অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে হাসপাতালে দুদকের অভিযান
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে (০৬ মার্চ) দুপুরে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ অভিযানে মিলেছে অভিযোগের সত্যতা। সোমবার বেলা সাড়ে ১২ টা থেকে বিকাল পর্যন্ত হাসপাতালের প্রতিটি বিভাগে অভিযান শেষে দুদকের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
মাদারীপুর দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আকতারুজ্জামানের নেতৃত্বে দুদকের চার কর্মকর্তাসহ সাতজন সদস্য এ অভিযানে অংশ নেন। তারা হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, আউটডোর এবং বিভিন্ন ওয়ার্ডে রোগী ও তাদের স্বজনের সঙ্গে কথা বলেন।
এ সময় সংকটাপন্ন রোগীদের ট্রলিতে করে ওয়ার্ডে নিতে বখশিশ প্রদান, জরুরি বিভাগে অতিরিক্ত টাকা আদায়সহ সরকারি এ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে পদে পদে রোগী ও স্বজনের কাছ থেকে অর্থ আদায় এবং ওয়ার্ডগুলোতে রয়েছে চরম অব্যবস্থাপনা।
সরকারের বরাদ্দকৃত ওষুধের তালিকা ও হাসপাতাল থেকে রোগীদের জন্য ওষুধের বিতরণের তালিকায় গরমিল, চিকিৎসক না থাকা সত্ত্বেও সেই খাতে ওষুধ ক্রয়, একই ব্যক্তিকে বারবার ওষুধ সরবরাহের ঠিকাদারি প্রদান ও খাদ্য সরবরাহের ক্ষেত্রেও একই ব্যক্তিকে বারবার ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর গ্রাম থেকে হাসপাতালে আসা রোগী রিজিয়া বেগম বলেন, আমাদের অধিকাংশ সময় ওষুধ হাসপাতালে থাকলেও তারা ওষুধ বাহির থেকে কিনে বলে। তাদের কাছে চাইলে বলে, সরবরাহ নেই।
মাদারীপুর সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়ন থেকে আসা আমিনুল ইসলাম নামে আরেক রোগী বলেন, গরিব মানুষ আমরা সরকারি হাসপাতালে যাই ফ্রি চিকিৎসার জন্য সেখানে তারা বাহির থেকে ওষুধ কিনতে বলে। তাহলে আমরা গরীব হইয়া কি ভুল করছি। টাকার অভাবে আসি সরকারি হাসপাতালে সেখানে যদি এরকম করে তাহলে আমরা যাব কোথায়? সরকারি হাসপাতালে এমন স্বাস্থ্যসেবা লজ্জাজনক।
এ বিষয়ে মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. শিহাব চৌধুরী বলেন, আমাদের সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে নিষেধ আছে। এ ব্যাপারে সকল বক্তব্য দিবে সিভিল সার্জন স্যার। আমি কিছুই বলতে পারবো না।
অভিযানের বিষয়ে মাদারীপুর দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আকতারুজ্জামান জানান, ভুক্তভোগীর একাধিক অভিযোগ পেয়ে হাসপাতালে অভিযানে যায় দুদকের একটি দল।
প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন অনিয়মের সত্যতা পাওয়া গিয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের প্রধান কার্যালয়ে লিখিত পাঠানো হবে। পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এ ব্যাপারে জানতে জেলার সিভিল সার্জন ডা. মুনীর আহমদ খানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এএজেড