বিসিবির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যুবকের আমরণ অনশন

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামের ভেন্যু বাতিলের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা প্রত্যাহারের দাবিতে কাফনের কাপড় গায়ে আমরণ অনশন করছেন হুমায়ন আহম্মেদ রুমেল নামে এক যুবক।
রবিবার (৫ মার্চ) সকাল ৯টার দিকে শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথা জিলা স্কুলের পাশে ফুটপাতে বসে তিনি অনশন শুরু করেন। রুমেল বগুড়া শহরের নাটাইপাড়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে।
হুমায়ন আহম্মেদ রুমেল বলেন, বগুড়ায় প্রতিবাদী এবং অলাভজনক কর্মকাণ্ড করে থাকি। জন্মের পর থেকে অনেক সরকার দেখেছি। সেটা আওয়ামী লীগ, বিএনপি আর জাতীয় পার্টিই হোক। তবে বগুড়ার সঠিক উন্নয়ন কিন্তু কেউ করেননি। দেশের অন্যান্য জায়গায় উন্নয়ন হয়েছে। সেই তুলনায় উন্নয়নের দিক থেকে বগুড়া অনেক পিছিয়ে। বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে কয়েক বছর ধরে আন্তর্জাতিক খেলা না হলেও একটা আশার জায়গা ছিল। স্টেডিয়াম লাইফ সাপোর্টে ছিল।
তিনি বলেন, সান্ত্বনা বগুড়ায় একটি স্টেডিয়াম এখনো টিকে আছে। একদিন না একদিন খেলা ফিরবে। কিন্তু যখন এর আনুষ্ঠানিক মৃত্যু ঘটল একেবারে সবকিছু নিয়ে গেল। এখানকার কর্মকর্তারা প্রত্যাহার হলো, যন্ত্রপাতি প্রত্যাহার হলো, এমনকি মাঠের সীমানার দড়ি পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হলো। তখন মনে হলো আমাদের গর্বের জায়গা আর কিছুই থাকল না। ঠিক তখন আমার কাছে মনে হয়েছে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে এবং আমার পক্ষেই এটা সম্ভব। অনশন সবাই পারে না। ধৈর্যও সবার নেই। আমি এটা পারব।
রুমেল বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনশন করে অনেক কিছুই বাস্তবায়ন করা হয়েছে। মূলত সে লক্ষ্যে আমার এ অনশন। তবে আমি যদি এটা করতে পারি তবেই এই দাবি বাস্তবায়ন করা সম্ভব। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চলবে।
তিনি আরও বলেন, আমি সাধারণ নাগরিক। আমার কোনো কিছু করার সামর্থ্য নেই। তবে দাবি জানানোর অধিকার আছে। এ কারণে স্টেডিয়াম ও বিমানবন্দর চালুর দাবি আদায়ে জীবন উৎসর্গ করতে আমরণ অনশনে বসেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চলবে। বগুড়াবাসীর দাবি আদায়ে প্রয়োজনে জীবন দিয়ে দেব।
উল্লেখ্য, বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সঙ্গে দ্বন্দ্বে স্টেডিয়ামের মূল মালিক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) কাছে স্টেডিয়ামটি হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। গত বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) এনএসসি সচিব বরাবর পাঠানো বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। ওই দিনই শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে কর্মরত বিসিবির ১৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বগুড়া থেকে প্রত্যাহার করে মিরপুরে বিসিবির কার্যালয়ে রিপোর্ট করতে বলা হয়। এ ছাড়া স্টেডিয়ামে থাকা রোলার, পিচ কাভারসহ মাঠ ও খেলার যাবতীয় সরঞ্জাম এবং ড্রেসিংরুমের আসবাবপত্র ঢাকায় নিয়ে গেছে বিসিবি। এ ঘটনার পর বগুড়ার খেলোয়াড়, ক্রিকেটপ্রেমী ও ক্রীড়া সংগঠকসহ সাধারণ মানুষ বিসিবির এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন।
এসজি
