পৌর ফাল্গুন মেলার নামে চলছে হাউজি-জুয়া!
পৌর ফাল্গুন মেলার নামে লটারি ও হাউজি নামক জুয়া চলছে। সন্ধ্যার পর থেকে হাউজি খেলতে ও প্রবেশ টিকিটের উপর লটারি কিনতে মেলায় ভিড় করছেন। মেলায় লটারি ও হাউজি নামক জুয়া যুক্ত হওয়ায় জামালপুরের মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যখন বাড়তির দিকে, ঠিক তখনই এই ধরণের জুয়া জামালপুরের সাধারণ মানুষের মধ্যে অস্তিত্ব ডেকে আনছে।
জামালপুর পৌরসভার উদ্যোগে বসন্তবরণ উপলক্ষে ১৯ ফেব্রুয়ারি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম স্টেডিয়াম সংলগ্ন আউটার স্টেডিয়াম মাঠে পৌর ফাল্গুন মেলার আয়োজন করা হয়। মেলার উদ্বোধন করেন জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মোজাফ্ফর হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ। পৌর ফাল্গুন মেলার সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন জামালপুর পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন ছানু।
বিভিন্ন কৌশলে শুরুর দিন থেকেই মেলায় প্রবেশ টিকিটই লটারির টিকিট হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রত্যেক সপ্তাহে একদিন ওই টিকিটের উপর র্যাফেল ড্রর নামে চলছে লটারি নামক জুয়া। আর গত মঙ্গলবার থেকে মেলার বিশাল মাঠে প্যান্ডেলের মধ্যে শুরু হয়েছে হাউজি নামক জুয়া। জুয়ার টাকা জিতার মোহে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম স্টেডিয়াম সংলগ্ন আউটার স্টেডিয়ামে হাউজি খেলা শুরু হয়। প্রথমেই হাউজি কর্তৃপক্ষের একজন হাউজি খেলার ঘোষণা করেন। এ সময় ওই ব্যক্তি মাইকে ঘোষণা দেন, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে আলোচনা করেই, হাউজি চালানো শুরু হয়েছে। তারপর হাউজি খেলা শুরু হয়।
কয়েকটি কাউন্টারে বিক্রি হচ্ছে হাউজি জুয়া খেলার শিট। বিশাল প্যান্ডেলের ভিতর একটি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। মঞ্চ থেকে মাইক দিয়ে হাউজি খেলা চলছে। শত শত মানুষ হাউজি খেলছেন। প্রতি রাউন্ডে একটি কুইজ সেভেন, তিনটি লাইন ও একটি পূর্ণাঙ্গ হাউজ থাকে। সবশেষ বাম্পার রাউন্ড দিয়ে গত রাতের খেলা শেষ হয়।
নাম না প্রকাশের কয়েকজন জানান, দেশের অর্থনৈতিক সংকট এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রে দাম ব্যাপকভাবে বাড়তির দিকে। সেই কারণে সাধারণ মানুষের দিনই চলছে না। তার মধ্যে জামালপুর পৌরসভা হাউজি নামক জুয়া খেলা শুরু করেছে। এই খেলায় মাত্র ৫ জন মানুষ পুরষ্কার হিসেবে কিছু টাকা পাই। বাকী মানুষের টাকা জুয়ার নামে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে এই হাউজি নামের জুয়া বন্ধ করা উচিত প্রশাসনের।
জামালপুরের জেলা প্রশাসক শ্রাবস্তী রায় বলেন, মেলার অনুমতির নিদের্শনায় হাউজি জুয়া চলবে না শর্তে উল্লেখ করা হয়েছে। হাউজির কোন অনুমতি নেই। যদি হাউজি চালিয়ে থাকে বিষয়টি আমি দেখছি। পুলিশ সুপার নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, হাউজি চলার কোন অনুমতি নেই। মেলায় হাউজি চলছে এমন খবর পেয়ে যে চালিয়েছে তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এএজেড