শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

‘এরা হাওরের হাঙ্গর, এদের থেকে আমাদের রক্ষা করুন’

হাওরাঞ্চল শাল্লা উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নের ইয়ারাবাদ গ্রামের কৃষক মাফিক মিয়া। পিআইসি বাঁধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ইউএনও স্যারের সাথে আমার কথা হয়েছিল, এক লাখ ৩০ হাজার টাকা দিলে তিনি আমাকে পিআইসি দেবেন। স্যারের কথামতো নিজের হাতে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়েছি । আমার প্রতিপক্ষ স্যারকে তিন লাখ টাকা অফার করলে স্যার আমাকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ডেকে এনে বলেন পিআইসিটা নিয়ে অনেক বাড়াবাড়ি চলছে। আপনারা দুই পক্ষ মিলে যান। আমি অস্বীকৃতি জানালে তিনি বলেন-আমাকে মোট তিন লাখ টাকা দেন। যা হয় হবে, আমি আপনাকে পিআইসি দিয়ে দিব। আমি বললাম স্যার তিন লাখ টাকা দিতে পারব না, আমি আপনাকে দুই লাখ টাকা দিব। তখন তিনি বলেন আমার বুঝার আছে । পরে তিনি তিন লাখ টাকার বিনিময়ে আমার প্রতিপক্ষকে পিআইসি বাধঁটি দিয়ে দেন এবং আমার টাকাগুলোও ফেরত দেন।’

অপর কৃষক সোলেমান মিয়ার দাবি-‘বানের জল যতো না ভয়ংকর, তার চেয়ে বেশি ভয়ংকর ইউএনও এবং এসও। এরা হাওরের হাঙ্গর। এদের থেকে আমাদের রক্ষা করুন।’

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার পিআইসি বাঁধের দুর্নীতি বিষয়ে একজন ভোক্তভুগী কৃষকের এমন বক্তব্য কখনোই আশাব্যঞ্জক নয়। এই অবস্থায় কৃষকের সোনালী ফসল তলিয়ে যায় অকাল বন্যায়। ফসল তলিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে আগামীর স্বপ্নগুলোও ফিকে হয়ে যায় কৃষকদের। উপজেলার রক্ষা কর্তা এবং এসও’র নেতেৃত্বে বারবার এমনটি হচ্ছে-এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীসহ স্থানীয় কৃষকদের।

ফসলের মাঠে যখন সোনালী রঙ কৃষকের মুখে তখন আনন্দের ঝিলিক। সেই থেকে আগামীর স্বপ্ন রচনা। ছেলে/মেয়ের বিয়ে, সন্তানের শিক্ষা খরচ/স্কুল ভর্তি, চিকিৎসা, বিদেশ যাত্রাসহ সবকিছু নির্ভর করে এই বোরো ফলনের উপর। ফলে বোরো ধানের উপর নির্ভরশীল সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চল। এখানে বোরো ফসলই কৃষকদের জীবন-জীবিকার একমাত্র প্রধান উৎস। ফলে নিজেদের সর্বস্ব ঢেলে দিয়ে বোরো ফসল উঠার অপেক্ষায় উন্মুখ থাকে কৃষকরা কিন্তু বাঁধ সাধে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। অকাল বন্যার কবলে তলিয়ে যায় কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল অন্যান্য অঞ্চলের মতো প্রতিবারই হানা দেয় হাওরাঞ্চল শাল্লায়। এ জন্য প্রতি বছর ফসল রক্ষায় সহায়ক বাঁধ নির্মাণে আর্থিক বরাদ্ধ আসে যথারীতি। তবে এতে লাভবান হয় দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি কর্মকর্তা থেকে শুরু করে দুর্নীতিবাজ কতিপয় মানুষ। কারণ সামান্য বৃষ্টিতেই ভেঙ্গে যায় অপরিকল্পিত বাঁধগুলো। তখন ফের সংস্কারের নামে আরও কিছু বরাদ্ধ লুটেপুটে নেয় দুর্নীতিবাজরা। এতে লাভ হয় না হাড়ভাঙ্গা খাটুনীর কৃষকদের। ফলে উৎবেগ, উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে সময় পার করছেন লাখ লাখ কৃষকরা।

প্রতি বছর শাল্লার হাওরে বাঁধ নির্মাণের নামে টাকা লোপাটের ঘটনা নতুন নয়। একই ঘটনা চলতি বছরেও ঘটেছে। অভিযোগ রয়েছে, খোদ উপজেলা ইউএনও আবু তালেবের নেতৃত্বেই ঘটছে এমন লোটপাটের ঘটনা। সাথে যুক্ত আছেন উপজেলা পাউবোর উপ সহকারী প্রকৌশলী (এসও)আব্দুল কাইয়ুম।

একাধিক সূত্রে জানা যায়, শাল্লায় মোট ফসল রক্ষা বাঁধের সংখ্যা ১৯৭টি। এর মধ্যে ঝঁকিপূর্ণ বাঁধের সংখ্যা ৫টি। তবে এমন সংবাদ যতটা স্বস্থির ঠিক ততটাই বেদনার। কারণ বাঁধগুলো ভারি বৃষ্টিতে ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে ৮০ ভাগ। প্রতিটি বাঁধে প্রকৃত কৃষক রাখার শর্ত থাকলেও স্থান পেয়েছেন অকৃষক এবং দালাল শ্রেণির লোকজনরা। আর সবকিছুই সম্ভব হয়েছে এসও আব্দুল কাইয়ুম এবং ইউএনও আবু তালেবের সিন্ডিকেটের কারণে। এমন অভিযোগ স্থানীয় কৃষকদের। অভিযোগকারী কৃষকদের দাবি, টাকার বিনিময়ে এমন অপকর্ম করে কৃষকের স্বপ্ন ফিকে করে দিচ্ছেন এসও আব্দুল কাইয়ুম এবং ইউএনও আবু তালেব।

কৃষকদের দাবি, প্রতিটা পিআইসি বাধঁ দেওয়া হয়েছে ঘুষের বিনিময়ে। ফলে বাদ পড়েছেন প্রকৃত কৃষক। এর ফলে শর্ত ভঙ্গ হয়েছে নীতিমালার। অকৃষককে সভাপতি করেই অক্ষত এবং অপ্রয়োজনীয় বাধেঁ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে লাখ লাখ টাকা। আবার একই পিআইসির জন্য দুটি পক্ষের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ারও অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এতে কোন পক্ষকে পিআইসি দেবে, এটা নিয়ে বিপাকেও পড়েন তারা। সমস্যা সমাধানে অনেক পিআইসির দুইটি পক্ষকে মিলিয়ে একটা করে দেওয়া হয়েছে। অনেকেই ঘুষের টাকার পরিমাণ বেশি হওয়ার ভয়ে রাজি না হওয়ায় তাদের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার ১৬৯ নম্বর পিআইসি। এই বাঁধের জন্য দুটি কমিটিকে লিখিত ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এই সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে। পিআইসি সভাপতিদের সঙ্গে মৌখিক চুক্তির মাধ্যমে অধিকাংশ বাধেঁ দুই থেকে তিন গুণ টাকা বরাদ্দ বেশি দেওয়া হয়েছে এবং প্রতিটা বাধঁ থেকে ঘুষ নেওয়া হয়েছে দুই থেকে তিন লাখ টাকা।

এদিকে সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করতে নেওয়া হয়েছে এক অভিনব কৌশল। কয়েক গুণ টাকা বরাদ্দ বেশি দিয়ে তাদেরকে দেওয়া হয়েছে কয়েকটা পিআইসি বাধেঁর কাজ। গত বছর অকাল বন্যায় বাধঁ তলিয়ে যায় এবং পানি কমে যাওয়ায় কিছু ক্লোজার ছাড়া বাধঁগুলো অক্ষত থেকে যায়। এর আগে প্রতিটি বাধেঁ লাখ লাখ টাকার মাটি ফেলা হয়েছে। যার ফলে বাধঁগুলোর অবস্থা মোটামুটি ভাল। তারপরও ওই বাঁধগুলোর জন্য বরাদ্দ বাড়ানো হয়। সংশ্লিষ্ট কৃষকসহ অভিজ্ঞরা বলছেন, যেখানে দুই থেকে তিন লাখ টাকার কাজ করলেই বাধঁগুলোর কাজ সমপন্ন করা যেত সেখানে প্রতিটা বাধেঁ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা।

বিশিষ্টজনদের অভিমত, প্রতি বছর পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে ভেসে আসা পলি মাটি এবং পিআইসি বাধেঁর মাটি পড়ে নদীগুলো কাদায় পরিণত হচ্ছে । অদূর ভবিষ্যতে নদী বলতে কিছু থাকবে না। নদীগুলো খনন না করলে পিআইসির বাধঁ দিয়েও ফসল রক্ষা করা যাবে না। সুতরাং ভরাট নদীগুলো খনন করাই এখন ফসল রক্ষার চিরস্থায়ী সমাধান। নদী খননের অপশন পানি উন্নয়ন বোর্ডের থাকলেও নদী খনন না করে অক্ষত বাধঁগুলোতে বরাদ্দের নামে কোটি কোটি দুর্নীতি হয়েছে।

এ বিষয়ে ফয়জল্লাপুর গ্রামের সাবেক মেম্বার লালচাঁদ মিয়া, চানঁ মিয়া চৌধুরী, মুখন্দ দাস, চেচরণ দাস, নূর মিয়া ও জিয়াউল হকসহ অনেকের সাথে কথা হলে তারা বলেন, ১৪ নম্বর বাধেঁ যে ২৪৮০৩৬৬ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এটা সম্পূর্ণ দুর্নীতি। এসও সাহেবকে দুই লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে তারা পিআইসি এনেছে। এখানে ৮৫ মিটার জায়গা লেখা থাকলেও সর্বোচ্চ জায়গা হবে ৫০ মিটার এবং কাজ করা হয়েছে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার।

খালিয়াজুরী উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের প্রাক্তন মেম্বার জগন্নাথ দাস বলেন, খালিয়াজুরীর ১৩টা বাধঁই আমার নিজের চোখে দেখা এবং দুই-তিনটা ভাঙ্গা ছাড়া সব কয়টি বাধঁই অক্ষত, চার আনা কাজই করতে হচ্ছে না। সাধারণ কিছু মাটি দিয়ে শুধু ড্রেসিং আর স্লপ দিচ্ছে। প্রতিটা বাধেঁ সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা খরচ হতে পারে বলে জানান তিনি । এ ছাড়াও আরও অসংখ্য বাধঁ রয়েছে, যা দুই থেকে তিন লাখ টাকার কাজে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা।

৪৮ নম্বর পিআইসির সদস্য সচিব, মৌরাপুর গ্রামের কৃষ্ণ কান্ত দাস চাপা ক্ষোভ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা কোথায়? এদেশের মানুষকে লাখ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে পিআইসি আনতে হয়। পাঁচ বছর যাবত এসও অফিসে যে দুর্নীতি হচ্ছে তা দেখেননি কেন?’

২১ নম্বর পিআইসির সদস্য সচিব মৌরাপুর গ্রামের সুকেশ চন্দ্র দাস বলেন, এসও সাহেবকে দেড় লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে পিআইসি এনেছি।

৩৮ নম্বর পিআইসির সভাপতি বাহাড়া গ্রামের মেঘলাল দাস বলেন, আমরা অনেক লসে আছি। কারণ দুটি পক্ষকে মিলাইয়া পিআইসি দেওয়া হয়েছে। এতে ঘুষের পরিমাণ অত্যধিক হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

৩৭ নম্বর পিআইসির সভাপতি হরিনগর গ্রামের স্বনন্দ কুমার দাস বলেন, পিআইসি আনার আগেই অ্যাডভান্স ঘুষ দিতে হয় আর এটা কেউ বলবে না। কারণ আগেই সবাই হলফ করে আসে ঘুষের কথা প্রকাশ না করার জন্য ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হবিবপুর ইউনিয়নের এক পিআইসি সভাপতি বলেন, আমি এসও সাহেবকে দুই লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছি। ইটনা উপজেলার, ধনপুর ইউনিয়নের এক পিআইসি সভাপতি বলেন, আমি এসও সাহেবকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে পিআইসি এনেছি। এ সংক্রান্ত সকল ভিডিও ফুটেজ প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে।

এ ব্যাপারে ইউএনও আবু তালেবের সঙ্গে প্রতিটি পিআইসি থেকে ঘুষ নেওয়া এবং বরাদ্দ বেশী দেওয়া সম্পর্কে কথা হলে তিনি বলেন, কোন পিআইসিতে অতিরিক্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, কার কাছ থেকে এবং কে টাকা নিয়েছে এসব সুনির্দিষ্ট করে লিখিত অভিযোগ দেন। আমি উপজেলা টেকনিক্যাল কমিটি দ্বারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।

১৪ নম্বর পিআইসির কথা উল্লেখ করলে তিনি বলেন, আমি এটা তদন্ত করে দেখছি ।

১০৭ নম্বর পিআইসি দেওয়ার জন্য মাফিক মিয়ার কাছ থেকে আপনি ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন-এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাফিক মিয়া কে আমি চিনি না।

এসও আব্দুল কাইয়ুমের মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এসআইএইচ

Header Ad
Header Ad

পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  

ব্যবসায়ী আবুল বাসার ওরফে মিন্টু। ছবিঃ সংগৃহীত

রাজশাহী নগরীর পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো একটি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকালে নগরীর লালন শাহ মুক্তমঞ্চ সংলগ্ন এলাকার কাশবন থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণা, হত্যা করে কাশবনে ফেলে দেওয়া হয়েছে লাশটি।

নিহত ব্যক্তির নাম আবুল বাসার ওরফে মিন্টু (৩৫)। পেশায় ব্যবসায়ী মিন্টু নগরীর মির্জাপুর পূর্বপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। বিনোদপুর বাজারে তার ইলেকট্রিক ব্যবসার দোকান আছে।

নগরীর রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম জানান, কাশবনে ঘুরতে আসা কয়েকজন লাশটি দেখে পুলিশে খবর দেয়। ঘুরতে আসা অনেকে লাশের ছবিটি সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে শেয়ার করে। জানাজানির পর নিহতের পরিবার ঘটনাস্থলে এসে লাশটি শনাক্ত করে।

আশরাফুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে মিন্টুর খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। কাশবনে তার মুখ পলিথিন দিয়ে ঢাকা ছিল। পলিথিনের ওপর স্কচটেপ প্যাঁচানো ছিল।

ওসি আরও বলেন, ‘আলামত দেখে মনে হয়েছে এটি হত্যাকাণ্ড। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে হত্যা মামলা হবে।’

Header Ad
Header Ad

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত

ওমানের মাসকটে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাস্কাটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারত- বাংলাদেশের মধ্যকার উক্ত বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

তিনি বলেন, মাস্কাটে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার সবাই জানে কোন দেশ ও তার কী ধরনের কর্মকাণ্ড সার্ককে কোণঠাসা করে রেখেছে। তৌহিদ হোসেনকে জয়শঙ্কর এ কথাও বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের স্বাভাবিকীকরণ করাটা বাংলাদেশের উচিত নয়।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের কোনো কোনো উপদেষ্টার কিছু কিছু মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ভারত এসব মন্তব্য নজরে রেখেছে। ওই ধরনের মন্তব্য ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজকর্মে তার প্রভাব–প্রতিক্রিয়ার বিষয়ও ভারতের গোচরে রয়েছে।

তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য অবশ্যই সহায়ক নয়। এর প্রতিক্রিয়া কী, তা তাদেরই ভেবে দেখা দরকার।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালকদের বৈঠক সদ্য শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, বাংলাদেশে ৫ আগস্টের পালাবদলের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত, মিডিয়ার সৃষ্টি।

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে জয়সোয়াল বলেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কী হয়েছে, সে বিষয়ে সবাই অবগত। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বারবার প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্রকেও এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী

ছবিঃ সংগৃহীত

যানজটে আটকে থাকা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের গাড়ি বহরকে সাইড করে দিতে গিয়ে বাস চাপায় নিহত হয়েছেন জসিম উদ্দিন (৫৩) নামে জামায়াতের একজন কর্মী।

নিহত জসিম উদ্দিন উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের সৈয়দপুর পশ্চিম পাড়ার মৃত আলী আশ্রাফ মোল্লার ছেলে। তার স্ত্রী ও শিশুসহ তিন ছেলে সন্তান রয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লালমাই উপজেলার সৈয়দপুর এলাকার ওয়ালটন শো-রুমের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা মারুপ সিরাজী বলেন, লক্ষীপুর যাওয়ার পথে জামায়াত আমিরের বহরের ৪টি গাড়ি বাগমারা উত্তরবাজারে যানজটে আটকা পড়লে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। হঠাৎ তিশা পরিবহনের ঢাকামুখী একটি দ্রুতগতির বাস ধাক্কা দিলে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দীনের মাথা থেতলে যায়। রক্তক্ষরণ হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

বাগমারা বাজারের ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম মুন্না বলেন, কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হলেও বাগমারা বাজার অংশে অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে দুই লেন করা হয়েছে।সে কারণে ২৪ ঘণ্টাই সড়কের এই অংশে যানজট লেগে থাকে। যানজট নিরসনে পুলিশ দায়িত্ব পালন করলে আজ হয়তো এমন মৃত্যু হতো না।

লালমাই উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ইমাম হোসেন বলেন, আমিরে জামায়াত লক্ষীপুর যাওয়ার পথে বাগমারা উত্তর বাজার বালুর মাঠে পথসভা করেন। পথসভাস্থলে পৌঁছার কিছুক্ষণ আগে তাঁর গাড়ি বহর যানজটে আটকা পড়ে।

তখন আমিসহ সংগঠনের ১৫/২০ জন কর্মী ট্রাফিকের দায়িত্ব শুরু করি। আমরা আমিরে জামায়াতকে নিয়ে পথসভায় চলে যাওয়ার পর জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দিন বাস চাপায় মারা যান।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, বাগমারা উত্তরবাজারে বাস চাপায় জসিম উদ্দিন নামের একজন মারা গেছেন। মরদেহ নিহতের বাড়িতে রয়েছে। খবর পেয়েই নিহতের বাড়িতে গিয়েছি।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  
সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত
জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  
একুশে টিভির জিডি, কর্মচারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জামায়াত  
আফ্রিকার রানের চাপে বড় ব্যবধানে হারলো আফগানিস্তান
আগামীকাল দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে
অপারেশন ডেভিল হান্ট: ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ৪৬১
খিলগাঁওয়ে স-মিলে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পশ্চিম তীরে নতুন করে হামলার নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
মেসির অটোগ্রাফ চেয়ে শাস্তি পেলেন রেফারি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে হয়নি দুই বাংলার মিলন মেলা
মাতৃভাষার গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে যা বললেন ড. ইউনূস
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: তিন দিন পর মামলা, আতঙ্কে যাত্রীরা
বিপ্লবের আত্মত্যাগ উন্নত বাংলাদেশের পথে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে : পররাষ্ট্রসচিব
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে আওয়ামী সরকারের পতনের কারণ উদঘাটন
চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ডে মাসে ৪০ কোটি টাকা বেতন পাবেন হামজা চৌধুরী
পবিপ্রবিতে আবাসিক হলগুলোর নাম পরিবর্তন, মুছে ফেলা হলো শেখ পরিবারের নাম
ইসরায়েলের তেল আবিবে তিনটি বাসে বিস্ফোরণ