সওজের কোয়ার্টারে মায়ের খণ্ডিত মরদেহ, ছেলে লাপাত্তা
লক্ষ্মীপুরে সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) স্টাফ কোয়ার্টারের একটি তালাবদ্ধ ঘর থেকে মমতাজ বেগম (৪৭) নামে এক নারীর খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) দিবাগত রাত ২টার দিকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পারিবারিক বিরোধ ও ছোট ছেলের সঙ্গে মনমালিন্য থেকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে ছোট ছেলে সাইফুল ইসলাম রকি পলাতক রয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ এসব কথা বলেন।
নিহত মমতাজ বেগম লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নের গোরারবাগ এলাকার মৃত আব্দুল মতিনের স্ত্রী। তার স্বামী সড়ক ও জনপদ বিভাগের চালক পদে চাকরি করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত এক বছর থেকে লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের স্টাফ কোয়ার্টারের এই বাসায় দুই ছেলে শরিফুল ইসলাম বাপ্পি ও ছোট ছেলে সাইফুল ইসলাম রকিকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন মমতাজ বেগম। ঈদের ছুটিতে ছোট ছেলে রকিকে বাসায় রেখে বড় ছেলে বাপ্পিকে নিয়ে নিজ গ্রামের বারি সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নের গোরারবাগ এলাকায় যান মমতাজ বেগম। সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাপ্পি তার মাকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় করে সওজের কোয়ার্টারের বাসায় পাঠান। পরে রাত ৯টার দিকে তিনি বাসায় ফিরে দেখে ঘরে তালা ঝুলছে। এসময় ফোনেও তার মাকে না পেয়ে তিনি আশপাশের লোকজনকে খবর দেয়। এসময় জানালার ফাঁক দিয়ে ঘরের মেঝেতে রক্ত দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয়দের সহায়তায় বাসার পেছনের দরজা খুলে ওই নারীর খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ঘটনার পর থেকেই নিহতের ছোট ছেলে সাইফুল ইসলাম রকি লাপাত্তা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। রকি লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের ডিগ্রির ছাত্র।
সড়ক ও জনপদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নিহত মমতাজের স্বামী আব্দুল মতিন সড়ক ও জনপদ বিভাগের গাড়ি চালক পদে চাকরি করতেন। প্রায় ১৮ বছর আগে মারা যান তিনি। এরপর বেশ কয়েক বছর মমতাজ বেগম ওই দপ্তরে দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে পিয়নের কাজ করতেন। গত দুই-তিন বছর থেকে মমতাজের বড় ছেলে বাপ্পী দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে সড়ক ও জনপদ বিভাগের পিয়নের চাকরি নেন। এর সুবাধে গত এক বছর ধরে দুই ছেলেকে নিয়ে স্টাফ কোয়ার্টারের ওই বাসায় বসবাস করে আসছিলেন মমতাজ বেগম।
জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, এ হত্যাকাণ্ডটি একটি বীভৎস হত্যাকাণ্ড। ছোট ছেলে রকির সঙ্গে মায়ের মনোমালিন্য থেকে এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটতে পারে। ঘটনার পর থেকেই রকি নিখোঁজ রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ তদন্ত করছে। রকিকে খুঁজে পেলে এ নৃশংস হত্যার রহস্য উদঘাটন হবে। তদন্তের স্বার্থে বড় ছেলে বাপ্পীকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
এসজি