১৪ বছর পর আজ হবিগঞ্জ পৌর বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল
১৪ বছর পর আজ বৃহস্পতিবার হবিগঞ্জ পৌর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন পর সম্মেলন ও কাউন্সিল ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে, দেখা দিয়েছে উৎসব-আমেজ। এদিকে, সম্মেলন ও কাউন্সিল সফল করতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে হবিগঞ্জ পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি। কাউন্সিল অধিবেশনে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করছে নিবার্চন কমিশন।
হবিগঞ্জ পৌর বিএনপি সূত্র জানায়, আজ বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত শহরের শায়েস্তানগর দলীয় কার্যালয়ে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে ৬৩৯ জন ভোটার ভোট প্রয়োগ করবেন। জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মঞ্জুর উদ্দিন শাহীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং জেলা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি মুদ্দত আলী, জেলা আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল ফজল, হবিগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন ও বাহুবল উপজেলা বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমানকে সহকারী নির্বাচন কমিশনার করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়েছে।
কাউন্সিল অধিবেশন শেষে বিকেল ৩টায় পৌরসভা মাঠে পৌর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা রফিকের সভাপতিত্বে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেডএম ডা. জাহিদ হোসেন, বিশেষ অতিথি হিসেবে কেন্দ্রীয় বিএনপির সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন এবং সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ও হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জিকে গউছ এবং কেন্দ্রীয় বিএনপির নেত্রী শাম্মী আক্তার শিপা উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছে পৌর বিএনপি।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, ৫টি পদে পৌর বিএনপি নির্বাচন ঘোষণা করা হলে ২টি পদের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তারা হলেন, সিনিয়র সহসভাপতি মুজিবুর রহমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক মর্তুজ আহমেদ রিপন। বাকি ৩টি পদে আজ ভোট হবে। এতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৬ জন প্রার্থী। তারা হলেন, সভাপতি পদে হবিগঞ্জ পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম ফরিদ ও জেলা বিএনপির সদস্য আব্দুল হান্নান ফরিদ, সাধারণ সম্পাদক পদে পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এস.এম আউয়াল ও ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক লিটন আহমেদ এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি সাবেক সভাপতি দেওয়ান আব্দুল মোহাইমীন চৌধুরী ফুয়াদ ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. কুতুব উদ্দিন শামীম।
এদিকে দলীয় নেতারা বলছেন, দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে সম্মেলন না হওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে দলীয় কার্যক্রম। নেতা-কর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিভক্তি। এর আগে ২ বার সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হলেও সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। যে কারণে প্রার্থীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
পৌর বিএনপি আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা রফিক বলেন, ‘সম্মেলন ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। আশা করা যায় ‘শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্যে দিয়ে সম্মেলন সম্পন্ন হবে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার মঞ্জুর উদ্দিন শাহীন বলেন, ৫ পদের মধ্যে ২ পদের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি ৩টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নেতা-কর্মীদের ছবি যুক্ত ভোটার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এ তালিকায় যাদের নাম থাকবে তাদের আইডি কার্ড (জাতীয় পরিচয় পত্র) প্রদর্শন করতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ১৬ নভেম্বর আমিনুর রশিদ এমরানকে সভাপতি ও এনামুল হক সেলিমকে সাধারণ সম্পাদক করে তাৎকালীন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মো. ফয়সল হবিগঞ্জ পৌর বিএনপির কমিটি অনুমোদন দেন। পরে ২০১৯ সালের ২৯ আগস্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা রফিককে আহ্বায়ক করে ৪৫ সদস্য বিশিষ্ট হবিগঞ্জ পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি।
এসএন