কনস্টেবল নিয়োগে ‘কুমিল্লার এসপি’ পরিচয়ে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ৩

কুমিল্লার পুলিশ সুপার পরিচয়ে দিয়ে কনস্টেবল নিয়োগে প্রতারণার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ঢাকা ও মাদারীপুর জেলায় অভিযান চালিয়ে ওই তিন প্রতারককে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, সিম কার্ড ও আত্নসাৎ করা টাকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে- প্রতারক চক্রের মূল হোতা ডিএমপি কদমতলীর প্রতারণা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব পরিচয় দানকারী মেরাজুল ইসলাম ( লায়ন মেরাজ), পুলিশ সুপার পরিচয়দানকারী জামান খন্দকার আলীমুজ্জামান ও রিপন ফকির। তারা মাদারীপুরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।
বৃহষ্পতিবার (২ মার্চ) দুপুরে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান কুমিল্লার পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান।
তিনি জানান, বাংলাদেশ পুলিশে ট্রেনিং রিক্রুট কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময় চাকরি দেওয়ার কথা বলে মরিয়ম বেগম নামে এক নারীর কাছ থেকে ঘুষ হিসেবে ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্র। প্রতারক মেরাজুল ইসলাম ফোনে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব, মো. আলীমুজ্জামান কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপারের পরিচয় দেয়। মো. রিপন ফকির তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করে। তাদের সবার বাড়ি মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায়। এই ঘটনায় কুমিল্লার মুরাদনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, মরিয়ম বেগম তার নাতি ফাহিমের জন্য পুলিশে চাকরির চেষ্টা করে প্রতারণার শিকার হচ্ছিলেন। ঘটনাটি পুলিশ টের পেয়ে যাওয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতারকদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। ইতিমধ্যে ২ লাখ টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সম্প্রতি কুমিল্লায় জন প্রতি মাত্র ১০৬ টাকা খরচ করে ২০৬ জন পুলিশে চাকরি পেয়েছে। এই নিয়োগে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করেছে কুমিল্লা জেলা পুলিশ।
মামলার বাদী মরিময় বেগম বলেন, আমরা বুঝতে পারিনি প্রতাণার শিকার হবো। কিন্তু এই যাত্রায় বেঁচে গেছি। চাকরির জন্য ৬ লাখ টাকা জোগাড় করতে আমাদের জীবন যায় যায় অবস্থা হয়েছিল। পুরো টাকা হারালে আমাদের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যেতো।
পুলিশ জানায়, গত ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে ১৯ তারিখ পর্যন্ত বিকাশ ও নগদে প্রতারকরা টাকা নিয়ে যায়। এসব টাকা ঢাকা, মাদারীপুর ও সুনামগঞ্জ থেকে তোলা হয়। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে তারা দীর্ঘদিন যাবত হ্যালো পার্টির মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিসারদের
নাম-পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারণা করে আসছিল।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার আশফাকুজ্জামান, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজেশ বড়ুয়াসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে প্রতারক আসামিদের সাংবাদিকদের সামনে নিয়ে আসা হয়।
এসআইএইচ
