আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ২০, আটক ১২

লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপ এবং পুলিশের সঙ্গে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে চার পুলিশ ও এক সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বুধবার (৮ মার্চ) সন্ধ্যায় চন্দ্রগঞ্জ বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১২ জনকে আটকের কথা জানিয়েছে পুলিশ। তবে তাদের নাম জানা যায়নি।
আহতদের মধ্যে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) জাকির হোসেন, কনস্টেবল মোজাম্মেল এবং আকবর হোসেন নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে আলাউদ্দিন নামে স্থানীয় এক সংবাদকর্মী আহত হয়েছে। বাকী আহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
জানা গেছে, গত দুই বছর থেকে চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটিতে একই পদে পাল্টাপাল্টি নেতা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ নিয়ে বির্তক দেখা দিলে জেলা আওয়ামী লীগ প্রায় ১০ মাস আগে সেই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে। তবে বহিষ্কৃত নেতারা নিজেদের পদ ব্যবহার করে দলীয় কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেত। মঙ্গলবার (৭ মার্চ) চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশের চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাব তাদের নিজস্ব ফেসবুক পেজে চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির একটি চিঠি প্রকাশ করে। এতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক বহিস্কৃত সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিনকে সদস্য করা হয়। ফলে পূর্বের কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দাবিদার গিয়াস উদ্দিন লিঠন ও সাধারণ সম্পাদক দাবিদার কাজী সোলায়মান। ওই রাতে তাদের অনুসারীরা বিক্ষোভ মিছিল করে। বুধবার (৮ মার্চ) বিকালে তাদের অনুসারীরা পুনরায় বিক্ষোভ করে।
স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার সন্ধ্যায় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের নেতৃত্বে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির নেতা-কর্মী ও তাদের দুই থেকে আড়াইশ অনুসারী চন্দ্রগঞ্জ বাজারে আনন্দ মিছিল বের করে। মিছিল শেষ তারা আফজাল সড়কের মুখে জড়ো হয়ে বক্তৃতা দেন। এ সময় চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম মাসুদ আলমের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পূর্বের কমিটির অনুসারীরা দলবদ্ধ হয়ে আনন্দ মিছিলে থাকা লোকজনের উপর হামলা করে। সেই সময় তাদের নিবৃত্ত করতে গিয়ে দুই পক্ষের লোকজনের মাঝে পড়ে আহত হয় চার পুলিশ সদস্য।
সংঘর্ষে জড়িতরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ফলে ত্রিমুখী সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ব্যাপারে চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তহিদুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাজারে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় ঘটনাস্থল ও সদর হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার মো মাহফুজ্জামান আশরাফ। তিনি বলেন, দু'গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআইএইচ
