যশোরসহ দক্ষিণাঞ্চলে চলছে তীব্র তাপদাহ
যশোরসহ দক্ষিণাঞ্চলে চলছে তীব্র তাপদাহ। গত কয়েকদিন ধরে চলছে মৃদু তাপদাহ। এক সপ্তাহের তাপমাত্রার রেকর্ড তেমনই জানান দিচ্ছে। কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা বেশি থাকায় জনজীবনে এর প্রভাব পড়েছে। রমজানের মধ্যে তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় মানুষ অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। গরমের কারণে প্রাণিকূলেও এখন ত্রাহি অবস্থা।
যশোর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটি নিয়ন্ত্রিত আবহাওয়া অফিস থেকে পাওয়া এক সপ্তাহের তাপমাত্রার রেকর্ড অনুযায়ী জানা গেছে, আজ (৮ এপ্রিল) যশোরের তাপমাত্রা ছিল ৩৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাজ করতে গিয়ে হাঁসফাঁস অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। প্রয়োজনীয় কাজে ঘরের বাইরে বের হয়ে মানুষ ছায়ার খোঁজে মরিয়া হয়ে উঠছেন। বর্ষাকাল না হলেও অনেকেই ছাতা নিয়ে বাইরে বের হচ্ছেন। ছাতা দিয়ে গরমের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করার প্রাণান্তকর চেষ্টা তাদের। গরমের মধ্যে জ্বর, ঠান্ডা, কাশির প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া ৬ এপ্রিল তাপমাত্রা ছিল ৩৭.২, ৫ এপ্রিল ৩৫.৭, ৪ এপ্রিল ৩৬.২, ৩ এপ্রিল ৩৫.২, ২ এপ্রিল ৩৩.৪ ও ১ এপ্রিল তাপমাত্রা ছিল ২৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তাপমাত্রা সামনে আরও বৃদ্ধি পাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়া অফিস তাপমাত্রা যাই রেকর্ড করুক না কেন, যেন অনুভূত হচ্ছে অনেক বেশি।
আবহাওয়া অফিস বলছে, দুই-চারদিনের মধ্যে বৃষ্টির দেখা নাও মিলতে পারে।
এদিকে দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় প্রচণ্ড গরমের সঙ্গে যশোরের বেশিরভাগ এলাকায় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। শহরতলি ও গ্রাম পর্যায়ে বেশিরভাগ বাড়ির টিউবওয়েলে পানি উঠছে না অনেকদিন ধরে। ফলে গোসল, থালাবাসন ধোয়া, কাপড় পরিষ্কার করা দুরুহ হয়ে পড়েছে। এখন সাবমারসিবলই ভরসা। পানি সংকটে থাকা মানুষ প্রতিবেশীর সাবমারসিবলের উপর নির্ভর করে পানির প্রয়োজন মেটাচ্ছেন। আবার অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে পানি এনে পান করছেন। মেটাচ্ছেন অন্যান্য চাহিদাও। আর একটু সামর্থ্যবানরা টিউবওয়েলের মোটর খুলে পাঁচ-ছয় ফুট গভীরে পুনঃস্থাপন করে পানির উত্তোলনের ব্যবস্থা করছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রচণ্ড গরমের মধ্যে বাড়ছে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি। মানুষের শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। সেই তুলনায় ঘাম বের হচ্ছে না। এ কারণে হিটস্ট্রোকের আশঙ্কা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে মানুষের মৃত্যুও হতে পারে।
এ প্রসঙ্গে যশোর জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের মেডিসিন ও রক্ত পরিসঞ্চালন বিশেষজ্ঞ সেলিম রেজা বলেন, যে তাপমাত্রা চলছে তাতে রোদের মধ্যে বেশিক্ষণ থাকলে বা কাজ করলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। কারো শরীরে একটানা দুই-তিন ঘণ্টা ১০৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকলে হতে পারে হিটস্ট্রোক। আবার সারাদিন পানি পান না করলে হিটস্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অপরদিকে গরমজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। এসব রোগীর চাপ বাড়ছে হাসপাতালে। বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যাও। গত কয়েকদিন যশোর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা এ ধরনের রোগীর সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন।
এসআইএইচ