খনন করে তীরেই উঠানো হচ্ছে নদীর তলার মাটি
নেত্রকোনার জেলার মদনে গভীরতা বাড়াতে খননের নামে নদী পুনরায় ভরাট হয়ে যাচ্ছে। চাওয়াই নদী খননের পর মাটি নদীর পাড়েই ফেলা হচ্ছে। আসছে বর্ষার সময় ওই মাটি পানির স্রোতে ভেসে আবারও নদী তলায় এসে নদী ভরাট হয়ে যাবে। এতে খননের নামে সরকারের যে বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ হচ্ছে তা কাজে আসবে না। নদী আবার ভরাট হয়ে নাব্যতা হারাবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
জেলা পাউবো সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে মেসার্স বেলাল কন্সট্রাকশন নামের কুড়িগ্রামের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী চাওয়াই নদীর ৪ কিঃমিঃ খননের কাজ বাস্তবায়ন করছে। এই খনন কাজে ১ কোটি ৮১ লাখ ৪৪ হাজার ৭৮৮ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। নদী খননের দরপত্রে ১৮.০০ থেকে ২৫.১৯ ফুট প্রস্থে অবস্থাভেদে গভীরতা ১০ থেকে ১২ ফুট এবং খননের জায়গা থেকে ৩৮ থেকে ৪০ ফুট দূরত্বে মাটি ফেলার কথা রয়েছে। কিন্তু খননের মাটি নদীর পাড়েই রাখা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদী খননের প্রায় এক তৃতীয়াংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে যার মাটি দুই পাড়ে ফেলে রাখা হয়েছে। খনন করে পাড়ে রাখা মাটি বৃষ্টি হওয়ার আগেই ধ্বসে পড়ছে। নদীর তলার মাটি তলাতেই গড়িয়ে পড়ছে। সঠিক স্থানে না রাখার ফলে নদীর তীরের মাটি তীর থেকে নীচে পড়ে যাচ্ছে। ফলে ধীরগতিতে হলেও নদী পুনরায় ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এতে নদী খননে সরকারের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোবিন্দশ্রী গ্রামের অনেকেই বলেন, চাওয়াই নদী খনন করা হচ্ছে। নদী খনন করে পাড়ের মধ্যে মাটি ফেলার কারণে নদীটি আরও সরু হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে এই নদীতে বর্ষা মৌসুমে নৌ দূর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে গেছে। খালিয়াজুরি উপজেলা ও মোহনগঞ্জ, সুনামগঞ্জের শাল্লা ও দিরাই কিছু এলাকা নৌ-পথে মদনে আসার একমাত্র নদী পথ এটি। আমরা পাউবোর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
ঠিকাদারের প্রতিনিধি আনোয়ার হোসেন জানান, আমরা কাজ করছি। নদীর পাড়ে ভালভাবে মাটি রাখছি যাতে ধ্বসে না পড়ে। ফিনিশিংয়ের সময় ত্রুটিগুলো সম্পন্ন করা হবে। তখন সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। নদী ভরাট হবার কোন সম্ভাবনা নেই।
নদীর পাড়ে মাটি রাখার ব্যাপারে প্রকল্প তত্ত্বাবধানকারী নেত্রকোনা পারবোর উপ-প্রকৌশলী ওবায়দুল হক বলেন, খননের মাটি নদীর পাড়ে রাখার নিয়ম নেই। খনন কাজ চলমান রয়েছে। নির্দিষ্ট স্থানে খননের মাটি সরিয়ে নেওয়ার হবে।
নেত্রকোনা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান জানান, ২০১৮ সালে দায়িত্বে যারা ছিলেন তাঁরা প্রকল্প করেছেন। তবে চাওয়াই নদী খননে এলাকাবাসী সুফল পাবে। নদীর পাড়ে খননের মাটি রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে খুব শীঘ্রই খননের মাটি বিক্রি করে সরিয়ে ফেলা হবে।
এএজেড