'২০১৮ সালে দেখেছি, দিনের ভোট রাতে শেষ'
আইনের কাজ হচ্ছে মজলুম মানুষের পাশে দাঁড়ানো। আমরা চাইবো আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। কিন্তু আমরা তো জানি, ২০১৮ তে আমরা দেখেছি, দিনের ভোট রাত্রিবেলা শেষ। ২০১৪ সালে দেখলাম ভোটকেন্দ্রে ভোট নাই-ভোটার নাই, ১৫৪ জন আগেই নির্বাচিত। ভোটকেন্দ্রে ৫ পার্সেন্ট ভোটারও যায়নি। অর্থাৎ বৃহত্তর মানুষের সমর্থন নিয়ে তারা দেশ পরিচালনায় আসেনি। দেশ পরিচালনার করার জন্য জনগণের ভোটের দরকার পড়ে না। নিজের পেশীতন্ত্র অথবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আইন-আদালত, প্রশাসনকে ব্যবহার করে দেশ শাসন করা যায়। তখন তারা সাধারণ মানুষের কথা ভুলে যায়।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) বিকেলে হবিগঞ্জ পৌরসভা মাঠে হবিগঞ্জ পৌর বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা.এ জেড এম জাহিদ হোসেন এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ঢাকা সুপ্রিম কোর্টে দেখলেন ভোটের নামে প্রহসন হল। নির্বাচন কমিশনের আগেই সুপ্রিম কোর্ট বারের সেই অবৈধ সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকরা ১০ হাজার ভোট ১২ হাজার ব্যালট পেপার ছাপিয়ে নিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের কেউ জানে না। সেজন্যই নির্বাচন কমিশনার প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদত্যাগ করেছেন। আজ তাদের ছাপানো সেই ব্যালট পেপার দিয়ে ভোট দিতে হবে। আজ সর্বোচ্চ আদালতের এই অবস্থা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব হচ্ছে চোর ধরা। আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী কি করলো- চোরকে সহায়তা করলো এবং চুরিকে জায়েজ করার জন্য যা যা করা দরকার গতকালকেও করেছে, আজকেও করছে। আজ প্রধান বিচারপতি বলছেন-আইনজীবীদের বিষয়টি আইনজীবীদেরই দেখা উচিত। তাহলে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব কি, সর্বোচ্চ আদালতের দায়িত্ব কী?
জাহিদ হোসেন বলেন, আজকে আটার দাম ৭৫ টাকা, চালের দাম ৮০ থেকে ১১০ টাকা। আর কারেন্ট সারাদিনে ৭ থেকে ১০ বার আসে আর যায়। তারপরও বলে শতভাগ বিদ্যুতায়িত বাংলাদেশ। আবার বলে উন্নয়নের রোলমডেল বাংলাদেশ। রোলমডেল হয়ে আজ এমন অবস্থা হয়েছে যে, শ্রীলংকার মত অবস্থার দিকে আমরা ধাবিত হচ্ছি। কয়দিন বাজারে আর কিছু কিনতে পাওয়া যাবে না। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে আজ জনগণের নাভিশ্বাস ওঠেছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসময় তিনি উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, বিএনপির দেয়া ১০ দফা আন্দোলন রাজপথে থেকে সফল করতে হবে। রবীন্দ্রসঙ্গীত দিয়ে এই সরকারকে বিদায় করা যাবে না, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে বিদায় করে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকার সম্পর্কে তিনি বলেন, হীরক রাজার দেশ সিনেমার হীরক রাজার সাথে তুলনা করে বলেন, যে যা বলুক ভাই, আমার সোনার হরিণ চাই। অর্থাৎ জনগণ কি চায় এটা তাদের কোন বিষয় না। দরকার শুধু চেয়ার।
পৌর বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা রফিকের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক নুরুল ইসলাম নানুর পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ সাখাওয়াত হোসেন জীবন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব জি, কে গউস, জেলা বিএনপির আহবায়ক আবুল হাসিম, যুগ্ম আহবায়ক ইসলাম তরফদার তনু, আহমদুর রহমান আব্দাল, কামাল উদ্দিন সেলিম, প্রধান নিবার্চন কমিশনার মঞ্জুর উদ্দিন শাহীন, মিজানুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।
এর পূর্বে, সকাল ৯ টায় দলীয় কার্যালয়ে কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়। দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ৬৩৯ জন ভোটারের মধ্যে ৫৩৪ জন ভোট প্রয়োগ করেন। সভাপতি পদে হবিগঞ্জ পৌর বিএনপির য্গ্মু আহবায়ক ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক তাজুল ইসলাম ফরিদ ৩২৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন অপর প্রার্থী জেলা বিএনপির সদস্য আব্দুল হান্নান ফরিদ পেয়েছেন ১৯৬ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক পদে পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এস.এম আউয়াল ২৭৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক আহবায়ক লিটন আহমেদ পেয়েছেন ২৫৬ ভোট এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ৭নং ওয়ার্ড বিএনপি সাবেক সভাপতি দেওয়ান আব্দুল মোহাইমীন চৌধুরী ফুয়াদ ৩৫৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন অপর প্রার্থী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোঃ কুতুব উদ্দিন শামীম পান ১৭৫ ভোট।
এছাড়া সিনিয়র সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক মর্তুজ আহমেদ রিপন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। সম্মেলন শেষে প্রধান নিবার্চন কমিশনার ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ- সভাপতি মঞ্জুর উদ্দিন শাহীন এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
এএজেড