মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

কুমিল্লায় ধুলাবালিতে দুর্বিষহ হয়ে উঠছে জনজীবন

অস্বাস্থ্যকর বাতাসের শহরের তালিকায় নিয়মিত রাজধানী ঢাকাকে পেছনে ফেলছে কুমিল্লা। দেশের জনবহুল এই শহরের বাতাস মারাত্মক অস্বাস্থ্যকর বলে প্রতিবেদন দিচ্ছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা। স্থাপনা, রাস্তাঘাট ও উন্নয়ন প্রকল্পের চলমান নির্মাণ কাজের ইট-বালু-সিমেন্টসহ মাটি পরিবহনের সময় ধুলাবালি উড়ে দূষিত হচ্ছে কুমিল্লার বাতাস। সেই সাথে মাত্রাতিরিক্ত যানবাহনের ধোঁয়া। জেলার প্রধান নদী গোমতী থেকে অবাধে বালু ও মাটি কেটে ট্রাকে করে পরিবহন এবং ইটভাটার দৌড়াত্ম্য তো আছেই। সব মিলিয়ে ধূলায় কুমিল্লায় দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। বাড়ছে নানা রোগবালাই।

জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের দাবি, শুকনো মৌসুমে অতিরিক্ত ধুলাবালির কারণে বাতাস অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে কুমিল্লায়। ধুলাবালি আর ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়ায় মাত্রাতিরিক্ত দূষিত হচ্ছে কুমিল্লার বায়ু। আর চিকিৎসকরা বলছেন, খালি চোখে দেখা না গেলেও নিরবে নানা দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে কুমিল্লাবাসী। নিয়মিত দূষিত বাতাসে নিঃশ্বাস নেয়ার কারণে দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে লাখো মানুষ।

গত ৪ ফেব্রুয়ারি সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বৈশ্বিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের তথ্যে বলা হয়েছে, ঢাকার চেয়েও দূষিত হয়ে পড়েছে কুমিল্লার বাতাস। প্রতিষ্ঠানটির তথ্যমতে, সেদিন কুমিল্লার আইকিউ স্কোর ছিল ২৬৫ পিপিএম। এর একদিন পর ৬ ফেব্রুয়ারি তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৮১ পিপিএম। এরপর ১৮ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার আইকিউ স্কোর ছিল ২৮৯ পিপিএম এবং সর্বশেষ ১৮ মার্চ কুমিল্লার আইকিউ স্কোর দাঁড়ায় ১৭৩ পিপিএম। পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ুমান সূচক বলছে, কুমিল্লার এই স্কোর খুবই অস্বাস্থ্যকর।

এই জেলার বিশিষ্টজনরা বলছেন, অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ, ট্রাক্টরে করে মাটি-ইট সরবরাহ, সড়কে যেখানে-সেখানে ইট-বালু-সিমেন্ট ফেলে রাখা, যানবাহন ও ইটভাটার ধোঁয়ায় ক্রমেই দূষিত হচ্ছে কুমিল্লার বাতাস। এখানকার সড়ক-মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। এসব যানবাহনের কালো ধোঁয়া, জেলার ১৭ উপজেলার সাড়ে তিন শতাধিক ইটভাটার ধোঁয়া, গোমতীসহ অন্যান্য নদীগুলো থেকে অবাধে বালু ও মাটি তোলার কারণে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। বাতাসে ছড়াচ্ছে বালু, সিমেন্ট আর ইটের কণা। আর মূলত এসব কারণেই দুই মাসের মধ্যে চারবার দূষিত বাতাসের নগরীর তালিকায় নাম এসেছে কুমিল্লার। তাদের দাবি, এক সময়ের ‘ব্যাংক ও ট্যাংকের শহর’ কুমিল্লাকে বাসযোগ্য রাখতে এখনই নিতে হবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।

গত কয়েকদিনে কুমিল্লা শহর ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বায়ুদূষণের ভয়ানক চিত্র। বিভিন্ন এলাকায় সড়ক সংস্কার, স্থাপনা নির্মাণ ও বহুতল ভবনের ইট, বালু, পাথরসহ নির্মাণ সামগ্রী রাস্তার পাশে ফেলে রেখে চালানো হচ্ছে কর্মজজ্ঞ। বছরজুড়ে এসব কাজ চলে লাগাতার। এতে বাড়ছে ধুলার মাত্রা। আর এই ধূলাবালির আধিপত্যে সবুজ হারিয়ে কুমিল্লা পরিণত হয়েছে ধূসর নগরীতে। কেবল শহরেই নয়, একই অবস্থা আশপাশের গ্রামগুলোর প্রধান সড়কেও। যানবাহনের ঘূর্ণায়মান চাকার সঙ্গে কুন্ডলী পাকিয়ে উড়ছে সড়কের ধুলা। ধুলার স্তর পড়ে ঢেকে যাচ্ছে রাস্তার পাশের দোকানপাট। কোথাও কোথাও ধূলাবালির কারণে বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ রাখতে হচ্ছে।

বিশেষ করে কুমিল্লার কোলঘেঁষে বয়ে যাওয়া গোমতী নদীর দুই পাড়ের সড়কের চিত্র খুবই নাজুক। দিন-রাত অনবরত ধুলা উড়িয়ে আসা-যাওয়া করা মাটিবাহী ট্রাকের দাপটে জীবনযাপন অসহ্যকর হয়ে উঠেছে ওইসব এলাকার মানুষের। তারা বলছেন, অনবরত গোমতী নদীর মাটি কেটে ও বালু তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ট্রাকে করে। এতে করে ভেঙে যাচ্ছে সড়কগুলো আর বালুময় হয়ে যাচ্ছে পুরো আশপাশ।

জানা গেছে, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে মাটিবাহী ট্রাক দিনের চেয়ে রাতে চলাচল বেশি। যে কারণে কুমিল্লা শহরে দিনের বেলার চেয়ে রাতের বাতাস বেশি দূষিত।

গোমতী নদীর উত্তর পাড়ের সড়ক সংলগ্ন এলাকার দোকানদার আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এই সড়কটি দিয়ে প্রচুর পরিমাণে যানবাহন চলাচল করে। বিশেষ করে বালু ও মাটিবাহী ট্রাক্টরের আধিপত্য এখানে বেশি। এর ফলে প্রচুর পরিমাণে বালু উড়ে। নাক-মুখ চেপে বসে থাকতে হবে। পানি ছিটিয়েও বালু উড়া বন্ধ করা যায় না। ফলে বাধ্য হয়ে দোকান বন্ধ করে দিয়েছি।’

পাশের এলাকা ছত্রখিলের বাসিন্দা মোশারফ মিয়া বলেন, ‘ধুলার কারণে ঘরবাড়িতে থাকা যায় না। সারাক্ষণ ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখতে হয়। বালুর কারণে সারাক্ষণ চোখ ‘কচকচ’ করে। শান্তিতে ঘুমাইতে পারি না। দিনে-রাতে ২৪ ঘণ্টা মাটির ট্রাক চলে। এর ফলে রাস্তাটার অবস্থাও খারাপ হইয়া গেছে।’

কথা হয় নগরীর একটি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী জানে আলমের সাথে। সে জানায়, ‘ধুলাবালি আমাদের নাকে-মুখে ঢুকে বেশি সমস্যা করছে। কয়েকদিন ধরে আমার জ্বর। আজকে স্কুলে আসার সময় আবার এই বালুর ‘ঝরের’ মধ্যে পড়ছি। এখন নাক-চোখ জ্বলতাছে। তাই এক ঘণ্টা ক্লাস করে স্যারের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে বাসায় চলে যাচ্ছি।’

কুমিল্লা নগরীর ছোটরা এলাকার বাসিন্দা কলেজ শিক্ষক কোহিনুর আক্তার বলেন, ‘রাস্তাঘাটে যেভাবে ধুলাবালি পড়ে আছে তা খুবই দু:খজনক। রাস্তা ও ড্রেন সংস্কারের পাশাপাশি বাড়ি-ঘরও নির্মাণের সামগ্রী রাস্তার উপর ফেলে রাখার কারণে ধুলাবালি আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে আমাদের চলাটা কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে শ্বাস-প্রশ্বাসসহ নানা রোগে হচ্ছে নগরবাসীর। অনেকে ধুলাবালিজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালেও ভর্তিও হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নিসর্গ মেরাজ চৌধুরী বলেন, ‘দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় কুমিল্লার নাম থাকাটা আমাদের জন্য অশনী সংকেত। বাতাস আমরা শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য ব্যবহার করি সেই শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে যদি ধুলাবালিও নিতে শুরু করি তাহলে আমাদের শ্বাসজনিত রোগগুলিই বেশি দেখা যাবে। এতে করে এজমা রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকবে। এ ছাড়াও বাতাসের মধ্যে অনেক ক্ষতিকারক পদার্থ থাকে বাতাসের মধ্যে। এগুলো যদি আমরা গ্রহণ করি তাহলে আমাদের শ্বাসযন্ত্রের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। শ্বাসযন্ত্রে ক্যান্সার হতে পারে। এ ছাড়া সাধারণভাবে যদি আমরা বলি তাহলে এই বায়ু গ্রহণের ফলে বদ হজম, পেটের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।’

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কুমিল্লা অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর মাসুম বলেন, ‘বায়ু দূষণের ভয়াবহতা পর্যায়ক্রমে প্রত্যেকটা সীমা অতিক্রম করছে। এটা আমাদের জন্য আতঙ্কের তথ্য যে ক্রমান্বয়ে একটা দূষিত বায়ুর মধ্যে আমাদের জীবনযাপন করতে হচ্ছে, দৈনন্দিন চলাফেরা করতে হচ্ছে। এটা কখনোই শরীর জন্য, মনের জন্য, স্বাস্থ্যের জন্য ভালো না। এ থেকে যে করেই হোক আমাদেরকে উত্তরণ ঘটাতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে আমরা জানতে পারলাম রাজধানী ঢাকা বায়ু দূষণের শীর্ষে, সেখানে প্রতিকারের কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় এর প্রভাব আশপাশের জেলাগুলোতে পড়ছে। স্থানীয়ভাবেও বায়ু দূষণ থেকে বাঁচতে আমাদের যে যে ভূমিকাগুলো থাকা উচিৎ সেগুলো নেই বলেই আমরা দিন দিন এই মাত্রার তীব্রতার মধ্যে পড়ছি। এক্ষেত্রে আমাদের করণীয় হচ্ছে-আমরা আমাদের গাছপালা, পুকুর, নদী-জলাশয়গুলোকে যথাযথভাবে সুরক্ষা দিতে হবে। কিন্তু এগুলোর ক্ষেত্রে আমাদের কোনো উদ্যোগ নেই বললেই চলে। জেলা পর্যায়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন দায়িত্ব পালন করছে না, একইভাবে নাগরিক হিসেবে আমরাও যার যে ভূমিকা থাকার কথা সেটাও কিন্তু অনুপস্থিত। যার ফলে বায়ু দূষণের তীব্রতা এখন মারাত্মক অবস্থায় এসেছে। তা যদি বাড়তে থাকে তাহলে কিন্তু সব বয়সী মানুষকে তীব্র ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হবে। এ থেকে উত্তরণের জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের যেমন সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে, একইভাবে ব্যক্তি পর্যায় থেকেও আমাদের সচেতন হতে হবে।’

এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক মোসাব্বের হোসেন মোহাম্মদ রাজিব বলেন, ‘শুকনো মৌসুমে অতিরিক্ত ধুলাবালির কারণে বাতাস অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠে। কুমিল্লায় ধোঁয়াজনিত দূষণ দিনের চেয়ে রাতের বেলায় বেশি হচ্ছে। দূষণের পরিমাণ টেস্টের বিষয়টি আমাদের এখানে প্রক্রিয়াধীন আছে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘হাইওয়েতে প্রচুর পরিমাণে যানবাহন চলাচল করছে। এ কারণেও দূষণ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বায়ু দূষণের জন্য যারা দায়ী, যেমন- কনস্ট্রাকশনের কাজ করে, ডেভেলপমেন্টের কাজ করে এবং ইটভাটায় মাটি আনা-নেওয়া করে তাদেরকে বলেছি, তিন বেলা নিয়মিত পানি দেওয়ার জন্য। এ ছাড়াও মাটি ও বালি পরিবহনের সময় যেন সেগুলো সড়কে না পড়ে-এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি। যদি তারা তা না করে তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থায় যাব।’

পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ুমান সূচক বলছে, বায়ুমান শূন্য থেকে ৫০ পর্যন্ত ভালো, ৫১ থেকে ১০০ পর্যন্ত মোটামুটি, ১০১ থেকে ১৫০ পর্যন্ত সতর্কতা, ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর, ২০১ থেকে ৩০০ পর্যন্ত খুবই অস্বাস্থ্যকর, ৩০১-এর ওপরে দুর্যোগ‍পূর্ণ ও অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর।

একটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ‘২০১৯ সালের জুন মাসে পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ুমান মাত্রা মনিটরিং স্টেশনের তথ্যে বলা হয়েছিল দেশের সবচেয়ে কম বায়ু দূষণের জেলা কুমিল্লা।’ কিন্তু চার বছরের মধ্যেই নৈস্বর্গিক-নির্মল বাতাসের শহর কুমিল্লা পরিণত হয়েছে ‘বিষে’। কুমিল্লাবাসীর দাবি, সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে এই শহরকে ফের বাসযোগ্য করে তোলা।

Header Ad
Header Ad

নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁয় আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৩ সক্রিয় সদস্যসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এদের মধ্যে বাকি ৫ জন চোরাই মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ১টি অটো চার্জার ভ্যান এবং ১৯টি অটো চার্জার ভ্যানের ব্যাটারিসহ ১৫০ কেজি খুচরা যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়েছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) নওগাঁ এবং রাজশাহীর জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে নওগাঁ জেলা পুলিশ কর্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) ফারজানা হোসেন এসব তথ্য জানান।

গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত দলের সদস্যরা হলেন, জেলার পোরশা উপজেলার সোভাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে আব্দুল জব্বার (৪০) চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার পাথরপূজার গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে নুরুজ্জামান (৪০) এবং নওগাঁর সাপাহার উপজেলার ধবলডাঙ্গা গ্রামের ইব্রাহিমের ছেলে মোহাম্মদ সেলিম (৩০)।

গ্রেপ্তারকৃত চোরাই মালামাল ক্রয়-বিক্রয় চক্রের সদস্যরা হলেন, জেলার মান্দা উপজেলার উত্তর কাঞ্চন গ্রামের আলম খানের ছেলে শহিদ খান (৩৪) একই গ্রামের পরেশ আলী মৃধার ছেলে কাওছার আলী মৃধা (২৪), উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের তমিজউদদীন মোল্লার ছেলে আব্দুল মতিন মোল্লা (৫০), কামারকুড়ি গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিনের ছেলে জিয়াউর রহমান (৪২) এবং শ্রীরামপুর গ্রামের মৃত সোলায়মান মন্ডলের ছেলে আজিজুল মন্ডল(৬৪)।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারজানা হোসেন বলেন, বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাত অনুমানিক ৮ টার দিকে সাপাহার থানার নোচনাহার বাজার থেকে সাদিকুল ইসলাম (৩২) নামে এক অটো চার্জার ভ্যান চালক তার নিজের অটো চার্জার ভ্যান চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। ফেরার পথে সাপাহার থানাধীন ইলিমপুর মোড় হইতে হরিপুর বাজারগামী রোডে ইলিমপুর ব্রীজের নিকট পৌছাতেই রাস্তার পাশে ওৎপেতে থাকা ০৪ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তার অটো চার্জার ভ্যান থামিয়ে তাকে ভ্যান থেকে টেনে নামায় এবং তার গলার চাকু ধরে হত্যার ভয় দেখিয়ে পাশের আম বাগানে নিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে মারপিট করে।

পরবর্তীতে তারা সাদিকুলের অটো চার্জার ভ্যানটি ছিনতাই করে নিয়ে যায়। অপর আরো একটি ঘটনায় একই ডাকাত দল গত শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩ টার দিকে পোরশা থানার সরাইগাছি - আড্ডা আঞ্চলিক মহাসড়কের মশিদপুর এলাকায় এক অটো চার্জার ভ্যান চালককে আটক করে। তাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে হত্যার ভয় দেখিয়ে তার অটো চার্জার ভ্যান ছিনতাই করে নিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, এই দুই ঘটনায় পোরশা এবং সাপাহার থানায় আলাদা দুইটি মমলা হয়। মামলার পর থেকেই পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবির) একটি বিশেষ টিম অভিযান অব্যাহত রাখে। গতকাল (২৭ এপ্রিল) নওগাঁ এবং রাজশাহী জেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৩ জন ডাকাত এবং চোরাই ভ্যানের মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত এমন ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ফারজানা হোসেন আরও বলেন, গ্রেফাতারকৃত ডাকাতদের মধ্যে মোহাম্মদ সেলিম (৩০) বহুল আলোচিত সাপাহার উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ হিল কাফি হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামী। সেলিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৮টি চুরি এবং ডাকাতির মামলা রয়েছে। এছাড়াও ডাকাত আব্দুল জব্বারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১০ টি এবং ডাকাত নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৪ টি চুরি এবং ডাকাতির মামলা রয়েছে। আসামীদের বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) সুমন রঞ্জন সরকার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি ডিবি) আব্দুল মান্নানসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল

বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা পরেশ রাওয়াল সম্প্রতি এক বিস্ময়কর অভিজ্ঞতার কথা প্রকাশ করেছেন। ‘ঘাতক’ ছবির শুটিং চলাকালে হাঁটুর মারাত্মক আঘাতের পর দ্রুত সেরে ওঠার জন্য তিনি নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলে জানিয়েছেন।

রাকেশ পান্ডের সঙ্গে একটি দৃশ্যের শুটিং চলাকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আঘাতের পর পরিচালক তিন্নু আনন্দ ও অভিনেতা ড্যানি দেনজোংপা তাকে দ্রুত মুম্বাইয়ের নানাবতী হাসপাতালে নিয়ে যান।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে গভীর উদ্বেগে ছিলেন পরেশ রাওয়াল। তখনই প্রয়াত অ্যাকশন ডিরেক্টর বীরু দেবগণ তাকে পরামর্শ দেন প্রতিদিন সকালে নিজের মূত্র পান করার জন্য। বীরু দেবগণের যুক্তি ছিল, বহু যোদ্ধা শরীরের দ্রুত আরোগ্যের জন্য এমন পদ্ধতি অনুসরণ করতেন। পরেশ রাওয়াল সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি তখন এমন এক মানসিক অবস্থায় ছিলেন যে সুস্থতার জন্য যেকোনো কিছু করতে রাজি ছিলেন।

 

বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে টানা ৩০ দিন নিজের মূত্র পান করেন পরেশ। পরে চিকিৎসকরা তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে চমকপ্রদ ফলাফল পান। চিকিৎসকদের মতে, তার চোট সারাতে যেখানে আড়াই মাস সময় লাগার কথা ছিল, সেখানে তিনি মাত্র দেড় মাসেই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন।

বর্তমানে পেশাগত জীবনেও ব্যস্ত সময় পার করছেন পরেশ রাওয়াল। শিগগিরই তিনি প্রিয়দর্শনের পরিচালনায় নির্মিত হরর-কমেডি 'ভূত বাংলা' ছবিতে অক্ষয়কুমার ও টাবুর সঙ্গে অভিনয় করবেন। পাশাপাশি ‘হেরা ফেরি ৩’-তেও পুরনো সহ-অভিনেতা অক্ষয়কুমার ও সুনীল শেঠির সঙ্গে আবার পর্দা ভাগ করবেন।

 

Header Ad
Header Ad

নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করেছেন এনসিপির মূখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে নাহিদ ইসলামের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ লেখেন, "শুভ জন্মদিন। বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী নাহিদ ইসলাম।" তার এই মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল
নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল
নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
গণপিটুনির পর কারাগারে ইমামের মৃত্যু, গাজীপুরের পূবাইলে চাঞ্চল্য
ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়াতে লিগ্যাল নোটিশ
পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে ৭টি অস্ত্রবাহী বিমান পাঠালো তুরস্ক
বিএনপির ৩ সংগঠনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু
জামিন পেলেন মডেল মেঘনা আলম
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠন করলো সরকার
নিরীহ কাউকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা যাবে না: আইজিপি
পাকিস্তানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমস
ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকির অভিযোগ দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে (ভিডিও)
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ