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
এর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী এবং জাতীয় পার্টির দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী নজরুল ইসলামের সমর্থনে তোরণের আধিক্য দেখা গেছে বেশি। এ ছাড়া ইসলামী ঐক্যজোট বাংলাদেশের মনোনীত মেয়র প্রার্থী মাহমুদুল হাসানের সমর্থনেও সাঁটানো হয়েছে পোস্টার। তবে নির্বাচন নিয়ে রহস্যে থাকা মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচনী প্রচারণায় না থাকলেও তার ঈদ শুভেচ্ছা জানানো পোস্টার, তোরণ ও ফেস্টুন রয়েছে মহানগরের বিভিন্ন স্থানে।
এ অবস্থায় গত মাসে সিলেট সিটির নির্বাচনী এলাকা থেকে সব ধরনের প্রচারণাসামগ্রী অপসারণের নির্দেশ দেয় ইসি। সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই ইসি এক নির্দেশনায় নগর থেকে সব ধরনের প্রচারসামগ্রী অপসারণ করতে বলা হয়। তবে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মানার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। অপসারণ তো দূরের কথা- উল্টো লাগানো হচ্ছে নতুন পোস্টার-ফেস্টুন। নির্বাচনের আদেশ বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান সিটি করপোরেশনও এ ব্যাপারে উদাসীন। পরে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হয়েছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বদরুল হকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি কল রিসিভ করেননি। তবে সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, মহানগর থেকে পোস্টার, তোরণ ও ফেস্টুন অপসারণের নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে চিঠিও এসেছে। এখনো এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ২৩ মে। বাছাই তারিখ ২৫ মে ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১ জুন।
এ বিষয়ে সিলেট আঞ্চলিক কার্যালয়ের নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার ফয়সল কাদের বলেন, এ ধরনের প্রচার স্পষ্টতই নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল। প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো মাধ্যমেই প্রচারণা চালানোর সুযোগ নেই।
এসএন