মা-বাবার কবরের পাশে থাকতেন সারাদিন, সেখানেই নিলেন শেষ আশ্রয়
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বজ্রযানী ইউনিয়নের উত্তর নাহাপাড়া এলাকায় মা-বাবার কবরের পাশে দিন কাটতো সোহেল (২৫)-এর। হঠাৎ দুদিন নিখোঁজ ছিলেন তিনি। পরে সেই কবরস্থানের পাশের পুকুর থেকে মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) তার ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত সোহেল ওই এলাকার মৃত সফিউদ্দিন দেওয়ানের পুত্র। জন্মের পর থেকে সে মানসিক ও মৃগী রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিল বলে তার পরিবার ও এলাকাবাসী জানান।
পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, ৪ বছর আগে বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে দিনে-রাতে অনেকটা সময় বাবার কবরের পাশেই সময় কাটাতেন সোহেল। গত ৬ মাস আগে মা রহিমা বেগম মারা যান। এর পর থেকে আরও বেশি করে রাতে সময় কাটাতেন বাবা-মায়ের কবরে। ওষুধ না খেলে মৃগী রোগ বেড়ে যেত। হঠাৎ গত রবিবার তিনি নিখোঁজ হন। সে রাতে তার শোবার ঘরে ওষুধ রেখে আসেন তার বড় বোন সুফিয়া। কিন্তু সোহেল সে রাতে বাড়ি ফেরেননি। নানা জায়গায় খোঁজ করে, মাইকিং করে পাওয়া যায়নি তাকে। মঙ্গলবার দুপুরে মা-বাবার কবরস্থানের পুকুরে তার মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা। কবরস্থানে থাকাবস্থায় রাতে মৃগী রোগে পানিতে পড়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করছেন তার পরিবার।
হাতিমারা পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাজী এনামুল হক সোহেলের মানসিক ও মৃগী রোগে আক্রান্তের কথা নিশ্চিত করে জানান, মানুষের কাছে সহযোগিতা চাইতো এবং বাবা-মায়ের কবরে অনেক সময় রাত ১২/১ টা পর্যন্ত থাকতো। স্থানীয়রা তাকে প্রায় সময় বাড়িতে দিয়ে আসতো।
তিনি আরও জানান, স্থানীয়রা দুপুর ১টার দিকে তার মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। গত ১৬ জানুয়ারি থেকে তিনি নিখোঁজ হন। পরে দুপুর ৩টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে।
/এএন