১৮ খুঁটির বাঁশের সাঁকো, ঝুঁকি নিয়ে এলাকাবাসীর পারাপার
১০ ফুট পর পর ২টি করে বাঁশের খুঁটি। এভাবে ১৮টি বাঁশের খুঁটি দিয়ে বানানো হয়েছে একটি সাঁকো। নড়াইল সদর উপজেলার সরশপুরের মরা চিত্রা খালের উপর এলাকাবাসীর বানানো এই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে হাজার-হাজার মানুষ।
সরেজমিন দেখা যায়, মাগুরার শালিখা উপজেলার গড়েরহাট মোড়ে কাজলা নদী থেকে মরা চিত্রা নামের একটি খালের উৎপত্তি হয়েছে। পরে সেটি নড়াইল সদর উপজেলার মাইজপাড়া ও শাহাবাদ ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চণ্ডীবরপুর ইউনিয়নের রতডাঙ্গা ত্রিমোহনীতে গিয়ে চিত্রা নদীতে মিশেছে। পথিমধ্যে শাহাবাদ ইউনিয়নের সরশপুরে অবস্থিত এই খালের উপর রয়েছে একটি বাঁশের সাঁকো।
ওই খালের দুই পাড়ে রয়েছে মাইজপাড়া ইউনিয়নের ৬টি এবং শাহাবাদ ইউনিয়নের ৮টি গ্রাম। রয়েছে মাইজপাড়া, সরশপুর, শাহাবাদ ও ধোন্দার মোড়ে ৪টি হাটবাজার, একটি কলেজ, ৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
এদিকে এলাকার হাজার হাজার মানুষের পারাপারের জন্য একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকোটি। বর্ষা এলে বাড়ে দুর্ভোগ। ঝড়-বৃষ্টিতে বিপজ্জনক হয়ে ওঠে সাঁকোটি। পা পিছলে এখন পর্যন্ত অনেকেই পড়েছেন খালে। চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েদের। কৃষিপণ্য আনা-নেওয়ায়ও পোহাতে হয় সীমাহীন দুর্ভোগ। বছরের পর বছর একটি ব্রিজের অপেক্ষা এলাকবাসীর।
সাঁকোর উত্তর পাড়ের চরবিলা গ্রামের ইজিবাইকচালক বাসার জানান, প্রতিদিন হাজার-হাজার লোক পারাপার হয়। এই সাঁকোর কারণে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয়। সকাল-বিকাল ঝুঁকি নিয়ে এই সাঁকো পার হয়ে স্কুলে যাওয়া-আসা করে আমাদের ছেলে-মেয়েরা। বৃষ্টি হলে এই সাঁকো পার হতে গেলে অনেক সময় তারা পড়ে যায়। ওপার থেকে এপার কোনো পণ্য নিয়ে আসতে গেলে ৪-৫ কিলোমিটার ঘুরে আসতে হয়৷
নিয়মিত কাঁধে করে সাইকেল নিয়ে সাঁকো পার হওয়া মো. মনির বলেন, প্রতিদিন তার ৪-৫ বার কষ্ট করে সাইকেল কাঁধে করে সাঁকো পার হতে হয়। যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ । অতি দ্রুত এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি তার৷
ওই এলাকার শিক্ষার্থী মেহেদি মন্ডলসহ আরো কয়েকজন বলেন, ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্য দিয়ে তারা আসা-যাওয়া করে। যখন-তখন ভেঙে যায়। তখন দুর্ভোগ আরো বাড়ে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের সাঁকো পার হতে হয়। এখানে একটা ব্রিজ নির্মাণ হলে তাদের এই সীমাহীন কষ্ট দূর হবে৷
এদিকে অতি দ্রুত এই স্থানে সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে নড়াইল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ কুমার কুন্ডু বলেন, সরসপুর ও চরবিলার মাঝে ১০০ মিটারের একটি খাল রয়েছে৷ সেটি পরিদর্শন করা হয়েছে৷ ইতিমধ্যে সেতু নির্মাণের টেন্ডারও করা হয়েছে। এক মাসের মধ্যে কাজ শুরু হবে।
এসআইএইচ